Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, সোমবার   ২১ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ৮ ১৪৩২

হেলাল আহমেদ, আই নিউজ

প্রকাশিত: ১২:২৬, ২৬ অক্টোবর ২০২৩

গাজা ইস্যুতে এবার মুখোমুখি জাতিসংঘ-ইসরায়েল

যতো দিন যাচ্ছে ভয়ংকর রূপ ধারণ করছে গাজা-ইসরায়েল সংঘাত। সংঘাতটি এখন ফিলিস্তিন এবং ইসরায়েলের ভূরাজনৈতিক বিষয়ের বাইরে এখন আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে এখন মুখোমুখি অবস্থানে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। জাতিসংঘ মহাসচিবের বক্তব্যের বিপরীতে নিজেদের ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করে ইসরায়েল জাতিসংঘ কর্মীদের ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।

গাজায় বর্বর ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এ পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ ৭৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে একসাথে এতো মৃত্যু দেখেনি গাজাবাসী। দেশটিতে ইসরায়েলি হামলায় মোট নি হ তে র সংখ্যা সাড়ে ৬ হাজার ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে ২ হাজার ৭০৪ জনই শিশু! নি হ ত নারীর সংখ্যা ১ হাজার ৫৮৪ জন। খবর- রয়টার্স ও আল জাজিরা। 

মুখোমুখি গুতেরেস-ইসরায়েল 
গত মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশনে আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ইসরায়েলে ভয়ংকর এক হামলা চালিয়েছে হামাস। তবে এ হামলা যে হঠাৎ একেবারে শূন্য থেকে (কারণ ছাড়া) হয়নি। এটাও সবাইকে বুঝতে হবে। ফিলিস্তিনের জনগণ ৫৬ বছর ধরে শ্বাসরুদ্ধকর দখলদারির শিকার। তাঁরা তাঁদের ভূখণ্ড দখল করে অবৈধ ইহুদি বসতি দেখেছেন। তাঁরা সহিংসতায় জর্জরিত হয়ে চলেছেন। 

জাতিসংঘ প্রধান নিরাপত্তা পরিষদে ইসরায়েলকে অপরাধী ইঙ্গিত করে বলেন, গাজায় ইসরায়েল যা করছে, তা স্পষ্টতই আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। হামাসের এ হামলার জেরে জাতিগতভাবে ফিলিস্তিনি জনগণকে শাস্তি দেওয়া কখনো নায্যতা পেতে পারে না। 

আন্তোনিও গুতেরেসের নিরাপত্তা পরিষদে এমন বক্তব্য দেওয়ার পর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইসরায়েল। গুতেরেসের এমন কথার জন্য তাঁর পদত্যাগ দাবি করেছেন জাতিসংঘে নিয়োজিত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত গিলার্ড এরডান। তিনি বলেছেন, গুতেরেস জাতিসংঘ মহাসিচবের দায়িত্ব পালনের জন্য উপযুক্ত নন। তাঁর পদত্যাগ করা উচিৎ।  তাঁর এই বক্তব্যের জের ধরে কোনো জাতিসংঘ কর্মীকে ইসরায়েলের ভিসা দেওয়া হবে না বলেও জানিয়েছেন এই ইসরায়েলি সরকারি কর্মকর্তা। 

অবশ্য পরে জাতিসংঘ মহাসচিব আত্মপক্ষ সমর্থন করে জানিয়েছেন তাঁর বক্তব্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তিনি পরিষ্কারভাবে হামাসের ইসরায়েলে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন।   

গাজায় খাবার সঙ্কট, হানাহানির আশঙ্কা
এদিকে যুদ্ধবিধ্বস গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংস হামলা অব্যাহত থাকায় খাবার ও পানির তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এসবের মধ্যে ২৪ অক্টোবর ইহুদিদের নির্বিচারে বোমাবর্ষনে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৭৫৬ জনের মৃত্যু দেখেছে গাজা। আগে থেকেই খাবার সঙ্কটে থেকে গাজাবাসীদের এখন অনেকটা অনাহারে ধুকে ধুকে কাটাতে হচ্ছে সময়। যদিও মিসরের রাফাহ সীমান্ত দিয়ে কিছু ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করছে কিন্তু হতাহত ও বাস্তুচ্যুত গাজাবাসীর সংখ্যার অনুপাতে তা খুবই সামান্য। 

এ অবস্থায় তীব্র খাদ্য সঙ্কটের ফলে গাজায় নিজেদের মধ্যে খাবারের জন্য হানাহানির আশঙ্কা শুরু হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। কেননা, এখন সামান্য ত্রাণ সহায়তার উপর নির্ভর করছেন বিধ্বস্ত গাজাবাসী। দাতব্য সংস্থাগুলোর দেওয়া খাবারের জন্য মানুষের দীর্ঘ সারি এখন গাজায় দেখা নিত্য দৃশ্য। 

আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা অক্সফাম বলছে, গাজাবাসীর বিরুদ্ধে অনাহারকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সংস্থাটি আরো বলেছে, যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে খাদ্য বন্ধ করে দেওয়াকে কোনোভাবেই বৈধতা দেওয়ার সুযোগ নেই। 

ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যের বাইরেও ছড়ানোর শঙ্কা 
ইসরাইল ও ফিলিস্তিনির স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের মধ্যকার যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যের বাইরেও ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।  বুধবার ক্রেমলিনে রাশিয়ার ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে একটি বৈঠকে তিনি এ হুঁশিয়ারি দের। খবর এএফপির।

বৈঠকে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, অন্য মানুষের অপরাধের জন্য গাজার নিরীহ নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। আমাদের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে— এ রক্তপাত ও সংঘর্ষ থামানো। এটি না করতে পারলে এ সংঘর্ষ মধ্যপ্রাচ্যের বাইরেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।

পশ্চিমাদের সমালোচনা করে বৈঠকে পুতিন দাবি করেন, কিছু শক্তি আরো উত্তেজনা সৃষ্টি করতে চাইছে। তারা যতটা সম্ভব অন্যান্য দেশ ও জনগণকে এ সংঘাতের দিকে আকৃষ্ট করতে চাইছে।

তিনি বলেন, মস্কো ফিলিস্তিন-ইসরাইল ইস্যুতে দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে কাজ করা অব্যাহত রেখেছে। দীর্ঘমেয়াদি শান্তির জন্য এটি একমাত্র উপায়।

আই নিউজ/এইচএ 

Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়