শিল্প ও সাহিত্য ডেস্ক
আজ সৈয়দ শামসুল হকের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী
সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক
আজ সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী। আবহমান বাংলা ও বাঙালির অন্যতম সেরা এই ভাষাশিল্পী ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এর আগে তিনি প্রায় ৪ মাস লন্ডনে ফুসফুসের ক্যান্সার রোগে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
কবিতা, উপন্যাস, নাটক, ছোটগল্প, কাব্যনাট্য, চিত্রনাট্য, গান, প্রবন্ধ, অনুবাদসহ সাহিত্যের প্রায় সকল ক্ষেত্রে সাবলীল লেখনী-ক্ষমতার জন্য সৈয়দ শামসুল হককে ‘সব্যসাচী লেখক’ নামে অভিহিত করা হয়।
তার লেখকজীবন প্রায় ৬২ বছরব্যাপী বিস্তৃত। এই বিশাল সময় ধরে সৈয়দ হক নিজ মেধা, মনন ও সৃজনীশক্তির মাধ্যমে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছেন এবং নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন সাহিত্যের এক তুলনারহিত অবস্থানে।
১৯৩৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর কুড়িগ্রাম জেলায় সৈয়দ শামসুল হকের জন্ম। কবিতা রচনার মধ্য দিয়ে তার সাহিত্য জীবনের শুরু। ১৯৫১ সালে সাহিত্য জগতে পা রাখার দিন থেকে মৃত্যুপূর্ব পর্যন্ত থামেনি সৈয়দ শামসুল হকের কলম।
১৮ বছর বয়সে প্রকাশিত হয় তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘একদা এক রাজ্যে’। এর পর একটানা ছয় দশক ধারাবাহিকভাবে তার তিন শতাধিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।
তার প্রথম লেখা একটি গল্প- যা ১৯৫১ সালে ফজলে লোহানী সম্পাদিত ‘অগত্যা’ নামে একটি ম্যাগাজিনে ছাপা হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালে তার প্রথম উপন্যাস ‘দেয়ালের দেশ’ প্রকাশিত হয় ১৯৫৬ সালে।
সৈয়দ শামসুল হকের উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে- ‘এক মহিলার ছবি’, ‘অনুপম দিন’, ‘সীমানা ছাড়িয়ে’, ‘নীল দংশন’, ‘স্মৃতিমেধ’, ‘মৃগয়া’, ‘এক যুবকের ছায়াপথ’, ‘বনবালা কিছু টাকা ধার নিয়েছিল’, ‘ত্রাহি’, ‘তুমি সেই তরবারি’, ‘কয়েকটি মানুষের সোনালী যৌবন’, ‘নির্বাসিতা’, ‘খেলারাম খেলে যা’, ‘মেঘ ও মেশিন’, ‘ইহা মানুষ’, ‘বালিকার চন্দ্রযান’, ‘আয়না বিবির পালা’ প্রভৃতি।
সৈয়দ হকের লেখা কাব্যগ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘বৈশাখে রচিত পঙ্ক্তিমালা’, ‘বিরতিহীন উৎসব’, ‘প্রতিধ্বনিগণ’, ‘পরানের গহীন ভিতর’ উল্লেখযোগ্য।
প্রায় ৬২ বছরের লেখকজীবনে বাংলা মঞ্চ নাটকেও শক্তিমান এক পুরুষ হিসেবে নিজের লেখনীর প্রমাণ দিয়েছেন সৈয়দ হক। তাঁর লেখা নাটকগুলোর মধ্যে ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’ এবং ‘নূরলদীনের সারা জীবন’ সমকালীন অভিপ্রায়ের এক দৃপ্ত প্রকাশ। সৈয়দ হকের লেখা অন্যান্য নাটকের মধ্যে রয়েছে ‘গণনায়ক’, ‘ঈর্ষা’, ‘নারীগণ’, ‘উত্তরবংশ’ ইত্যাদি।
১৯৬৬ সালে মাত্র ২৯ বছর বয়সে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন তিনি। বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদানের জন্য তাকে ১৯৮৪ সালে একুশে পদক এবং ২০০০ সালে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। এছাড়াও সাহিত্যে তিনি আদমজী সাহিত্য পুরস্কার, আলাওল স্বর্ণপদক, আলাওল সাহিত্য পুরস্কার, কবিতালাপ পুরস্কার, লেখিকা সংঘ সাহিত্য পদক, ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন।
প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে সৈয়দ হকের জন্মস্থান কুড়িগ্রামে আজ তার সমাধিতে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের শ্রদ্ধাজ্ঞাপনসহ আলোচনা সভা, র্যালি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
আইনিউজ/এসডিপি
- কৃপার শাস্ত্রের অর্থভেদ: বাঙলা ভাষার প্রথম বই
- জীবনানন্দ দাশের কবিতা: বৃক্ষ-পুষ্প-গুল্ম-লতা (শেষ পর্ব)
- জীবনানন্দ দাশের কবিতার পাখিরা
- দুঃখের নাগর কবি হেলাল হাফিজ
- সমরেশ মজুমদার এবং ২টি কবিতা
- মাকে নিয়ে লিখা বিখ্যাত পঞ্চকবির কবিতা
- সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ৯ দিনব্যাপী অমর একুশের অনুষ্ঠানমালা
- হ্যারিসন রোডের আলো আঁধারি
- পিকলু প্রিয়’র ‘কবিতা যোনি’
- গল্পে গল্পে মহাকাশ
মেজোমামা খুব বোকা