আপডেট: ০৫:৩৭, ২৬ আগস্ট ২০১৯
স্টোকসের ১৪৯ রানের ‘মহাকাব্য’
স্পোর্টস ডেস্ক: ১৯৮১ সালে এই হেডিংলিতেই অ্যাশেজ সিরিজের তৃতীয় টেস্টে ইংল্যান্ড ফলোঅনে পড়েও ম্যাচ জিতেছিল ইংল্যান্ড। সেই টেস্টের ফলোঅনে পড়া ইনিংসে ১৪৯ রানের এক মহাকাব্যিক ইনিংস খেলেছিলেন ইংলিশ গ্রেট ইয়ান বোথাম। গ্রেট ইয়ান বোথামের স্মৃতিকেই যেন আবারও ফিরিয়ে আনলেন স্টোকস।
২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে ৮৪ রানে অপরাজিত থেকে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে ট্রফি ইংল্যান্ডে নিয়ে গিয়েছিলেন বেন স্টোকস। তবে এবারের লক্ষ্যটা ছিল আরও দূরহ। ইংল্যান্ড কোনো টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে এত রান তাড়া করে কখনো জেতেনি। লক্ষ্য থেকে ইংলিশরা ৭৩ রান দূরে থাকতে নবম উইকেটও পড়ে যাওয়ায় জেতাটা একেবারেই হাতছাড়া হয়ে গিয়েছিলো ইংল্যান্ডের। তবু সেই লক্ষ্যকেও ছুঁয়ে দিলেন স্টোকস। জ্যাক লিচকে এক প্রান্তে আগলে রেখে ১৩৫ রানে অপরাজিত থেকে অ্যাশেজের দ্বিতীয় টেস্টে ইংলিশদের এনে দিলেন ঐতিহাসিক জয়। এর মাধ্যমে সিরিজে সমতায়ও ফিরল ইংলিশরা।
এর আগে কখনো ৩৩২ রানের বেশি তাড়া করে জেতেনি ইংল্যান্ড। ফলে লক্ষ্যটা শুরু থেকেই ছিল কঠিন। এর মধ্যে তৃতীয় দিন শেষে স্কোরবোর্ডে ১৫ রান তুলতেই দুই উইকেট নেই। পরে অবশ্য রুট আর ডেনলি প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। দিন শেষ হওয়ার আগে ডেনলি আউট হলেও রুটের ৭৫ রানের সঙ্গে ২ রানে অপরাজিত ছিলেন স্টোকস। ওই ২ রান করতে অবশ্য খেলেছিলেন ৫০ বল। তাতেই তিনি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, বিনা যুদ্ধে ছাড়বেন না অজিদের।
চতুর্থ দিনের পঞ্চম ওভারেই বিদায় নেন ইংলিশ ক্যাপ্টেন রুট। উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান বেয়ারস্টোকে নিয়ে সে ধাক্কা সামাল দেন স্টোকস। তবে বেয়ারস্টো আউট হওয়ার পরেই যেন মড়ক লাগে। দ্রুতই বিদায় নেন জস বাটলার, ক্রিস ওকস। পরে আর্চার খানিকটা সঙ্গ দেন স্টোকসকে। কিন্তু লক্ষ্য থেকে ৭৩ রান যখন দূরে, তখন আউট হয়ে যান আর্চার। অজি শিবির যেন তখনই জয় দেখতে পাচ্ছে। কিন্তু স্টোকসের মনে ছিল অন্য কিছু।
শেষ উইকেটে লিচকে স্ট্রাইক থেকে বাঁচিয়ে দেখেশুনে খেলতে থাকেন স্টোকস। সিংগেল-ডাবলের চেয়ে তখন ডট আর বাউন্ডারিতে মনোযোগ দেন। দেখতে দেখতে জয়ের লক্ষ্যমাত্রার কাছে চলে আসে ইংল্যান্ড। লিচ যে দুয়েকটি বলে স্ট্রাইক পাচ্ছিলেন, আগলে রাখেন উইকেট। অন্যদিকে স্টোকসের ব্যাট চওড়া হতে থাকে। এর মধ্যে অবশ্য অজিরা সুযোগও পেয়েছে, কিন্তু কাজে লাগাতে পারেনি। জয় থেকে তখনও ইংলিশরা ১৩ রান দূরে। ওই সময় প্যাট কামিন্সের বলে স্টোকসের ‘কঠিন’ ক্যাচ মিস করেন মার্কাস হ্যারিস। ওই ওভারেরই শেষ বলে মরিয়া হয়ে রিভিউ নেয় অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু বল লেগ স্টাম্পের বাইরে পিচ করায় স্টোকস বেঁচে যান।
পরের ওভারে আবার মিস। এবার নাথান লায়ন বল হাতে জমাতে না পারায় রান আউটের খাড়া থেকে বেঁচে যান স্টোকস। আর পরের বলেই এলবিডাব্লিউয়ের আবেদন নাকচ করে দেন আম্পায়ার। অথচ রিপ্লেতে দেখা যায়, রিভিউ নিলে সেটি নিশ্চিত আউট হতো। আগের ওভারের রিভিউ নিয়ে সেটা নষ্ট হওয়ার কারণেই রিভিউয়ের আর কোনো সুযোগ ছিল না অস্ট্রেলিয়ার। ফলে স্টোকস বলতে গেলে জীবনই পান। আর সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে পূর্ণ মাত্রায়। ১২৫তম ওভারে লিচ ছিলেন স্ট্রাইকে। কামিন্সের বলকে শর্ট লেগে পাঠিয়ে স্টোকসকে সঙ্গ দেওয়া ১৭ বলের ইনিংসের একমাত্র রানটি করেন তিনি। দুই দলের রানও সমান হয়ে যায়। পরের বলেই কামিন্সকে কাভার দিয়ে মাঠের বাইরে পাঠান স্টোকস, ঐতিহাসিক মুহূর্তের স্বাক্ষী হয় হেডিংলি।
এই টেস্টের ম্যাচসেরাও তাই হয়েছেন স্টোকস।
সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ড
অস্ট্রেলিয়া: ১৭৯ (ল্যাবুশেং ৭৪, আর্চার ৬/৪৫) ও ২৪৬ (ল্যাবুশেং ৮০)
ইংল্যান্ড ৬৭ (হ্যাজেলউড ৫/৩০) ও ৩৬২/৯ (স্টোকস ১৩৫*, রুট ৭৭, হ্যাজেলউড ৪/৮৫)
আইনিউজ/এইচএ
- কাল থেকে যেসব শাখায় পাওয়া যাবে নতুন টাকার নোট
- 'জাতীয় মুক্তি মঞ্চ' গঠনের ঘোষণা
- এক বছরেই শক্তি, ক্ষিপ্রতা জৌলুস হারিয়ে 'হীরা' এখন বৃদ্ধ মৃত্যুপথযাত্রী
- ওয়াহিদ সরদার: গাছ বাঁচাতে লড়ে যাওয়া এক সৈনিক
- ভারতবর্ষে মুসলিম শাসনের ইতিকথা (প্রথম পর্ব)
- এবার ভাইরাস বিরোধী মাস্ক বানিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিলো বাংলাদেশ
- মায়েরখাবারের জন্য ভিক্ষা করছে শিশু
- ২৫ কেজি স্বর্ণ বিক্রি করল বাংলাদেশ ব্যাংক
- ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ
- তালিকা হবে রাজাকারদের