আই নিউজ প্রতিবেদক
সফর মাস কী, কেন, কীভাবে?
হিজরি সনের দ্বিতীয় মাস সফর শুরু হচ্ছে। মহররমের জোড়া মাস সফর। জাহেলি যুগে মহররম ও সফর– এ দুই মাসের নাম ছিল ‘আস সফরুল আউয়াল’ ও ‘আস সফরুস সানি’, অর্থাৎ ‘প্রথম সফর’ ও ‘দ্বিতীয় সফর’। বছরের প্রথম মাস তথা ‘আস সফরুল আউয়াল’ যা বর্তমানে ‘মুহাররামুল হারাম’।
আরব উপত্যকায় তখন সফরের জোড়া মাসে যুদ্ধ-বিগ্রহ নিষিদ্ধ ছিল। যেকারণে এসময়টাতে যুদ্ধে জড়াতেন না কোনো পক্ষের আরব সৈনিক। ইসলাম ধর্মের সফর মাসের গুরুত্ব একেকসময় একেকভাবে এসেছে। তবে শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (স.) এর সময় সফর মাসের চূড়ান্ত গুরুত্ব ও ফজিলত নির্ধারিত হয় বলা যায়।
সফর মাস কী কেন, কীভাবে?
সফর মাসে যুদ্ধ-বিগ্রহ তখনও নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু আরবের লোকজন নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য তাদের সুবিধামতো অনৈতিকভাবে এ মাস দুটি আগে-পরে নিয়ে যেত। তাই পরবর্তী সময়ে তাদের এ অপকৌশল নিরসনে প্রথম মাসের নামকরণ করা হয় মহররম (নিষিদ্ধ); সঙ্গে সঙ্গে দ্বিতীয় মাসের বিশেষণ ‘আস সানি’ বা ‘দ্বিতীয়’ শব্দটিও অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে।
ফলে এ দুই মাসের নাম পরিবর্তিত হয়ে ‘মহররম’ ও ‘সফর’ রূপ লাভ করে। এ দুই মাস মিলে একই ঋতু; সুতরাং সফর মাস মহররম মাসের সমান গুরুত্ব ও তাৎপর্য বহন করে।
সময়টা সঙ্কট আর বিবর্ণতাঁর
আরবি সফর মাস যে একই ঋতুর সে কথা আমরা জেনেছি। কিন্তু কেমন ছিল সে ঋতুর অবস্থা? এর ব্যাখ্যা বিশ্লেষণে মনোযোগ দিলে জানা যায়, মূলত আরবি সফর মাসটি আরববাসীদের জন্য ছিল সঙ্কট আর বিবর্ণ সময়ের মাস। এই সময় রুক্ষ্ম আরবের আবহাওয়া যেন আরো রুক্ষ্ম এবং নির্দয় হয়ে ওঠতো।
তীব্র তাপদাহে এই সময়টায় আরবের ফসলি জমিগুলো শুষ্কতায় পরিপূর্ণ হয়ে ওঠতে। স্বাভাবিক রং হারিয়ে আরব যেন বিবর্ণ দশার এক জনপদে পরিণত হতো এই সময়। যেকারণে এই সফর মাসকে বিবর্ণ সময়ের মাস বলেও ডাকতেন আরব উপত্যকার বাসিন্দারা। তারা বলত, ‘আস সাফারুল মুসাফফার’ অর্থাৎ ‘বিবর্ণ সফর মাস’।
সফর মাস নিয়ে কুসংস্কার
ইসলামপূর্ব জাহেলি যুগে সফর মাস ঘিরে ছিল কুসংস্কারের ছড়াছড়ি। মানুষ মনে করত, যত অশুভ, অকল্যাণ, বিপদ-আপদ– সব নেমে আসে এই মাসে। এই মাসে বিয়ে শুভ হয় না; ব্যবসায় মন্দা যায়; অন্যত্র যাত্রা অমঙ্গল হয়।
এ ছাড়া শিষ্ট-অনিষ্ট, সৎ-অসৎ, রোগ সংক্রমণ এবং আঞ্চলিক ভাষায় ছাঁৎ-কুছাঁৎ প্রভৃতি কুধারণায় বিশ্বাসী ছিল তারা।
ইসলাম এসব কুসংস্কারের অবসান ঘটিয়েছে। নবী মুহাম্মদ (স.) আরবের শাসক হয়ে ওঠলেন তখন তিনি সবাইকে বললেন সফর মাস বিবর্ণ মাস নয় বরং এটি আমাদের জন্য আশার মাস, আলো বয়ে আনার মাস। সেই প্রেক্ষিতে আল্লাহ তায়ালা সুরা আরাফের ১৩১ নম্বর আয়াতে এরশাদ করেন, ‘এর পর যখন শুভদিন ফিরে আসে, তখন তারা বলতে আরম্ভ করে, এটাই আমাদের জন্য উপযোগী। আর যদি অকল্যাণ এসে উপস্থিত হয়, তবে তাতে মুসা এবং তার সঙ্গীদের অলক্ষণ বলে অভিহিত করে...।’
সফর মাসে বিয়ে করা অশুভ?
আল্লাহ তায়ালা এ আয়াতে কুলক্ষণ, অশুভ সব বিষয়ের নিন্দা করেছেন এবং এসব অসার ধারণা যে সব যুগেই ছিল– তারও প্রমাণ মেলে আয়াত থেকে। রাসুলে পাক (সা.) বলেন, ‘সংক্রামক ব্যাধি, কুলক্ষণ, অনাহারে পেট কামড়ানো, পোকা ও হামাহ– এসবের কোনো অস্তিত্ব নেই।’ (মুসলিম)
হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, ‘তোমরা সময়কে মন্দ বলো না। কারণ আমিই সময়।’ রাসুলে পাক (সা.) এরশাদ করেন, ‘কোনো অশুভ-অযাত্রা নেই; কোনো ভূতপ্রেত বা অতৃপ্ত আত্মার অশুভ ক্ষমতা নেই এবং সফর মাসের অশুভ কিছুর কোনো অস্তিত্ব নেই।’ (বুখারি)
- ছেলেদের ইসলামিক আনকমন নাম অর্থসহ শিশুর নাম
- ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম ২০২২
- মেয়েদের ইসলামিক নাম ২০২৩
- সুন্দর বাচ্চা পিক ডাউনলোড
- মাথা ন্যাড়া করার এই অপকারিতা জানেন কি?
- শুভ সকাল রোমান্টিক মেসেজ | শুভ সকাল স্ট্যাটাস
- ছেলেদের কষ্টের স্ট্যাটাস বাংলা
- ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
- কাউনের চালের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
- অনেকেই জানেন না, সিগারেটের বাংলা অর্থ কী?