হেলাল আহমেদ, আই নিউজ
চাকরি নাকি ব্যবসা কোনটা ভালো?
আমাদের সমাজে এখন এমন একটা সময়ে আমরা দাঁড়িয়ে যখন আমাদের সামনে পেশা নির্ধারণের ক্ষেত্রে দুইটি অপশন এসে দাঁড়াচ্ছে। চাকরি ভালো নাকি ব্যবসা ভালো? এই সহজ সরল প্রশ্নের উত্তরটা বেশ জটিল। কেননা উত্তরটি শুধুমাত্র অর্থখাত জনিত নয় সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি দ্বারা প্রভাবিতও। তাই চাকরি ভালো না ব্যবসা ভালো এর উত্তরে একবাক্যে কিছু বলার উপায় নেই। পারতপক্ষে একটির চাইতে অন্যটিকে ভালো মনে হলেও একটু পরেই এই থিওরি হোঁচট খাবে।
আই নিউজের আজকের এই লেখায় আলোচনা করবো চাকরি নাকি ব্যবসা ভালো তা নিয়ে। যদিও এ বিষয়ে আলোচনার ক্ষেত্রে চলে আসবে আমাদের সামাজিক অনুষঙ্গ ও সমস্যাদিও। কেননা এই দুটি একটি উভয়টি দ্বারা প্রভাবিত।
প্রথমেই ধরা যাক আপনি একজন ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী। ভাঙ্গারী বিক্রি করে আপনার মাসিক আয় হয় ৫০-৬০ হাজার টাকা। অন্যদিকে একজন প্রশাসনের বিসিএস ক্যাডার; যিনি হয়তো বেতন পান ৩৫-৪০ হাজার টাকা। এখানে কোনটি ভালো? নিঃসন্দেহে উত্তর আসবে ভাঙ্গারী ব্যবসায়ীর উপার্জন বেশি এবং ভালো। কিন্তু যদি বলি সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে আপনি কাকে গ্রহণ করবেন? তখন পদ-মর্যাদায় ওই কমবেতনভুক্ত সরকারি ক্যাডারের নামটিই আসবে। এখানেই চাকরি ভালো না ব্যবসা ভালোর উত্তর রয়েছে।
দেখুন প্রথম ব্যক্তি যিনি ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী তিনি ভাঙ্গারী বিক্রি করে মাসিক ৫০-৬০ হাজার টাকা উপার্জন করলেও সামাজিক দিক থেকে কমবেতন পাওয়া বিসিএস ক্যাডারের মর্যাদা বেশি। এবং একজন লোক তাঁর মেয়েকে ওই ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী নয় সামাজিক কারণে হলেও বিসিএস ক্যাডারের কাছে বিয়ে দিতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে। তাঁদের কাছে সামাজিক মর্যাদা টাকার চাইতে বেশি। তাঁদের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ের চাইতে চাকরিই ভালো। কারণ, তারা সমাজের সকল কাজকে সমানভাবে দেখেন না। তাঁরা কাজ অনুযায়ী মানুষকে মূল্যায়ন করেন।
আসলে আমাদের দরকার সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন। ইউরোপ আমেরকিায় কোন কাজ ছোট বড় নেই। কেউ বড় নয় কেউ ছোট নয়। একজন বিসিএস ক্যাডারের পৃথিবীতে বেঁচে থাকার অধিকার যতটুকু একজন বিকাশ এজেন্টের বেচে থাকার অধিকার ততটুকু৷ শুধু স্থান আর কালের বিভ্রাট।
চাকুরি থেকে ব্যবসা কোন অংশেই কম নয়। ব্যবসা করলে সন্তানও ছোটবেলা থেকে ব্যবসায় সীমিত পরিমানে অভিজ্ঞতা লাভ করে। পিতা মারা গেলে উত্তরাধিকার সূত্রে দোকানটি সন্তান পেয়ে যায়। সন্তান যদি পড়াশুনার কারণে কখনো দোকানে নাও বসে থাকে তবুও পারিবারিক বিভিন্ন আলাপ আলোচনার মাঝে ব্যবসা সম্পর্কে বেশ কিছু অভিজ্ঞতা হয়ে যায়
কিন্তু চাকুরির মাঝে এই সুযোগ নেই।তাই আমি মনে করি চাকুরিজীবী সন্তানদের জন্যে পোষ্য কোটা চালু করা উচিত। তাহলে দেশে বেকারের সংখ্যা কমবে।
এবার হয়তো অনেকে মাইন্ড করলেন যে পোষ্য কোটা? নিজেরা চাকুরি করেছে আবার সন্তানকেও চাকুরীতে ঢুকাবে তাহলে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মানুষ কি দোষ করলো? হ্যাঁ। ব্যবসায়ী সমাজের একটি ছেলে সরকারি চাকুরি না পেলেও সে বেকার হচ্ছে না। কিন্তু সরকারি চাকুরিজীবির ছেলে চাকুরি না পেলে সেই ছেলেটি বেকার হওয়ার সম্ভবনা ব্যবসায়ীর ছেলের চেয়ে ১০ গুন বেশি।
তাহলে মূল কথা দাঁড়াচ্ছে পোষ্য কোটা চালু করলে দুজনের কেউই বেকার হচ্ছে না। একজন ব্যবসায় অভ্যস্ত। আরেকজন চাকুরি। তাহলে সমাজে দূর্নীতিও কমে আসতে পারে।
চাকুরি ব্যবসা উভয়েরই সুবিধা অসুবিধা আছে। ব্যবসায় অনেক কম্পিটিশন করে টিকে থাকতে হয়। সমাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করতে হবে। ব্যবসায়ীদের সম্মান দেওয়া শিখতে হবে।
আমেরিকা বা কানাডা প্রবাসী লিখে সার্চ দেন। ওদের কিছু ভিডিও দেখেন। আপনি ইলেকট্রিক শক খাবেন যখন অধিকাংশ ভিডিওটি ওরা বলে- কানাডায় কাজ ছোট বড় বলে কিছু নাই। আপনি যত ছোট কাজই করেন ওরা সমান মর্যাদা দেয়।
তাই প্রশ্নটি আসলে কখনোই এটি হওয়া উচিত নয় ব্যবসা নাকি চাকরি ভালো। মানুষ, সমাজ, পরিবেশ ভেদে দুটোই সমান গুরুত্বপূর্ণ। যিনি ব্যবসা করেন তিনি চাকরিজীবীদের কাছেই তাঁর পণ্য বিক্রি করেন। আবার যিনি চাকরি করেন তিনি মাসে মাসে আয় করে সেই ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেই নিজের প্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয় করেন। এখানে একজন আরেকজন দ্বারা প্রভাবিত এবং একে অন্যের উপর নির্ভরশীলও। পেশাভিত্তিক বিভেদ মানুষের সৃষ্ট।
- ছেলেদের ইসলামিক আনকমন নাম অর্থসহ শিশুর নাম
- ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম ২০২২
- মেয়েদের ইসলামিক নাম ২০২৩
- সুন্দর বাচ্চা পিক ডাউনলোড
- মাথা ন্যাড়া করার এই অপকারিতা জানেন কি?
- শুভ সকাল রোমান্টিক মেসেজ | শুভ সকাল স্ট্যাটাস
- ছেলেদের কষ্টের স্ট্যাটাস বাংলা
- ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
- কাউনের চালের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
- অনেকেই জানেন না, সিগারেটের বাংলা অর্থ কী?