Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, বুধবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ৩ ১৪৩২

ইমরান আল মামুন

প্রকাশিত: ২০:৩৭, ২ মার্চ ২০২৩
আপডেট: ২০:৪০, ২ মার্চ ২০২৩

সরকারি চাকরির বয়সসীমা এবং যোগ্যতা

বাংলাদেশে সরকারি চাকরি চাহিদা প্রচুর। অনেকে বলে সরকারি চাকরি একটি সোনার হরিণ। হ্যাঁ, এটি বাস্তবে অবশ্যই সত্যি। কিন্তু সরকারি চাকরির বয়সসীমা এবং যোগ্যতায় নির্দিষ্ট সীমাবদ্ধতা রয়েছে। কারণ নির্দিষ্ট বয়স সীমার আগে ও পরে আবেদন করা যায় না। সেই সঙ্গে চাকরির ক্যাটেগরি অনুসারে ভিন্ন ভিন্ন যোগ্যতা রয়েছে।

আজকের আর্টিকেলে আমরা সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে কি কি বিষয় লাগে তা আমরা জানবো। আমাদের আর্টিকেলে এসকল তথ্য তুলে ধরার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বেকার দূরীকরণ করা। কারণ প্রার্থীরা প্রয়োজনীয় তথ্য জানলেই তারা প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে পারবে। আর আজকের যুব সমাজ আগামী দেশ গড়ার কারিগর।

সরকারি চাকরির বিজ্ঞাপনে কোন প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবে সে বিষয় উল্লেখ থাকে। যেমন চাকরির আবেদনের যোগ্যতা, আবেদনের নিয়ম ইত্যাদি। চলুন তাহলে নিচের অংশ থেকে আমরা প্রয়োজনীয় তথ্য জেনে নেই।


সরকারি চাকরি আবেদনের যোগ্যতা:
যখন কোনো চাকরি বিজ্ঞপ্তি হয় সেখানে আবেদনের কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতা উল্লেখ করা হয়। ‌বয়স, শিক্ষা, শারীরিক যোগ্যতা ইত্যাদি। পরিপূর্ণ যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীরাই কেবলমাত্র চাকরির জন্য আবেদন করতে পারবে।

সিভিলিয়ান সরকারি চাকরির বয়স এবং অন্যান্য যোগ্যতা:

বয়স ও শারীরিক যোগ্যতা:
সরকারি চাকরির আবেদনের জন্য বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর এবং সর্বোচ্চ ৩০ বছর হতে হয়। তবে মুক্তিযোদ্ধা কোঠা ভিত্তিক প্রার্থীরা ৩২ বছর পর্যন্ত আবেদন করতে পারবে। এই ক্যাটাগরির চাকরির জন্য প্রার্থীদের শারীরিক যোগ্যতা তেমন
প্রয়োজন হয় না। কিন্তু কিছু কিছু বিশেষ পদের জন্য উচ্চতা প্রয়োজন হয়। যেমন: নিরাপত্তা প্রহরী ইত্যাদি। এসকল পদের জন্য ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি থেকে ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি পর্যন্ত উল্লেখ থাকে। তাছাড়া সুঠাম দেহের অধিকারী থাকতে হবে।

শিক্ষাগত যোগ্যতা: এই ডিপার্টমেন্টে চাকরির জন্য অনেক পদ রয়েছে। একেক পদের জন্য একেক শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ থাকে। প্রথম শ্রেণী, দ্বিতীয় শ্রেণি, তৃতীয় শ্রেণীর এবং চতুর্থ শ্রেণীতে বিভক্ত রয়েছে। বিসিএস ক্যাডার থেকে শুরু করে অক্ষরজ্ঞান সম্পূন্ন প্রার্থীরা আবেদন করতে পারে। যারা অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন তারা চতুর্থ শ্রেণীর আওতাধীন করে। যত উপরের পদের দিকে যাবে, তত শিক্ষাগত যোগ্যতা বৃদ্ধি পেতে থাকবে। তবে টেকনিক্যাল পদের জন্য অভিজ্ঞতা সম্পন্ন প্রার্থীদেরকে অগ্রধিকার দেওয়া হয়।

সামরিক সরকারি চাকরির বয়স সীমা ও অন্যান্য যোগ্যতা

বয়স: সামরিক যেমন- সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, বিজিবি ইত্যাদি। এগুলোতে সৈনিক পদে আবেদনের জন্য ১৬ থেকে ২১ বছর পর্যন্ত হতে হয়। ‌তবে অফিসার পদের জন্য ১৮ থেকে ২৪ বছর পর্যন্ত উল্লেখ থাকে। তবে বাহিনী এবং
ডিপার্টমেন্ট অনুসারে বয়সের কিছু তারতম্যও ঘটে। উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের জন্য তাদের ডিপার্টমেন্ট অনুসারে ভিন্ন ভিন্ন বয়স উল্লেখ থাকে।

শিক্ষাগত যোগ্যতা: সাধারণত সৈনিক পদের জন্য এসএসসি পাস হতে হয়। ‌ জুনিয়র কমিশন্ড অফিসারের ক্ষেত্রে এইচএসসি উল্লেখ থাকে। তবে বর্তমানে বেশ কিছু ডিপার্টমেন্টে স্নাতক শিক্ষাগত যোগ্যতা দেওয়া রয়েছে। উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ক্ষেত্রে স্নাতকোত্তর এবং অভিজ্ঞতা সম্পন্ন হতে হয়। তবে যারা ক্যাডেট থেকে ডিরেক্ট এন্ট্রি হয় তাদের ক্ষেত্র ভিন্ন। ‌টেকনিক্যাল পদের জন্য কম পক্ষে ৬ মাসের ট্রেড কোর্স থাকতে হয়। সাব এসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার পদের জন্য ডিপ্লোমা পাশ হতে হবে। মেডিকেল‌ ডিপার্টমেন্টে মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট হিসেবে জয়েন্ট করতে এসএসসি পাশ হতে হয়। তবে এ ক্ষেত্রে বিজ্ঞান বিভাগ থাকতে হবে। এছাড়াও মেডিকেল এসিস্টেন্টের জন্য ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল হতে হয় ডাক্তারদের ক্ষেত্রে উল্লেখিত বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হতে হবে।

শারীরিক যোগ্যতা: সৈনিক পদের জন্য বাহিনী অনুসারে ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি থেকে ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়। এছাড়া বাহিনীর বিভাগীয় ক্ষেত্রে এরও তারতম্য ঘটে। ‌তবেউপজাতীয় ক্ষেত্রে ৫ ফুট ৪ ইঞ্চিই যথেষ্ট। সামরিক অফিসারদের জন্য ৫ ফুট ৪
ইঞ্চি হতে হয়। ‌ কারণ তাদের অভিজ্ঞতাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়ে থাকে। মেডিকেল অফিসারদের জন্য কোনো ধরনের শারীরিক যোগ্যতার প্রয়োজন হয় না। বুকের মাপ এবং ওজন উচ্চতা অনুসারে উল্লেখ করা হয়। তবে চোখের দৃষ্টিশক্তি ৬.৬ হতে হবে অবশ্যই। শরীরে কোন ধরনের কাঁটা দাগ কিংবা জটিল রোগ থাকা যাবে না। ‌তাহলে শারীরিক অযোগ্যতা হিসেবে বিবেচনা হবেন।

সরকারি চাকরির আবেদনের পদ্ধতি
এখনকার সময় বেশিরভাগ সরকারি চাকরির আবেদন করা হয় অনলাইনে। অনলাইনে চাকরি আবেদনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু তথ্য জানতে হয়। আবেদন টেলিটক ওয়েবসাইট এবং টেলিটক সিমের মাধ্যমে করা লাগে। ‌ প্রতিটি ডিপার্টমেন্টের জন্য আলাদা আলাদা ওয়েবসাইট রয়েছে। ‌ঐ ওয়েবসাইট লিংকে ক্লিক করে তারপর অনলাইনে আবেদন ফরম পূরণ করতে হয়। আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো নিচে দেওয়া হল:

  • ব্যক্তিগত তথ্য এবং ছবি
  • অভিভাবকের তথ্য
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার তথ্য
  • অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ তথ্য
  • সর্বশেষ স্বাক্ষর

ছবির রেজুলেশন হতে হয় ৩০০x৩০০ পিক্সেল। স্বাক্ষর রেজুলেশন হতে হয় ৩০০x৮০০ পিক্সেল। আবেদন ফরম পূরণ করার পর টেলিটক সিমের মাধ্যমে ফি প্রদান করতে হয়। আরেক পদ্ধতিতেও চাকরিতে আবেদন করা যায়। সেটি হচ্ছে ডাক যোগাযোগের মাধ্যমে। একটি জীবন বৃত্তান্ত নিজ হাতে লিখতে হবে। সেই সাথে ছবি এবং সকল শিক্ষাগত সনদপত্রের ফটোকপি পাঠাতে হয় উল্লেখিত ঠিকানা। ফটোকপিগুলো অবশ্যই সত্যায়িত হতে হবে। ‌এ পদ্ধতিতে আবেদন ফি ব্যাংক ড্রাফট কিংবা চালান কপির মাধ্যমে প্রদান করতে হয়।

এই হচ্ছে সরকারি চাকরির আবেদনের বয়সসীমা এবং অন্যান্য যোগ্যতা। তবে স্টুডেন্টদের বলবো নিজেকে চাকরির প্রিপারেশন এখন থেকেই নিতে।

Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়