ইমরান আল মামুন
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কি এবং কিভাবে কাজ করে
তথ্যপ্রযুক্তির যুগে স্মার্ট হেলপার হিসেবে কাজ করে চলছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। শারীরিকভাবে সম্পূর্ণ অস্তিত্বহীন এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানুষকে এমনভাবে সহযোগিতা করে আসছে, যা সাধারণ মানুষের পক্ষে অসম্ভব। এমনকি সম্ভব হলেও সেটি হবে অনেক সময় সাপেক্ষে এবং ব্যয়বহুল।
অনেকেই ভাবতে পারেন আর্টিফিশিয়াল পদ্ধতি শুধুমাত্র ভার্চুয়াল এর জন্য ব্যবহৃত হয়। কিন্তু তা নয়, ম্যানুয়ালভাবে অনেক কাজ করার জন্য এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে। ভার্চুয়াল থেকে মেশিনারিজ কাজের প্রায় ৭০% এর ব্যবহার বৃদ্ধি হয়ে গেছে। আজকে আমরা এ স্মার্ট হেলপার নিয়েই আলোচনা করব।
আজকের আর্টিকেলে আমরা যা যা জানবো
- আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কি
- সৃষ্টির ইতিহাস
- আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর প্রকারভেদ
- এর যথাযথ ব্যবহার
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কি
আধুনিক যুগে Ai শব্দটি শুনেনি এমন মানুষ পাওয়া খুব কম। যার পূর্ণরূপ হচ্ছে Artificial intelligence. মূলত আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স হচ্ছে একপ্রকার সিমুলেশন যেটি মানুষের মত করে চিন্তা করতে সক্ষম হয়। একই সাথে জটিল সমস্যার সমাধান করে থাকে। শুধু তাই নয় মানুষের মতন নতুন কিছু শিখতে পারে এবং সে অনুযায়ী সমস্যার সমাধানও দিতে পারে। অর্থাৎ মানব জীবনের বুদ্ধিমত্তার পরেই যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা রয়েছে, তার বড় একটি অংশ হচ্ছে এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স।
প্রোগ্রামের মাধ্যমে কোন সফটওয়্যার কিংবা মেশিনকে বুদ্ধিমান করে তুলে কোন সমস্যা সমাধান করাই হচ্ছে এর মূল কাজ। যেমন কারো সাথে কথা বলে তার প্রশ্নের উত্তর দেওয়া অথবা নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদনা করা ইত্যাদি।
সৃষ্টির ইতিহাস
বর্তমান বিশ্বের অধিকাংশ মেশিনারিজগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্ট। এর প্রথম পথচলা শুরু হয় ১৯৪০ সালে। তখন চলছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। সে সময় প্রয়োজন হয় শত্রুপক্ষের বিরুদ্ধে প্রযুক্তিগত অগ্রগতির। নিউরোলজিস্ট গ্রে ওয়াল্টার এবং অ্যালন টুরিং সর্বপ্রথম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মেশিন তৈরি সম্পর্কে ধারনা দিয়েছিলেন। তখন তারা ইউনিভার্সাল টুরিং মেশিন এবং হাইপোথেটিক্যাল দুটি যন্ত্র তৈরি করেন। এই মেশিনগুলোর রূপ ধরে পরবর্তীতে কম্পিউটার আবিষ্কার হয়েছে। এরপর পর্যায়ক্রমে আরো বেশ কয়েকটি কোডিং যন্ত্র তৈরি হয়েছে। তারপর বিশ্বযুদ্ধের শেষে ১৯৪৮ সালে টুরিং টেস্ট নামের একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যন্ত্র তৈরি করে। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল অনুলিপিকরণ করা। এভাবে আস্তে আস্তে পর্যায়ক্রমে চলে আসে এমন এক ধরনের পদ্ধতি যেটির মাধ্যমে প্রশ্ন উত্তর বের করা যেত। যন্ত্রটির নাম দেওয়া হয়েছিল ট্রিকি। এটি তৈরি করেন মার্কিন কম্পিউটার এবং কগনিটিভ বিজ্ঞানী জন ম্যাকর্তি। যিনি সর্বপ্রথম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শব্দ অর্থাৎ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করেন। প্রকৃতপক্ষে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রতিষ্ঠাতা তিনি।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর প্রকারভেদ
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। আমরা জানবো এই তিন প্রকার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বিবরণী-
Narrow Ai- একে বাংলায় দুর্বল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বোঝায়। এটির কাজ হচ্ছে শুধুমাত্র নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর সমস্যার সমাধান এবং কাজ করা। বর্তমানে এর ব্যবহার সবচেয়ে বেশি হচ্ছে।
Artificial general intelligence- যখন কোন মেশিন অথবা কম্পিউটার মানুষের মতো কাজ করতে সক্ষম হয় তখন তাকে স্ট্রং এআই বলা হয়। তবে এর ব্যবহার এখন পর্যন্ত সব জায়গায় পৌঁছেনি।
Super intelligence- এখনও অব্দি সুপার ইন্টেলিজেন্স প্রয়োগ করা হয়নি। তবে বুঝতে পারা যাচ্ছে এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স মানুষের মতো কাজ করবে এমনকি মানুষের প্রতিভাকেও অতিক্রম করে যেতে পারবে।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার
বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তি এবং অন্যান্য খাতে এর ব্যবহার অনেকাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন কলকারখানাগুলোতেও ব্যবহার হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খাতে এর ব্যবহার নিয়ে আমরা নিচে আলোচনা করছি।
সোশ্যাল মিডিয়া আপডেট- যখন আমরা ফেসবুক ব্যবহার করি তখন আমাদের প্রোফাইলে ঠিকানা দেওয়া থাকে। ঠিকানা অনুসারে কাছের মানুষদেরকে সাজেশনে দেখায়। আবার আমরা কোন পেজ লাইক করলে রিলেটেড অন্যান্য পোষ্ট অথবা পেজ আমাদের সামনে আসে। এইযে তারা আমাদের চাহিদা বুঝতে পারে এটাই হচ্ছে এআই এর কাজ।
অনলাইন বিজ্ঞাপন: আমরা যখন সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করি তখন আমাদের সার্চের ডাটার উপর নজর দেওয়া হয়। কারণ যে বিষয়বস্তু সার্চ করি ওই বিষয়বস্তুর ওপর আমাদের বিজ্ঞাপন দেখানো হয়। এই ঘটনা ঘটে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে। তাহলে বুঝতে পেরেছেন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কি রকম ভাবে দ্রুত কাজ করে?
ব্যাংক সেবায় ব্যবহার- বর্তমানে প্রায় সকল ধরনের ব্যাংকিং সেবায় এসএমএস পদ্ধতি চালু রয়েছে। অর্থাৎ টাকা ট্রানজেকশন হওয়া মাত্রই গ্রাহকের ফোনে একটি এসএমএস দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়। এটি কোন ব্যক্তি পাঠায় না বরং একটি সফটওয়্যার কাজ করে থাকে। যা ঘটে সম্পূর্ণ অটোমেটিক ভাবে। যার কারণে ব্যাংকিং প্রতারণা অনেকটা কমে গেছে।
বিজনেস ম্যানেজমেন্ট: বড় বড় বিজনেস এনালাইসিস এর ক্ষেত্রেও এখন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার হয়ে আসছে। শুধুমাত্র এর ইনপুটগুলো এন্ট্রি করলে যাবতীয় লাভ - লস এর হিসাব জানা যায়। এমনকি বর্তমানের কন্ডিশনে চলতে থাকলে ভবিষ্যতের অবস্থা কি হবে তা আউটপুট দিয়ে থাকে। অনলাইন মার্কেটগুলোতে গ্রাহকদের কোন পণ্যের চাহিদা অনুসারে ডাটা তৈরি করে। পরবর্তীতে তা বিজনেস ম্যানেজমেন্টে প্রদান করে।
উপরের ক্ষেত্রগুলো বাদে আরো অনেক ক্ষেত্রে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার হচ্ছে। যা আমাদের ধারণার বাইরের অনেকের। সারা বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছে একটি ওপেন এআই। যার নাম হচ্ছে চ্যাট জিপিপিটি।
তবে এআইকে মানব কর্মক্ষেত্রের জন্য অনেকে হুমকি স্বরূপ মনে করছে। কর্মক্ষেত্র অবশ্যই সংকীর্ণ করে তুলবে মানব জীবনের জন্য। কিন্তু এর সুবিধা মানব জীবনকে আরো সহজ এবং সুন্দর করে তুলবে। যা থেকে সাধারণ মানুষ সুন্দর ভাবে জীবনকে উপভোগ করতে পারবে।
- আমেরিকান ডিভি লটারি ২০২৪ বাংলাদেশ
- ফেসবুক মনিটাইজেশন আপডেট ২০২৩
- বাংলাদেশে কম দামে ভালো মোবাইল ফোনের দাম
- অনলাইনে কানাডা ভিসা চেক করার নিয়ম ২০২৩
- মোবাইল নাম্বার দিয়ে লোকেশন বের করার নিয়ম
- অনলাইনে বিধবা ভাতা আবেদন করার নিয়ম ২০২৩
- পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম ২০২৪
- সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস ডেলিভারি চার্জ
- মৌলভীবাজারের যুবকের কৌশল উদ্ভাবন রেললাইন থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন
- দৈনিক ৫০০ টাকা ইনকাম করার উপায় ২০২৩