Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৫ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ২ ১৪৩২

অঞ্জন রায়

প্রকাশিত: ১৫:৫৮, ২৫ মার্চ ২০২৩

নারী উদ্যোক্তা মাহবুবা`র সফলতার গল্প 

নারী উদ্যোক্তা মাহবুবা রহমান। ছবি- আই নিউজ

নারী উদ্যোক্তা মাহবুবা রহমান। ছবি- আই নিউজ

বর্তমানে অন্যান্য দেশের নারীদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের নারীরাও কোনো কাজেই পিছিয়ে নেই। তারা তাদের নিজ যোগ্যতায় এগিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। অনলাইন ব্যবসায়ের প্রবর্তনের ফলে নারীরা সফল উদ্যোক্তায় পরিণত হচ্ছে। ঘরে বাইরে সব পেশায় নিজেদেরকে নিয়োজিত করছে। সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন উদ্যোক্তাদের। 

তেমনি একজন কুমিল্লা জেলার মেয়ে মাহবুবা রহমান। তিনি কাজ করছেন কুমিল্লার বিখ্যাত হাতে বুনা খাদি কাপড়, বেডশিট, থ্রি-পিস, সুতি ও  সিল্ক শাড়ি, সিলেটের বিখ্যাত মনিপুরি শাড়ি সহ দেশীয় বিভিন্ন কাপড় নিয়ে। 

মাহবুবা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে এইচএসসি পাশের পর সিলেটের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়য়ে ভর্তি হন মাহবুবা। স্নাতক করেছেন কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিষয়ে।

অনার্সে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই দেশীয় পণ্য নিয়ে কাজ করার একটা আগ্রহ তৈরি হয় মাহবুবার। সে আগ্রহ থেকেই তাঁত ও তাঁতির খোঁজ খবর নেয়া শুরু করেন। কিন্তু এর মাঝে হুট করেই মহামারি করোনা চলে আসে। করোনাকালীন সময়ে লকডাউনে গৃহবন্দী তাঁতিদের দিয়ে শাড়ি তৈরি করা শুরু করেন মাহবুবা। 'দেশী কারিগর' নামে ফেসবুক পেইজে শাড়ির ছবি তোলে শেয়ার দিতেন। লকডাউনের সময়ে মানুষজন পছন্দের শাড়ি তার পেইজ থেকে অর্ডার করতেন। এভাবেই শুরু। তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয় নি। 

মাহবুবা জানান, দেশীয় ড্রেস পরতে পছন্দ করতাম। বেশিভাগ সময় দেশীয় ব্রান্ডের শোরুমে গেলেই দেখতাম আমাদের দেশীয় ড্রেস। আবার আমি নিজে কাপড় কিনে সেই কাপড় নিজের পছন্দ মত  ডিজাইন  দিয়ে নতুন ড্রেস তৈরি করে পরতাম। এর থেকে মাথায় আসে আমি নিজেও হারিয়ে যাওয়া তাঁত  নিয়ে নিজের একটা ব্যান্ড বানাতে পারি এবং নিজের দেশের বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে এমন তাঁতগুলো নিয়ে কাজ করি। এই থেকে তাঁতি খুজে খুজে বের করা শুরু করলাম। করোনায় যেখানে সবার কাজ বন্ধ হয়ে যায় আমি আমার তাঁতির কাজ সচল রাখি। তাঁতিরাও ঘরে বসে উপার্জন করা শুরু করেন। আমিও ঘরে বসেই আমার পেইজ সামলাতে শুরু করি। একটু-আধটু করে ক্রেতারা ভরসা করা শুরু করলেন। এমন অনেক ক্রেতাই আমার নিয়মিত ক্রেতা হয়ে যান, আলহামদুলিল্লাহ।

তিনি জানান, দেশীয় সকল প্রডাক্ট নিয়ে কাজ করি, এরমধ্যে অন্যতম কুমিল্লার বিখ্যাত হাতে বুনা খাদি কাপড়। এইকাপড় দিয়ে পাঞ্জাবি, কুর্তি, ড্রেস নিজের পছন্দের ডিজাইন দিয়ে তৈরি করি। কুমিল্লা  বিখ্যাত মোম বাটিকের বেডশিট, থ্রি-পিস,সুতি ও  সিল্ক শাড়ি নিয়ে কাজ করি। সিলেটের বিখ্যাত হাতে বুনা মনিপুরী শাড়ি, থ্রি-পিস, ওড়না গামছা ও আছে দেশী কারিগরে। হাতে বুনা জামদানি শাড়ি এবং পাঞ্জাবি ও রয়েছে। যেকোনো রঙের মনিপুরী শাড়ি এবং জামদানি শাড়ি কাস্টমারের পছন্দ অনুযায়ী কাস্টমাইজ করে তৈরি করে দিয়ে থাকি।

শুরুর দিকে নারীরা নানান প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়, এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাহবুবা বলেন, প্রতিবন্ধকতা তেমন একটা ছিলো না। আমার পরিবার আমাকে সব সময় সাহায্য সহযোগিতা এবং উৎসাহ দিয়েছেন। বিশেষ করে আমার আম্মু আমাকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে সাপোর্ট করেছেন। আমার উদ্যোক্তা হওয়ার পিছনে আমার আম্মুর অবদান অনেক। বন্ধু-বান্ধব যারা ছিলো তারা ও খুব উৎসাহ দিয়েছে।  আলহামদুলিল্লাহ সবাই আমাকে সব সময় সার্পোট দিয়েছেন।

উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন যখন দেখেছি তখন আমার জমানো সামান্য কিছু টাকা দিয়েই শুরু করি। এখন প্রতি মাসে ৩০-৪০ হাজার টাকা আয় করছি আলহামদুলিল্লাহ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান আর্থসামাজিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে একজন নারী শুধু চাকরির বাজারে নয়, বরং নিজে উদ্যোক্তা হয়ে অন্যেরও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারেন। ভবিষ্যতে নিজেকে নিয়ে অনেক বড় স্বপ্ন দেখি। নিজের একটি প্রতিষ্ঠান হবে এবং প্রতিষ্ঠানে অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিবো। বেকারত্ব দূর করার জন্য এই অবদানটুকু রাখতে চাই।

আই নিউজ/এইচএ 


আই নিউজ ভিডিও গ্যালারী 

হানিফ সংকেত যেভাবে কিংবদন্তি উপস্থাপক হলেন | Biography | hanif sanket life documentary | EYE NEWS

Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়