আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ভারতে বিবিসি কার্যালয়ে তল্লাশি : নিন্দার মুখে মোদি সরকার
ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসির দিল্লি ও মুম্বাই কার্যালয়ে তল্লাশি কাণ্ড নিয়ে বিজেপি সরকারের নিন্দায় মুখোর ভারত। ঘটনার পর মোদি সরকারের নিরেপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ ভারতীয় বিশ্লেষকরা। বিবিসির দফতরে আয়কর হানার ঘটনাকে ভালো চোখে দেখছেন না বলে জানিয়েছেন দেশটির শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা।
সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে বিবিসির তৈরি 'ইন্ডিয়া দ্য মোদি কোয়েশ্চন' নামে দুই পর্বের ধারাবাহিক ডকুমেন্টারি প্রকাশের পর বিবিসির ভারতে অবস্থিত এসব কার্যালয়ে তল্লাশি চালায় সরকারের আয়কর বিভাগে।
১৯৪০ সালে ১১ মে ব্রিটিশ ব্রড কাস্টিং করপোরেশন-বিবিসি হিন্দি ভাষায় রেডিও সম্প্রচার শুরু করে। দ্বি-জাতি তত্ত্বে ভাগ হওয়ার আগে থেকেই ব্রিটিশ সরকারের প্রতিষ্ঠানের জনপ্রিয়তা ছিল অবিভক্ত ভারতজুড়ে। পরবর্তীতে স্বাধীন ভারতেও ধীরে ধীরে গ্রহণযোগ্য গণমাধ্যম হিসেবে জনপ্রিয়তা অর্জন করে বিবিসি।
হিন্দি ছাড়াও পাঞ্জাবি, গুজরাটি, মরাঠি ও তেলেগু ভাষায় খবর সম্প্রচার করে আসছে বিবিসি। বাংলা ভাষায় এতোদিন সম্প্রচার হলেও এখন শুধু এই ভাষার ডিজিটাল ভার্সন চালু রয়েছে। এছাড়াও ভারতে সমানভাবে বিবিসির ইংরেজি ভাষার সম্প্রচারও চলছে।
বর্তমানে ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যে আছে বিবিসির নিজস্ব প্রতিনিধি এবং বেশ কয়েকটি ব্যুরো অফিস। আর রাজধানী দিল্লি ও বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বাইয়ে শান্তুনগরে আছে তাদের করপোরেট ও রিজিওনাল প্রধান অফিস।
সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে বিবিসির তৈরি 'ইন্ডিয়া দ্য মোদি কোয়েশ্চন' নামে দুই পর্বের ধারাবাহিক ডকুমেন্টারি প্রকাশের পর থেকে উত্তেজনা বাড়তে থাকে দেশজুড়ে। এরমধ্যে আগুনে ঘি ঢালে চলতি মাসে বিবিসির দিল্লি ও মুম্বাই কার্যালয়ে আয়কর বিভাগের তল্লাশি অভিযান। যদিইও 'সমীক্ষা' উল্লেখ করে টানা ৬০ ঘন্টার সাঁড়াশি অভিযানের পর প্রতিষ্ঠানটির আয় ও মুনাফার হিসাবে গড়মিলের অভিযোগ আনা হয়। এদিকে, বিজেপিবিরোধী প্রায় সব রাজনৈতিক দল বিবিসির অফিসে এই অভিযানের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
এবার এসব ঘটনা নিয়ে মুখ খুললেন ভারতীয় শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী ও বিবিসির প্রাক্তন সিনিয়র কর্মীরা। বিজেপি সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ও অভ্যন্তরীণ অনেক কর্মকাণ্ড নিয়েও মন্তব্য করেন তারা।
বিবিসির সাবেক সিনিয়র সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুবীর ভৌমিক মনে করেন, তথ্যচিত্র প্রকাশের পর বিবিসির অফিসে এই ধরনের আয়কর হানা পরিস্কার বোঝা যায় একটার সাথে আরেকটার সম্পর্ক রয়েছে। বিজেপি সরকারে এই ধরনের পদক্ষেপের নিন্দা করে তিনি বলেন, ভারতে এই ধরনের মিডিয়া অফিসে হানার ঘটনা আগেও বিজেপি সরকার করেছে।
তবে কলকাতার সিনিয়ার সাংবাদিক অর্কপ্রভ সরকার মনে করেন, কেউ জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে নয়। কারো যদি আয়-ব্যয়ের অসঙ্গতি থাকে তবে যেকোনো সময় সরকারি সংস্থার তল্লাশি বা যাচাই করা অধিকার আছে। তবে তথ্যচিত্র প্রকাশের পরপরই এই ধরনের হানার ঘটনা না হলেই ভালো হতো।
যদিও বিবিসির বেশ কিছু ঘটনায় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দুজনই। তবে অনেকে বলছেন, পেশাদারভাবে সংবাদ পরিবেশন করলেও বিবিসির অভ্যন্তরে রয়েছে চরম দ্বিচারিতা। আর কেউ বলছেন, পেশাদারিত্ব নয় আসলে এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে এই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমটি।
স্থানীয় গণমাধ্যম দাবি করছে, স্বাধীন ভারতের বিবিসি এর আগেও বেশ কয়েকবার ধাক্কা খেয়েছে। ১৯৭০ থেকে ১৯৭২ সালের মধ্যে বিবিসি সম্প্রচার বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিল ভারতে। ১৯৭৫ সালেও জরুরি অবস্থার সময় একই অবস্থার সৃষ্টি হয়। তখন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী সরকার বিবিসি সম্প্রচারে বাধা দিয়েছিল বলে জানানো হয়।
আই নিউজ/এইচএ
আই নিউজ ভিডিও গ্যালারী
নীলাদ্রি লেক আমাদের এক টুকরো কাশ্মীর | পাখির চোখে নীলাদ্রি
- আইয়ুব খানের পদত্যাগের দিন আজ
- টাই পরা বাদ দিয়ে জ্বালানি সাশ্রয় করতে চান স্পেনের প্রধানমন্ত্রী
- যুদ্ধবন্দী কারাগারে বোমা হামলা, পরস্পরকে দোষছে রাশিয়া-ইউক্রেন
- মাঙ্কিপক্স ঠেকাতে পুরুষদের সেক্স পার্টনার কমানোর পরামর্শ
- আবারও মক্কায় কালো পাথর স্পর্শ-চুম্বনের সুযোগ পাচ্ছেন মুসল্লিরা
- ভারতের স্বাধীনতা দিবস শনিবার
- সুখবর! অক্সফোর্ডের তৃতীয় ট্রায়ালও সফল, ভ্যাকসিন আসছে জুলাইতেই
- চীনা ভূখণ্ডে ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রবেশ
- মালিতে সন্ত্রাসী হামলায় ৪২ সেনার মৃত্যু
- টাইমস স্কোয়ারে ‘ট্রাম্প ডেথ ক্লক’