শিল্প ও সাহিত্য ডেস্ক
মরমি সাধক হাছন রাজার জন্মদিন আজ
'রঙ্গের বাড়ই, রঙ্গের বাড়ই রে ভীষম উন্দুরায় লাগাল ফাইলো', 'লোকে বলে বলেরে ঘরবাড়ি ভালা না আমার', 'আগুন লাগাইয়া দিলো কোনে, হাছন রাজার মনে'সহ অসংখ্য গান রচনা করে বাংলা লোকসাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন মরমি কবি হাছন রাজা। আজ তাঁর ১৬৬ তম জন্মদিন।
১৮৫৪ সালের ২১ ডিসেম্বর (৭ পৌষ ১২৬১) সুনামগঞ্জ শহরের কাছে সুরমা নদীর তীরে লক্ষ্মণশ্রী পরগনার তেঘরিয়া গ্রামের সম্ভ্রান্ত জমিদার পরিবারে জন্ম নেন তিনি। হাছন রাজা পরাক্রমশীল জমিদার ছিলেন। যেকারণে স্থানীয়ভাবে অনেকেই হাছন রাজাকে দেওয়ান হাছন রাজা নামেও চেনেন।
তবে জীবনের কিছু অংশ জমিদারিত্ব আর বিলাস-ভূষণে কাটালেও একসময় তিনি এসবকিছুকে ছেড়ে ভাবের বাউল হয়ে ওঠেন। অজানা ভাবের টান তাকে বিলাসী জীবন থেকে নিয়ে আসে হাওরের বিস্তৃত পরিসরে। রচনা করতে থাকেন একের পর এক গান। গুণী এই মরমি কবি বাংলা ভাষাভাষি মানুষ ছাড়াও উপমহাদেশেও সমাদৃত।
হাছন রাজার বাবা দেওয়ান আলী রাজা চৌধুরী ছিলেন প্রতাপশালী জমিদার। মাত্র ১৫ বছর বয়সে হাছন জমিদারিতে অভিষিক্ত হন। প্রথম দিকে অত্যাচারী হলেও পরে সবকিছু উইল করেন মানুষের জন্য। সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, রামপাশা, লক্ষ্মণশ্রী ও সিলেটের একাংশ নিয়ে পাঁচ লাখ বিঘার বিশাল অঞ্চলের জমিদার ছিলেন মরমি কবি হাছন রাজা। জমিদারি ছেড়ে সৃষ্টিকর্তার খোঁজে নেমে পড়েন। মধ্য পঞ্চাশে এসে তিনি ভিন্ন এক মানুষে পরিণত হন। একসময় তিনি বিশ্বাস স্থাপন করেন, নিজের মধ্যেই সৃষ্টিকর্তার বাস।
নতুন প্রজন্মের শিল্পীরা মনে করেন, হাছন রাজার গান বিকৃত হচ্ছে, অনেক গান হারিয়ে যাচ্ছে। তরুণ শিল্পী সামির পল্লব, ডিউক চৌধুরী ও অমিত বর্মণ বলেন, আমরা নতুন প্রজন্মের যারা লোকসংস্কৃতি নিয়ে কাজ করছি, তাদের অনেকেই হাছন রাজার গানের কথা ও প্রকৃত সুরে থাকছি না। তাতে হাছন রাজা যে ভাবনা নিয়ে গান লিখেছিলেন, তা প্রকাশ পায় না। সরকারি উদ্যোগেই হাছন রাজার গান এবং গানের সুর সংরক্ষণ করা জরুরি।
সুনামগঞ্জ জেলা সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা আহমেদ মঞ্জুরুল হক চৌধুরী পাভেল বলেন, হাছন রাজার অনেক গান সংরক্ষণ করা হয়েছে। হাছন রাজা একাডেমি করার উদ্যোগ আছে সরকারের।
হাছন রাজা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সামারীন দেওয়ান বলেন, জন্মদিন উপলক্ষে আগামীকাল (আজ) থেকে হাছন রাজা মিউজিয়াম খুলে দেওয়া হচ্ছে।
তার উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে- ‘আঁখি মুঞ্জিয়া দেখ রূপ রে’, ‘আমি না লইলাম আল্লাজির নাম রে’, ‘লোকে বলে ঘরবাড়ি ভালানা আমার’, ‘আগুন লাগাইয়া দিলও কুনে হাছন রাজার মনে’, ‘গুড্ডি উড়াইল মোরে, মৌলার হাতের ডুরি’ এবং এ ধরনের অনেক গান।
আইনিউজ/এইচএ
- কৃপার শাস্ত্রের অর্থভেদ: বাঙলা ভাষার প্রথম বই
- জীবনানন্দ দাশের কবিতা: বৃক্ষ-পুষ্প-গুল্ম-লতা (শেষ পর্ব)
- জীবনানন্দ দাশের কবিতার পাখিরা
- দুঃখের নাগর কবি হেলাল হাফিজ
- সমরেশ মজুমদার এবং ২টি কবিতা
- মাকে নিয়ে লিখা বিখ্যাত পঞ্চকবির কবিতা
- সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ৯ দিনব্যাপী অমর একুশের অনুষ্ঠানমালা
- হ্যারিসন রোডের আলো আঁধারি
- পিকলু প্রিয়’র ‘কবিতা যোনি’
- গল্পে গল্পে মহাকাশ
মেজোমামা খুব বোকা