মো. রওশান উজ্জামান রনি
আপডেট: ২১:৪৫, ২৪ আগস্ট ২০২৩
চট্রগ্রামের ঐতিহ্যবাহী গরুর মাংসের কালা ভুনা রেসিপি।
গরুর মাংসের কালা ভুনা । ছবি লিখক
চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী “কালা ভুনা” নামটা নিশ্চয়ই শুনেছেন। এই কালা ভুনার নাম শুনলে যেন লোভই সামলানো যায় না। বাঙালি উৎসবে কালা ভুনা হতে পারে ঘরোয়া আয়োজনে হিট রেসিপি। গরুর মাংসের কালা ভুনা রেসিপি শুধু যে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী খাবার তা কিন্তু না বরং এটা আমাদের দেশের অনেক জনপ্রিয় মজাদার একটি রেসিপি।
আই নিউজের আজকের রেসিপিতে ঘরে থাকা উপকরণ দিয়ে খুব সহজে গরুর মাংসের কালা ভুনা তৈরি করে দেখাবো। চলুন দেখে নেওয়া যাক কিভাবে তৈরি করবেন ঐতিহ্যবাহী কালা ভুনা।
যেভাবে তৈরি করবেন গরুর মাংসের কালা ভুনা রেসিপি
উপকরণ ;
- দুই কেজি গরুর মাংস
- ১০-১২টি আস্ত গোলমরিচ
- এক চা চামচ রাঁধুনি জিরা
- দুই চা চামচ কালোজিরা
- অর্ধেকটা জয়ত্রী
- ৭-৮ টি লবঙ্গ
- কোয়ার্টার চা চামচ দারচিনি গুঁড়ো
- আধা কাপ পরিমাণ পেঁয়াজ বাটা
- দুই কাপ পরিমাণ পেঁয়াজ কুচি
- দেরটেবিল চামচ লাল মরিচ
- দুই টেবিল চামচ সর্ষের তেল
- এক টেবিল চামচ আদা বাটা
- এক টেবিল চামচ রসুন বাটা
- এক টেবিল চামচ ধনে গুড়া
- পাঁচটা আস্ত শুকনো মরিচ
- দুই টেবিল চামচ সয়া সস
- এক চা চামচ জিরা গুড়া
- এক টেবিল চামচ চিনি
- স্বাদ অনুযায়ী লবণ
- একটা তারা মৌরি
- দুটো তেজপাতা
- চারটা এলাচ
কালা ভুনা রেসিপি তৈরির পদ্ধতি ;
আজকে আমি দুই কেজি গরুর মাংসের কালা ভুনা করে দেখাবো। তার জন্য একটা স্পেশাল মসলা তৈরি করে নিচ্ছি। যেখানে ৭-৮ টি লবঙ্গ ১০-১২টি গোলমরিচ আস্ত এবং সেই সাথে অর্ধেকটা জয়ত্রী, এক চা চামচ রাঁধুনি জিরা এবং দুই চা চামচ কালোজিরা একসাথে ব্লেন্ডারে দিয়ে খুব মিহি করে গুঁড়ো করে নিতে হবে।
কালা ভুনা তৈরি করতে এখানে হাঁড় সহ দুই কেজি গরুর মাংস পানি দিয়ে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিয়েছি। যে হাঁড়িতে রান্না করব সেটাতে নিয়ে এক টেবিল চামচ আদা বাটা, এক টেবিল চামচ রসুন বাটা, এক টেবিল চামচ ধনে গুড়া, এক চা চামচ জিরা গুড়া, চারটা এলাচ, একটা তারা মৌরি, দুটো তেজপাতা এবং সেই সাথে আরও দিচ্ছি কোয়ার্টার চা চামচ দারচিনি গুঁড়ো এবং আধা কাপ পরিমাণ পেঁয়াজ বাটা সেই সাথে ঝাল হবার জন্য দেরটেবিল চামচ লাল মরিচ। আর যেই মসলাটা গুঁড়ো করে রেখেছিলাম সেই পুরো মশলাটা। এখানে প্রায় দেড় টেবিল চামচের মত মসলা হয়েছে। এক টেবিল চামচ চিনি দিয়ে এবং সেই সাথে স্বাদ অনুযায়ী লবণ, দুই টেবিল চামচ সর্ষের তেল এবং দুই টেবিল চামচ সয়া সস দিয়ে দিয়েছি।
সব মসলা মাংসের সাথে হাত দিয়ে খুব ভালো করে মেখে নিবো। লবণটা কিন্তু আন্দাজ করে দিতে হবে যেহেতু যথেষ্ট পরিমাণে লবণ থাকে। তাই একটু কম দিয়ে পরবর্তীতে দেখে নিয়ে আবার লাগলে একটু দিয়ে দিতে পারেন। মসলা ভালো করে মাংসে মিশিয়ে ঠিক আধা কাপ পরিমাণ পানি দিলাম। এর থেকে বেশি পানি প্রয়োজন নেই এই অবস্থায়।
চুলায় চাপিয়ে দিয়েছি এবং চুলার আঁচটা মিডিয়াম এবং হাই এর মাঝামাঝি রেখে ঢাকনা দিয়ে থেকে রান্না করবো প্রায় ৪৫ মিনিটের মত। এই সময়টাতে মাঝে মাঝে একটু নাড়াচাড়াও করে দিতে হবে। যাতে নিচে থেকে তলানিতে পোড়া লেগে না যায়। যেহেতু প্রথম পর্যায়ে খুব বেশি তেল দেয়া হয়নি সেই ক্ষেত্রে নিচ থেকে পোড়া লাগার সম্ভাবনাটা কিন্তু একটু বেশি থাকবে। তাই আপনারা প্রায় একটু খেয়াল করবেন। আবারো ঢাকনা দিয়ে থেকে চুলার আঁচটা কমিয়ে দিয়ে প্রায় ৩০ মিনিটের মত সেদ্ধ করলাম। অথবা যতক্ষণে আপনাদের মাংসটা সেদ্ধ হয়ে যায়। এটা ডিপেন্ড করবে আপনাদের মাংসের পরিমাণ এবং কোয়ালিটির উপরে। অনেক সময় একটু বেশি লাগতে পারে বা কম লাগতে পারে।
তবে সম্পূর্ণ যখন সেদ্ধ হয়ে যাবে এবং কোষে আসবে তখন চুলা থেকে নামিয়ে রাখতে হবে। অন্য আরেকটা করাই বা আরেকটা হাঁড়িতে এক কাপ পরিমাণ রান্নার তেল নিয়ে নিলাম। আপনারা চাইলে কিন্তু এই তেলটা সরষের তেলও নিতে পারেন। পাঁচটা শুকনো মরিচ আস্ত দিয়ে দিলাম মরিচটা ভাটতে ভাজতে একটু লালচে বাদামী হয়ে আসলে এর মধ্যে দুই কাপ পরিমাণ মিহি করে কুচি করা পেঁয়াজ দিয়ে দিচ্ছি। পেঁয়াজগুলোকে এখন ভেজে নেব বাদামী হওয়া পর্যন্ত। পেঁয়াজ ভাতে ভাজতে যখন সুন্দর বাদামী রঙিন হয়ে যাবে তখন এর মধ্যে আগে থেকে রান্না করা মাংসটা দিয়ে দিচ্ছি। চুলার আঁচটা কিন্তু এই পর্যায়ে একটু কমিয়ে রাখবেন। তা না হলে নিচ থেকে পোড়া লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। সবগুলো মাংস নিয়ে এখন এটাকে পাঁচ মিনিটের মত একটু কষিয়ে নেব। চুলার আঁচটা কিন্তু কম বা মাঝারি থাকবে। এখন এর মধ্যে আধা কাপ পরিমাণ পানি দিয়ে দিয়ে দিচ্ছি। এই আধা কাপ পানিটা দেয়া কিন্তু খুবই জরুরী। তা না হলে দেখা যাবে যে মাংসটা উপর থেকে কালছে হয়ে গেছে এবং ভেতরটা কিন্তু ভালো মতো রান্না হবে না এবং ভেতরে সেই সুন্দর তেলতেলে কালো রংটা হবে না। এই পানিটা দেবার পরে চুলার আঁচটা মিডিয়াম এবং হাই এর মাঝামাঝি রেখে অনবরত নেড়েচেড়ে এটাকে রান্না করতে হবে।
এই রান্নাটা কষানো অবস্থায় হবে ভাজা ভাজা কিন্তু হবে না। মানে কোষে যখন পানসে ঝোলটা শুকিয়ে আসবে এবং তেলটা উপরে উঠে আসবে তখনই এটা হয়ে গেছে এবং চুলাটা বন্ধ করে দেবেন। যখন এটা ঠান্ডা হয়ে তাপমাত্রা টা একটু কমে আসবে তখন দেখবেন সুন্দর কালচে রং হয়েছে।
হয়ে গেল মজাদার গরুর মাংসের কালা ভুনা। আমি চেষ্টা করেছি আপনাদের সাথে সহজভাবে রেসিপি টা শিখিয়ে দেওয়ার জন্য। আশা করি আপনাদের কাছে সহজ লেগেছে। কারণ রান্নাত সহজই হওয়া উচিত। এখন এর সাথে কাচা পেয়াজ,মরিচ,শশা একসাথে মিশিয়ে সালাত বানিয়ে পরিবেশন করুন। সাথে এক টুকরো দেশী কাগজী লেবু রাখলে স্বাদটা বেড়ে যাবে। রান্নাটা এতটাই মজার হয়েছে যে আপনারা খেয়ে না দেখলে আন্দাজই করতে পারবেন না। আজকের রেসিপিতে কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করবেন।
আই নিউজ/আর
- ছেলেদের ইসলামিক আনকমন নাম অর্থসহ শিশুর নাম
- ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম ২০২২
- মেয়েদের ইসলামিক নাম ২০২৩
- সুন্দর বাচ্চা পিক ডাউনলোড
- মাথা ন্যাড়া করার এই অপকারিতা জানেন কি?
- শুভ সকাল রোমান্টিক মেসেজ | শুভ সকাল স্ট্যাটাস
- ছেলেদের কষ্টের স্ট্যাটাস বাংলা
- ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
- কাউনের চালের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
- অনেকেই জানেন না, সিগারেটের বাংলা অর্থ কী?