নিজস্ব প্রতিবেদক
আজ কবি শামসুর রাহমানের জন্মদিন
কবি শামসুর রহমান
প্রায় অর্ধশতাব্দীকাল ধরে তিনি লিখে গেছেন নানা কালজয়ী কবিতা। বাংলাদেশের জন্মকে ঘিরে লেখা ‘তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা’ কিংবা ‘স্বাধীনতা তুমি’র মতো অসংখ্য অনবদ্য কবিতা যার কলম থেকে বেরিয়েছিল, তিনি কবি শামসুর রাহমান। আধুনিক বাংলা কবিতার অন্যতম রূপকার। স্বাধীনতার কবিখ্যাত শামসুর রাহমানের আজ ৯২তম জন্মদিন।
১৯২৯ সালের ২৩ অক্টোবর পুরান ঢাকার মাহুৎটুলীর নানাবাড়িতে বরেণ্য এই কবির জন্ম। বাবা মুখলেসুর রহমান চৌধুরী ও মা আমেনা বেগম। ১৩ ভাই-বোনের মধ্যে কবি ছিলেন চতুর্থ। পুরান ঢাকার পোগোজ ইংলিশ হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন ১৯৪৫ সালে। ১৯৪৭ সালে ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজী বিষয়ে ভর্তি হন এবং তিন বছর নিয়মিত ক্লাসও করেন সেখানে। শেষ পর্যন্ত আর মূল পরীক্ষা দেননি। পাসকোর্সে বিএ পাস করে তিনি ইংরেজী সাহিত্যে এম এ (প্রিলিমিনারি) পরীক্ষায় দ্বিতীয় বিভাগে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করলেও শেষ পর্বের পরীক্ষায় অংশ নেননি।
জীবনানন্দ পরবর্তী বাংলা কবিতাকে আধুনিকতার পথে ধাবিত করায় তার ভূমিকাটি একেবারেই স্বতন্ত্র। বিশ শতকের তিরিশের দশকের পাঁচ মহান কবির পর তিনিই আধুনিক বাংলা কবিতার প্রধান পুরুষ হিসেবে প্রসিদ্ধ। ষাটের দশকে গোড়ার দিকেই কবি প্রতিভার বিচ্ছুরণে আলোকিত করেন সাহিত্যের ভুবন।
সাম্প্রদায়িকতা ও স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে যেমন কবিতার ভাষায় প্রতিবাদ করেছেন, তেমনি মুক্তিযুদ্ধকালে স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষায় উজ্জীবিত মানুষকে প্রেরণা দিয়েছেন কবিতার সৃষ্টিশীলতায়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ওপর লিখিত তার দুটি কবিতা ‘স্বাধীনতা তুমি’ ও ‘তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা’ একইসঙ্গে অনুপ্রেরণাদায়ী ও ব্যাপকভাবে সমাদৃত।
পত্রপত্রিকায় লেখা তার চিত্রকল্পময় কবিতার সূত্র ধরে প্রথম গ্রন্থ প্রকাশের আগেই এপার-বাংলার কবিতাপ্রেমীদের নজর কাড়েন শামসুর রাহমান। ১৯৬০ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘প্রথম গান দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে’। কবির নিমগ্ন অন্তর্গত বোধ ও ভাবনার জগতের অপূর্ব রূপায়ন ছিল এই কাব্যগ্রন্থ।
এ ছাড়াও ষাটের দশকে প্রকাশিত কবির উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলো হলো রৌদ্র করোটিতে, বিধ্বস্ত নীলিমা, নিরালোকে দিব্যরথ ও আমি অনাহারী। ২০০৬ সালের ১৭ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন কবি শামসুর রাহমান।
মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দীর্ঘ পাঁচ দশকের নিরবচ্ছিন্ন সাহিত্যচর্চায় তিনি বাংলা সাহিত্যে অনতিক্রম্য কীর্তি গড়েন। সবাইকে ছেড়ে গেলেও আজীবন কবিতায় সমর্পিত এ কবি প্রধানতম কবি হয়েই বেঁচে আছেন বাঙালির সত্তায়।
কবির জন্মবার্ষিকীতে আজ শুক্রবার সকালে কবির সমাধিতে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন পুষ্পমাল্য অর্পণ করবে।
আইনিউজ/এসডিপি
- কৃপার শাস্ত্রের অর্থভেদ: বাঙলা ভাষার প্রথম বই
- জীবনানন্দ দাশের কবিতা: বৃক্ষ-পুষ্প-গুল্ম-লতা (শেষ পর্ব)
- জীবনানন্দ দাশের কবিতার পাখিরা
- দুঃখের নাগর কবি হেলাল হাফিজ
- সমরেশ মজুমদার এবং ২টি কবিতা
- মাকে নিয়ে লিখা বিখ্যাত পঞ্চকবির কবিতা
- সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ৯ দিনব্যাপী অমর একুশের অনুষ্ঠানমালা
- হ্যারিসন রোডের আলো আঁধারি
- পিকলু প্রিয়’র ‘কবিতা যোনি’
- গল্পে গল্পে মহাকাশ
মেজোমামা খুব বোকা