শিল্প ও সাহিত্য ডেস্ক:
রুবাইয়াৎ-ই-ওমর খৈয়াম: নজরুলের অনুবাদ
খেজুর গাছের মতই ওমর খৈয়াম নিজের কবিতায় রস দান করেছেন, নিজের হৃদপিণ্ডকে বিদীর্ণ করে ৷ এ রস মিষ্টি হলেও চোখের পানির মতোই নোনা। খেজুর গাছের রস যেমন তার মাথা চেঁছে বের করতে হয়, ওমর খৈয়ামের রুবাইয়াতও তেমনি বেরিয়েছে তার মস্তিষ্ক থেকে ৷ প্রায় হাজার বছর আগে এত বড় জ্ঞানমার্গী কবি কি করে জন্মালো বিশেষ করে ইরানের মতো অনুভূতিপ্রবণ দেশে, তা ভেবে অবাক হতে হয় ৷ ওমরকে দেখে মনে হয় ঊনবিংশ শতাব্দীর কবিও বুঝি এতোটা আধুনিক হতে পারেন না ৷
ওমরের কবিতার পূর্ণ রস, স্বাদ ঠিক রেখে সেগুলোকে অনুবাদ করেছেন আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম।
১
রাতের আঁচল দীর্ণ করে আসলো শুভ ঐ প্রভাত
জাগো সাকি! সকালবেলার খোয়ারি ভাঙো আমার সাথ।
ভোলো ভোলো বিষাদ-স্মৃতি! এমনি প্রভাত আসবে ঢের,
খুঁজতে মোদের এইখানে ফের, করবে করুণ নয়নপাত।
২
আঁধার অন্তরীক্ষ বুনে যখন রুপার পাড় প্রভাত,
পাখির বিলাপ-ধ্বনি কেন শুনি তখন অকস্মাৎ!
তারা যেন দেখতে বলে উজল প্রাতের আরশিতে-
ছন্নছাড়া তোর জীবনের কাটলো কেমন একটি রাত।
৩
ঘুমিয়ে কেন জীবন কাটাস? কইল ঋষি স্বপ্নে মোর,
আনন্দ-গুল প্রস্ফুটিত করতে পারে ঘুম কি তোর।
ঘুম মৃত্যুর যমজ ভ্রাতা, তার সাথে ভাব করিসনে,
ঘুম দিতে ঢের পাবি সময় কররে তোর জনম ভোর।
৪
আমার আজের রাতের খোরাক তোর টুকটুক শিরিন ঠোঁট,
গজল শোনাও, শিরাজি দাও, তন্বী সাকি জেগে ওঠ!
লাজ-রাঙা তোর গালের মতো দে গোলাপি রঙ শারাব,
মনে ব্যথার বিনুনি মোর খোঁপায় যেমন তোর চুনোট।
৫
প্রভাত হলো। শারাব দিয়ে করব সতেজ হৃদয়-পুর,
যশোখ্যাতির ঠুনকো এ কাঁচ করবো ভেঙে চাখনাচুর।
অনেক দিনের সাধ ও আশা এক নিমিষে করবো ত্যাগ,
পরব প্রিয়ার বেণী বাঁধন, ধরবো বেণুর বিধুর সুর।
- কৃপার শাস্ত্রের অর্থভেদ: বাঙলা ভাষার প্রথম বই
- জীবনানন্দ দাশের কবিতা: বৃক্ষ-পুষ্প-গুল্ম-লতা (শেষ পর্ব)
- জীবনানন্দ দাশের কবিতার পাখিরা
- দুঃখের নাগর কবি হেলাল হাফিজ
- সমরেশ মজুমদার এবং ২টি কবিতা
- মাকে নিয়ে লিখা বিখ্যাত পঞ্চকবির কবিতা
- সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ৯ দিনব্যাপী অমর একুশের অনুষ্ঠানমালা
- হ্যারিসন রোডের আলো আঁধারি
- পিকলু প্রিয়’র ‘কবিতা যোনি’
- গল্পে গল্পে মহাকাশ
মেজোমামা খুব বোকা