তনিমা রশীদ
আপডেট: ১৯:১১, ৩ নভেম্বর ২০২১
কালোজিরার উপকারিতা ও কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম
কালোজিরা ও মধু
প্রায় শতাধিক পুষ্টি উপাদান রয়েছে কালোজিরাতে। এই উপাদানগুলো আমাদের শরীর সুস্থ রাখার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কালোজিরার উপকারিতা এর ওপর নির্ভর করে প্রাচীনকাল থেকেই ঔষধি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
আমাদের বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (স.) কালোজিরা সম্পর্কে বলেছেন, “তোমরা কালোজিরা ব্যবহার করবে, কেননা এতে একমাত্র মৃত্যু ব্যতীত সব রোগের মুক্তি রয়েছে”। কালোজিরার তেলও আমাদের জন্য উপকারী। আয়ুর্বেদীয়, কবিরাজী ও ইউনানী চিকিৎসায় অনেক বেশি কালোজিরা ব্যবহার করা হয়।
কালোজিরা খেলে হাজার রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। প্রায় দুই হাজারেরও বেশি বছর ধরে মানুষ খাবারের সাথে কালোজিরা ব্যবহার করে আসছে। এ কালোজিরা আমাদের কাজ করার শক্তি কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়। এতে রয়েছে ২১ শতাংশ আমিষ, ৩৮ শতাংশ শর্করা এবং ৩৫ শতাংশ ভেষজ তেল ও চর্বি। কালোজিরা আমাদের শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
কালোজিরার গুণাগুণ
কালোজিরাতে রয়েছে প্রোটিন, ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি২, ভিটামিন বি৩, ক্যালসিয়াম, পাচক এনজাইম, ৫ দশমিক ২৬ মিলিগ্রাম ফসফরাস, ১৮ মাইক্রোগ্রাম লৌহ, কার্বোহাইড্রেট, কেরোটিন, জীবানুনাশক এবং অম্লানশক উপাদান। এছাড়াও রয়েছে লিনোলিক এসিড ও অলিক এসিড। কালোজিরা হরমোন ঠিক রাখে। প্রস্রাব সংক্রান্ত রোগ প্রতিরোধ করে। কালোজিরাতে থাকা কেরোটিন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। তবে এই কালোজিরা খাওয়ার কিছু নিয়মও রয়েছে। নিয়মানুসারে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যাবে।
কালোজিরার উপকারিতা
কালোজিরা উপকারিতা বলে শেষ করার মতো নয়। এটি আমাদের শরীরে নানারকম রোগের প্রতিষেধক। আমাদের শরীরের সবধরনের সমস্যা দূর করতে সহায়তা এটি। কালোজিরা তেল আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী।
কালোজিরা তেল
কালোজিরার তেল বা কালোজিরা চায়ের সাথে মিশিয়ে নিয়মিত পান করলে হৃদরোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। তার সাথে মেদও কমে।
অনেকেই হাঁপানির সমস্যায় ভোগেন। যাদের এ সমস্যা রয়েছে তারা কালোজিরার তেল বুকে ও পিঠে মালিশ করলে আরাম পাবেন।
কালোজিরা তেলের উপকারিতা কি
নানা ধরনের ব্যাথা কমাতে কালোজিরার তেল খুব উপকারে আসে। মাথা ব্যাথায় কপালের উভয় চিবুকে ও কানের পার্শ্ববর্তী স্থানে দৈনিক ৩ থেকে ৪ বার কালোজিরার তেল মালিশ করলে ব্যাথা কমে।
বাতব্যথা সারাতে কালোজিরার তেলে খুব কাজে আসে। কালোজিরার তেল হালকা গরম করে মালিশ করলে ব্যথা প্রশমিত হয়।
দাঁতে ব্যথা হলে কুসুম গরম পানিতে কালোজিরা দিয়ে কুলি করলে ব্যথা কমে, পাশাপাশি জিহ্বা, তালু ও দাঁতের মাড়ির জীবাণুও মরে।
চুলের জন্য কালোজিরার উপকারিতা
চুলে জন্য কালোজিরার উপকারিতা রয়েছে। এর তেল চুলের গোড়ায় পুষ্টি পৌঁছে দিয়ে শক্ত করে। ফলে চুল পড়া বন্ধ হয়ে যায় এবং চুল বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
শ্যাম্পু করার পর চুল শুকিয়ে পুরো মাথায় কালোজিরার তেল ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। এভাবে এক সপ্তাহ নিয়মিত করলে চুল পড়া বন্ধ হয়ে যাবে। অলিভ অয়েল আর কালোজিরার তেল নিয়মিত সেবন করলেও চুল পড়া অনেক কমে যাবে।
কালোজিরা ও মেথির উপকারিতা নতুন চুল গোজাতে ও চুল পড়া বন্ধ করতে কালোজিরা ও মেথির উপকারিতা রয়েছে। আপনি কালোজিরা ও মেথি একসাথে কড়া রোদে শুকিয়ে গুঁড়া করে নিন। এরপর নারকেল তেলের সাথে গুঁড়াগুলো মিশিয়ে কয়েক মিনিট ফুটিয়ে নিন। তারপর মিশ্রণটি ঠাণ্ডা করে একটি বোতলে সংরক্ষণ করে নিন। এটি অন্তত দুই থেকে তিনবার তিনসাপ্তাহ ব্যবহার করুন। তাহলে কয়েক মাসের মধ্যে উপকার পাওয়া যাবে।
কালোজিরা খেলে কি হয়
কালোজিরা খেলে হাজার রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। প্রায় দুই হাজারেরও বেশি বছর ধরে মানুষ খাবারের সাথে কালোজিরা ব্যবহার করে আসছে। এ কালোজিরা আমাদের কাজ করার শক্তি কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়। এতে রয়েছে ২১ শতাংশ আমিষ, ৩৮ শতাংশ শর্করা এবং ৩৫ শতাংশ ভেষজ তেল ও চর্বি। কালোজিরা আমাদের শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
নিয়মিত কালোজিরা খেলে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে। ফলে স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পায়।
নিম্ন রক্তচাপকে বৃদ্ধি এবং উচ্চ রক্তচাপকে হ্রাস এর মাধ্যমে শরীরে রক্তচাপ এর মাত্রা স্বাভাবিক করতে সহায়তা করে কালোজিরা।
কালোজিরাতে প্রায় ১০০ টি রোগের প্রতিষেধক থাকে। তার মধ্যে ক্যান্সারের প্রতিষেধকও রয়েছে। কালোজিরাতে থাকা কেরোটিন ক্যান্সার রোগের প্রতিষেধক।
এছাড়াও কালোজিরা খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। কালোজিরা রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। ডায়াবেটিস রোগীরা প্রতিদিন খালি পেটে কালোজিরা খেলে ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
হজম ভালো হলে শরীর ভালো থাকে। কালোজিরা খাবারকে ভালোভাবে হজম করতে সাহায্য করে। ভালো হজমের জন্য, এক থেকে দুই চা চামচ কালোজিরা বেটে প্রতিদিন তিনবার খেতে হবে। এতে একমাসের মধ্যে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।
কালোজিরা ও মধু
শীতকালে আামাদের অনেকেরই ঠান্ডার কারণে জ্বর সর্দি হয়ে থাকে। এসব থেকে রক্ষা পেতে কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম হলো- কালোজিরা ও মধু একসাথে মিশিয়ে খাওয়া। এতে শরীর গরম থাকে। তাতে জ্বর, সর্দি, কফ হওয়ার প্রবণতা কমে।
এছাড়াও কালোজিরার উপকারিতা রয়েছে আরো অনেক। এটি শরীরের ঘা, ফোড়া নানা ধরনের সংক্রামক রোগ থেকে রক্ষা করে। এতে বিদ্যমান অ্যান্টিমাইক্রোরিয়াল এজেন্ট যা শীরের রোগ-জীবাণু ধ্বংসকারী উপাদান এটি শরীরে সহজে ঘা, ফোড়া ও সংক্রামক রোগ হতে দেয় না। কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম মেনে খেলে অরুচি, শরীর ব্যথা, মাইগ্রেন, অনিদ্রা, সৌন্দর্য রক্ষা, দুর্বলতা, অলসতা ইত্যাদি দূর হবে। শিশুর দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধিতে কালোজিরার বিকল্প নেই। তাই নিয়মিত কালোজিরা খাওয়ার অভ্যাস করাতে হবে শিশুদের।
কালোজিরা বেশি খেলে কি হয়
কালোজিরা বেশি খাওয়া উচিত নয়। এতে উপকারের বদলে অপকার হবে। নিয়মানুযায়ী পরিমাণ মতো কালোজিরা খেতে হবে। যারা কালোজিরা হজম করতে পারেন না তারা ধীরে ধীরে অল্প অল্প করে কালোজিরা খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
কালোজিরার উপকারিতা ও কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম এর সম্পর্কে আমাদের কিছু সাধারণ ধারণা থাকা উচিত। কারণ এটি আমাদের জন্য যতই উপকারী হউক না কেন তা নিয়মিত পরিমাণ মতো খেতে হবে। না হলে উপকারের বদলে অপকার হবে। তাই কালোজিরা খাওয়ার সময় কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। গর্ববতীদের কালোজিরা খাওয়া উচিত নয়। তেমনি দুই বছরের কম শিশুদের কালোজিরার তেল খাওয়ানো উচিত হবে না। তবে বাহ্যিক ব্যবহার করা যাবে।
- ছেলেদের ইসলামিক আনকমন নাম অর্থসহ শিশুর নাম
- ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম ২০২২
- মেয়েদের ইসলামিক নাম ২০২৩
- সুন্দর বাচ্চা পিক ডাউনলোড
- মাথা ন্যাড়া করার এই অপকারিতা জানেন কি?
- শুভ সকাল রোমান্টিক মেসেজ | শুভ সকাল স্ট্যাটাস
- ছেলেদের কষ্টের স্ট্যাটাস বাংলা
- ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
- কাউনের চালের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
- অনেকেই জানেন না, সিগারেটের বাংলা অর্থ কী?