ঘরোয়া মসলায় শামি কাবাব রেসিপি | Shami Kabab Recipe

শামি কাবাব । ছবি লিখক

কোন ধরনের বাটাবাটির ঝামেলা ছাড়া তৈরি করুন শামি কাবাব রেসিপি, (Shami Kabab Recipe) যে উপকরণ দিয়ে তৈরি করবো এটা সবার ঘরে থাকে। আশা করছি আপনাদের কাছে রেসিপি ভালো লাগবে।

আই নিউজের আজকের আর্টিকেলে আপনাদেরকে তৈরি করে দেখাবো অসম্ভব মজাদার এবং খুবই সহজ আর ঘরোয়া রেসিপিতে একটা শামি কাবাবের রেসিপি। তো চলুন দেখে নেয়া যাক কিভাবে তৈরি করতে হয়।

উপকরণ........................ ....

গরুর মাংস।
বুটের ডাল।
আদা-রসুন বাটা।
এক চা চামচ পরিমাণ জিরার গুড়া।
দুই চা চামচ গরম মসলার গুঁড়া।
পরিমাণ মত লাল মরিচের গুড়া।
স্বাদমতো লবণ।
ওয়ান ফোর্থ কাপ পরিমাণ রান্নার রেগুলার তেল।
চারটা আস্ত এলাচ।
তিনকাপ পরিমাণ গরম পানি।

শামি কাবাব রেসিপি নির্দেশাবলী
প্রথম স্টেপ

আধা কেজি পরিমাণ গরুর মাংস। মাংসগুলোকে ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিন। আপনারা চাইলে এখানে খাসির মাংস ব্যবহার করতে পারবেন। এবার এই মাংসগুলোকে সরাসরি আমি একটা হাড়িতে ঢেলে নিচ্ছি। শামি কাবাবের জন্য আমাদের আরো লাগবে বুটের ডাল।
আধা কেজি মাংসের জন্য মেজারমেন্ট কাপের এক কাপ পরিমাণ বুটের ডাল সারা রাতের জন্য ভিজিয়ে রাখতে হবে। এবার ডালটাকে সরাসরি হাড়ির মধ্যে ঢেলে দিন।

দ্বিতী স্টেপ

এখন এর মধ্যে দিয়ে দিন চার টেবিল চামচ পরিমাণ আদা-রসুন বাটা। দিয়ে দিন এক চা চামচ পরিমাণ জিরার গুড়া। দিয়ে দিন গরম মসলার গুঁড়া ২ চা চামচ। ২ চা চামচ পরিমাণ মত লাল মরিচের গুড়া। স্বাদমতো লবণ। আরো দিয়ে দিন ওয়ান ফোর্থ কাপ পরিমাণ রান্নার রেগুলার তেল।
এবার সব কিছু খুব ভালোভাবে মেখে নিতে হবে। সবকিছু একসঙ্গে ভালোভাবে মেখে নেয়ার পরে সরাসরি হাড়িটাকে চুলায় বসিয়ে দিন। এখন এর মধ্যে ৪টা আস্ত এলাচ দিয়ে দিন। কোন গোটা মসলা ব্যবহার করতে হবে না।

তৃতীয় স্টেপ

এবার ঢাকনা দিয়ে ঢেকে মাঝারি আছে জাল করতে হবে। যাতে করে পানিটা উঠে আসে। মাংস থেকে কিন্তু পানিটা বের হয়ে যাওয়ার পরে সবকিছু একবার মিশিয়ে নিন এবং এই পানিটা টেনে গেলে মাংস এবং ডালটাকে ভালোভাবে কষিয়ে নিন। আবারো ঢাকনা দিয়ে অপেক্ষা করুন মাংসের পানিটা টেনে যাওয়া পর্যন্ত।
এবার ঢাকাটা খুলুন। দেখুন পানিটা কিন্তু টেনে গিয়েছে। এখন মাংসটাকে তেলের মধ্যে ভালোভাবে একটু কষিয়ে নিন। এতে করে কাবাবের টেস্ট খুব ভালো আসে এবং গ্রানটা ভালো আসে। একসঙ্গে খুব ভালোভাবে মিশিয়ে নেয়ার পরে এই মাংসগুলো সিদ্ধ হওয়ার জন্য এর মধ্যে মেজারমেন্ট কাপ এর ৩ কাপ পরিমাণ গরম পানি দিয়ে দিলাম এবং পানির পরিমাণ একটু বেশি ব্যবহার করতে হবে। কারণ মাংসটাকে নরম করে চুলা থেকে নামাতে হবে। এবার ঢাকনা দিয়ে ঢেকে একেবারে লো হিটে রেখে দিন। সম্পূর্ণ পানি টেনে মাংস ডাল একেবারে পারফেক্টলি সিদ্ধ হয়ে যাওয়া পর্যন্ত।

চতুর্থ স্টেপ

প্রায় এক ঘন্টার উপরে সবকিছু জ্বাল করে নিন এবং পানিটা সম্পূর্ণ টেনে গেলে দেখতেই পাবেন তেল টা উঠে এসেছে এবং একেবারেই পানিটা টেনে যখন মাখামাখা হয়ে যাবে ওই পর্যায়ে চুলার জ্বাল টা বন্ধ করে দিতে হবে। তবে গরম থাকা অবস্থায় এই মাংসটাকে ম্যাশ করে নিতে হবে। যেহেতু আমরা আলাদা করে ব্লেন্ড করবো না বা বেটে নিব না তাই ম্যাশ করার জন্য একটা পটেটো মেশার ব্যবহার করুন এবং এই কাজটা অবশ্যই গরম থাকা অবস্থায় করতে হবে। আপনারা চাইলে ডাল ঘূর্ণি ও ব্যবহার করতে পারেন। অথবা যাদের কাছে পাটাপোতা নাই তারা নরমাল বেলুন যেটা দিয়ে আমরা রুটি তৈরি করি সেটার মধ্যেও হালকা একটু বেটে নিলে এটা দেখবেন সুন্দর সফট হয়ে যাবে। আপনার কাছে মনে হতে পারে যে কাজটা আসলে সম্ভব না কিন্তু আপনারা জাস্ট এই মেশার দিয়ে এরকম মাস করতে থাকবেন আস্তে আস্তে দেখবেন কালারটাও চেঞ্জ হতে থাকবে। এই কাজটা করতে হাত দিয়ে এভাবে ১৫ মিনিট সময় লেগবে। খুব সহজে এভাবে পটেটো মেশার দিয়ে ম্যাশ করা যায়। পাডা থাকলে গরম অবস্থায় খুবই সহজে বেটে নেয়া যায়। রুটি বেলা করে নিতে পারবেন। যার জন্য যেটা সুবিধা সেভাবেই করে নিতে পারবেন। একটু ছামা ছামা থাকবে বাট এই টেক্সট টা থাকলে কিন্তু এখানে শামি কাবাবটা খেতে বেশি মজার হয়ে থাকে।

পঞ্চম স্টেপ

ম্যাচ করা মাংস আর ডাল আমি একটা মিক্সিং বোলের মধ্যে ঢেলে সম্পূর্ণ ঠান্ডা করে নিয়েছি। ঠান্ডা করে নেয়ার পরে এর মধ্যে দিয়ে দিচ্ছি আধাকাপ পরিমাণ পেঁয়াজ, বেরেস্তা দিয়ে দিচ্ছে আধা কাপ পরিমাণ, দিয়ে দিচ্ছি পেঁয়াজ খুব মিহি করে কুচি করে নেয়া। এবার দিয়ে দিচ্ছি এক টেবিল চামচ পরিমাণ কাঁচা মরিচ কুচি। আর দিয়ে দিচ্ছি ২ টেবিল চামচ এর মত ধনিয়া পাতা কুচি। এবার এর মধ্যে আমি দিয়ে দিচ্ছি এক চা চামচ পরিমাণ গরম মসলার গুড়া। আপনারা এখানে লবনটা টেস্ট করে দেখতে পারেন যদি লবণ ঠিক থাকে তাহলে আর দেয়ার দরকার নাই।
এখন এর মধ্যে একটা ডিম দিয়ে প্রথমে মেখে নিতে হবে। ডিম গুলো একবারে না দিয়ে একটা একটা করে দিবেন আপনার যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু ডিম ব্যবহার করলেই হবে। এখানে ডিমের ক্ষেত্রে কোন ধরা নিয়ম নেই। আর কোন কারনে যদি মাংসের এই ডোটা নরম হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে আপনারা এটাকে টাইট করার জন্য টোস্ট বিস্কিটের গুড়া ব্যবহার করতে পারব। তবে চেষ্টা করবেন একটু শুকিয়ে নেয়ার পরে এটাকে ম্যাশ করে নিতে বা বেটে নিতে। হাতের সাহায্যে খুব ভালোভাবে চটকে চটকে মিশিয়ে নিতে হবে।

ষষ্ঠ স্টেপ

কাবাব তৈরি করার সময় খেয়াল রাখবেন যেন এই বড়া তৈরি করার সময় সাইডে ফেটে না যায়। ফেটে গেলে বুঝবেন এখানে আরো একটা ডিমের প্রয়োজন। এটা একদম সফট থাকবে এবং কাবাবের সাইড ফাটবে না। তা না হলে ভাজার পরে অতিরিক্ত শক্ত হয়ে যাবে। এভাবেই আমি সবগুলো কাবাব তৈরি করে নিব আমার সবগুলো কাবাব তৈরি করে নেয়া হয়ে গিয়েছে আপনারা চাইলে ডিপ ফ্রিজে কাবাব গুলো সংরক্ষণ করে খেতে পারবেন তিন মাস পর্যন্ত।

সপ্তম স্টেপ

কাবাবগুলো ভাজার জন্য চুলা একটা হাড়িতে বেশ কিছুটা তেল গরম করুন। তেলটা প্রথমে হাই হিটে ভালোভাবে গরম করে নিতে হবে। ভালোভাবে গরম করে নিয়ে তেলের মধ্যে একটা করে কাবাব গুলো ছাড়তে হবে। এবার কাবাবগুলোকে মাঝারি আছে ভেজে নিন। যখন একটা সেট খুব ভালোভাবে হয়ে যাবে ওই পর্যায়ে কাবাব গুলো উল্টে দিন এবং কাবাব গুলো ভাজার সময় খেয়াল রাখবেন একসঙ্গে অতিরিক্ত গাদাগাদি করে কাবাব না দিয়ে অল্প অল্প করে ভাজার জন্য। এতে করে কাবাব গুলো ভেঙে যাওয়ার কোন ভয় থাকবে না। এইতো এরই মাঝে তৈরি হয়ে গেল আমাদের শামি কাবাব।

একদমই ঘরোয়া উপকরণে খুবই সাধারন একটা রেসিপিতে সাধারণ পদ্ধতিতে তৈরি করা। আপনারা হবহু রেসিপি ফলো করে তৈরি করে দেখতে পারেন। এটা খেতে খুবই মজার হয়ে থাকে । আপনারা ট্রাই করে আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন কেমন হয়েছে।

আই নিউজ/আর

আরো পড়ুন