সাগর জাহান
ইসলাম ধর্মে নারীর গুরুত্ব ও মর্যাদা
আজ ৮ মার্চ। বিশ্বব্যাপী এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। প্রতিবছর নারী দিবস আসলেই আলোচনায় আসে নারী অধিকার, নারীর প্রতি সহিংসতা, নির্যাতন-অত্যাচারের নানাবিধ প্রসঙ্গ। আসে ইসলাম ধর্মে নারীর গুরুত্ব ও মর্যাদার বিষয়টিও। নারী-শিশুদের ব্যাপারে ইসলাম ধর্মের আলোচনা নিয়ে আই নিউজের আজকের এই বিশেষ প্রতিবেদনটি সাজানো হয়েছে। ইসলাম ধর্মে নারীর গুরুত্ব ও মর্যাদার ব্যাপারে বিশদভাবে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। আজকের এ লেখায় জানাবো তেমনি কিছু ব্যাখ্যার কথা।
এ বিশ্বলয়ের ভারসাম্য বজায়ে নারীর গুরুত্ব অপরিসীম। কবি নজরুল ইসলাম তাঁর কাব্যে বলেছেন এ পৃথিবীর যতো কীর্তি স্থাপনা আছে, অর্ধেক তার গড়িয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর। আবার সিমন দ্য বেভ্যুয়ার বলেছেন- One is not born, but rather becomes, a woman.... ইসলাম ধর্মে নারীদেরকে বর্ণনা করা হয়েছে বেহেশতের সাথে তুলনা করা হয়েছে।
এক তাসরিফে নবী মুহাম্মদ (সঃ) সাহাবীদের বলেছিলেন- যার একটি মেয়ে আছে সে যেন মনে করে তার জন্য আল্লাহতায়ালা একটি বেহেশত বরাদ্দ করে রেখেছেন। বেহেশত হলো মুসলমানদের একমাত্র পরমপূজ্য স্থান, যেখানে তারা তাদের সারাজীবনের ভালো আমলের বিনিময়ে গমন করতে চায়। অথচ নবী করীম (সঃ) নারীদেরকে তুলনা করেছেন সেই বেহেশতের সাথে।
ইসলাম ধর্ম নারীর ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করেছে। দিয়েছে নারীর জান-মালের নিরাপত্তা ও সর্বোচ্চ সম্মান। নারীদের তালিম তালবিয়ার ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে আছে, 'তোমরা তাদের (নারীদের) সঙ্গে উত্তম আচরণ করো ও উত্তম আচরণ করার শিক্ষা দাও।' (সূরা-৪ নিসা, আয়াত: ১৯)।
নারী ও পুরুষসহ কোনো সৃষ্টির অধিকার ও স্বাধীনতা ইসলাম খর্ব করেনি। বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় আলোচিত সামাজিক মহামারী ‘নারী নির্যাতন’। এই নারী নির্যাতন রোধে করে নারীকে পূর্ণ স্বাধীনতা ও অধিকার দিয়েছে ইসলাম। শুধু ইসলামি জীবনদর্শনই নারীর স্বাধীনতা ও অধিকার অক্ষুন্ন রাখতে সক্ষম।
বাংলাদেশসহ বিশ্ব মিডিয়ার দিকে তাকালে দেখা যায়, প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও অহরহ ঘটে চলেছে নারীর প্রতি নির্যাতন। যারা নারী অধিকারের ব্যাপারে সরব, তারা দিতে পারছে না নারীকে যথাযথ সম্মান, স্বাধীনতা, নিরাপত্তা ও কাঙ্ক্ষিত অধিকার। অনেক ইসলামি চিন্তাবিদ তাই মনে করছেন ইসলামই একমাত্র জীবন ব্যবস্থা; যা নারীকে দিয়েছে যথাযথ মর্যাদা, সম্মান, স্বাধীনতা ও কাঙ্ক্ষিত অধিকার।
মহাগ্রন্থ আল কোরআনে ‘নিসা’ অর্থাৎ ‘মহিলা’ শব্দটি ৫৭ বার এবং ‘ইমরাআহ’ অর্থাৎ ‘নারী’ শব্দটির ২৬ বার উল্লেখ হয়েছে। কোরআনে ‘নিসা’ তথা ‘মহিলা’ শিরোনামে নারীর অধিকার ও কর্তব্যসংক্রান্ত একটি স্বতন্ত্র সূরা রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন আয়াত ও হাদিসে নারীর অধিকার, মর্যাদা ও মূল্যায়ন সম্পর্কে বর্ণনা রয়েছে।
নারী হবে পারস্পরিক সাহায্যকারী বন্ধু, সৎকাজের প্রতি উৎসাহ দানকারী, অসৎকাজে বাধা প্রদানকারী, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের পথে আহ্বানকারী, হজ, জাকাত, ইবাদত-বন্দেগি পালনকারী এবং সামাজিক প্রায় সব কাজেই পুরুষের মতো নারীদের অংশগ্রহণ ও কার্যক্রম পরিচালনাকারী। ইসলাম এর কোনোটিতেই বাধা দেয় না বরং এসব কাজে অংশগ্রহণে নারীকে ইসলাম উৎসাহ দেয়।
এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআন শরীফে বলা হয়েছে-
‘হে নবি! ঈমানদার নারীরা যখন আপনার কাছে এসে আনুগত্যের শপথ করে যে, তারা আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করবে না, চুরি করবে না, ব্যভিচার করবে না, তাদের সন্তানদের হত্যা করবে না, জারজ সন্তানকে স্বামীর ঔরস থেকে আপন গর্ভজাত সন্তান বলে মিথ্যা দাবি করবে না এবং ভাল কাজে আপনার অবাধ্যতা করবে না, তখন তাদের আনুগত্য গ্রহণ করুন এবং তাদের জন্যে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল অত্যন্ত দয়ালু।’ (সুরা মুমতাহিনা : আয়াত ১২)।
মহাগ্রন্থ আল কোরআনে ‘নিসা’ অর্থাৎ ‘মহিলা’ শব্দটি ৫৭ বার এবং ‘ইমরাআহ’ অর্থাৎ ‘নারী’ শব্দটির ২৬ বার উল্লেখ হয়েছে। কোরআনে ‘নিসা’ তথা ‘মহিলা’ শিরোনামে নারীর অধিকার ও কর্তব্যসংক্রান্ত একটি স্বতন্ত্র সূরা রয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন আয়াত ও হাদিসে নারীর অধিকার, মর্যাদা ও মূল্যায়ন সম্পর্কে বর্ণনা রয়েছে। ইসলাম নারীর ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করেছে। দিয়েছে নারীর জান-মালের নিরাপত্তা ও সর্বোচ্চ সম্মান।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, একবার এক লোক মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দরবারে এসে জিজ্ঞেস করলেন, আমার সদ্ব্যবহার পাওয়ার বেশি অধিকারী কে? নবীজি (সা.) বললেন, ‘তোমার মা’। ওই লোক জিজ্ঞেস করলেন, তারপর কে? তিনি উত্তর দিলেন ‘তোমার মা’। ওই লোক আবারও জিজ্ঞেস করলেন, তারপর কে? এবারও তিনি উত্তর দিলেন ‘তোমার মা’। (বুখারি)।
সুতরাং, উপরের লেখা থেকে এটা সহজেই অনুমেয় যে ইসলাম ধর্ম নারীদের অধিকার কুক্ষিগত করে নি বা নারীদেরকে পশ্চাদপদ করে রাখেনি। বরং, ইসলাম ধর্ম পরিবেশের সাথে ভারসাম্য রেখে নারীকে দিয়েছে শ্রেষ্ঠ সম্মান। যদিও বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান সহ এশিয়ার অনেক দেশেই ইসলাম ধর্মের নামে নারীদেরকে বন্দিজীবনে বাধ্য করার দৃশ্য এখনো দেখা যায়। যা ইসলাম পরিপন্থী বলেই মনে করেন এতদ অঞ্চলের ইসলামি চিন্তাবিদগণ।
আই নিউজ/এইচএ
আই নিউজ ভিডিও গ্যালারী
হানিফ সংকেত যেভাবে কিংবদন্তি উপস্থাপক হলেন | Biography | hanif sanket life documentary | EYE NEWS
- ছেলেদের ইসলামিক আনকমন নাম অর্থসহ শিশুর নাম
- ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম ২০২২
- মেয়েদের ইসলামিক নাম ২০২৩
- সুন্দর বাচ্চা পিক ডাউনলোড
- মাথা ন্যাড়া করার এই অপকারিতা জানেন কি?
- শুভ সকাল রোমান্টিক মেসেজ | শুভ সকাল স্ট্যাটাস
- ছেলেদের কষ্টের স্ট্যাটাস বাংলা
- ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
- কাউনের চালের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
- অনেকেই জানেন না, সিগারেটের বাংলা অর্থ কী?