হেলাল আহমেদ
আপডেট: ১৫:২১, ৯ মে ২০২৩
সমরেশ মজুমদার এবং ২টি কবিতা
কালের জনপ্রিয় উপন্যাসিক, গল্পকার, কবি ও সাহিত্য বিশ্লেষক, দুই বাংলার জনপ্রিয় বাঙালি সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার গত হয়েছেন। তিনি চলে গেছেন, রেখে গেছেন তাঁর অমর সৃষ্টিগুলো। 'উত্তরাধিকারী', 'কালপুরুষ', 'ছায়াতরু' বা 'কালবেলা'র মতো ট্রিলজি পড়ে বাঙালি পাঠককূল আরও শত বছর বুঁদ হয়ে থাকবে সমরেশ রচিত সাহিত্যে।
ছোটবেলায় জলপাইগুড়ির বাবুপাড়া পাঠাগারে বসে বসে যিনি সারাদিন বই পড়তেন, এখন তার লেখা বইয়ের জন্যই বিভিন্ন লাইব্রেরিতে একটি আলাদা বুকসেল্ফ থাকে। তিনি সমরেশ মজুমদার।
তিন দশক ধরে বাংলা সাহিত্যের উর্বর ভূমিতে সাহিত্যের নিয়মিত চাষাবাদ করে গেছেন এই শক্তিমান লেখক। লেখক জীবনে খ্যাতি ধরা দিয়েছে সেই যৌবনেই। তাঁর রচিত অর্জুন সমগ্র কিশোরদের মাঝে পঠিত হবে বলেই বিশ্বাস। এই লেখকের প্রয়াণে নিঃসন্দেহে বাংলা সাহিত্যের ক্ষাণিক হলেও ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু চলে যাওয়াটাই যে চূড়ান্ত সত্য তা তো লেখক নিজেও স্বীকার করেছেন তাঁর লেখায়।
সমরেশ মজুমদার লিখেছেন- 'মৃত্যু কী সহজ, কী নিঃশব্দে আসে অথচ মানুষ চিরকালই জীবন নিয়ে গর্ব করে যায়!'
সমরেশ মজুমদার খুব বেশি কবিতা লিখেছেন বলে জানা যায় না। বরং একবার তিনি কবিদের বিরুদ্ধে খেপে গিয়ে বেশকিছু তির্যক লেখা লিখেছিলেন। সেই লেখার সাথে প্রয়াত কবি শক্তি চট্যোপাধ্যায়ের নামও জড়িয়ে আছে। মূলত, সেসময় কোলকাতা শহরকে কেন্দ্র করে কবির পরিমাণ এতো বেড়ে গিয়েছিল যে এর মধ্যে ভালো কবিতা খুঁজে পাওয়া দুস্কর ছিলো।
গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে একবার সমরেশ মজুমদার বলেছিলেন- সেবার আমি শিলচর গিয়েছিলাম। শিলচরে যে এত কবি আছে আমি জানতাম না। আমি রাত্রিবেলা দেখলাম ৭০ টা কবিতার বই আমার ঘরে। পরেরদিন সকালে আমার ফ্লাইট। রাতে ঘরে বসে আমি কবিতার বইয়ের পাতাগুলো ওল্টাতে লাগলাম। একটা কবিতাও পড়ার মত নয়। তাহলে এই বইগুলো এক্সট্রা খরচ দিয়ে ফ্লাইটে করে বাড়ি নিয়ে যাব কেন!
সমরেশ মজুমদারের দুইটি কবিতা
তুমি ফিরবে কোন একদিন
হয়তো নীলিমায় হারানো কোন এক নিষ্প্রভ বেলায়।
নতুবা কোন এক নবীন হেমন্তে,
এক নতুন দিনের নির্মল খোলা হাওয়ায়।
অথবা কোন এক শ্রাবণের দিনে
অহরহ ঝরা ঘন কাল মেঘ বৃষ্টির
মুহু মুহু নির্ঝর খেলায়।
তুমি ফিরবে কোন এক রাতে
পূর্ণিমার ভরা জোছনায়।
তুমি ফিরবে জানি বহুদিন পরে
হয়তো বা হাজার বছর পরে।
কোন এক নিঃস্ব হৃদয়ে,
লক্ষ প্রাণের ভিড়ে, তুমি ফিরবে।
বহুরুপে সেই প্রাণে, অনেক নবীনের ভিড়ে,
তোমার আমার গড়া ভালবাসার নীড়ে।
২.
এই যে আমি তোমাকে দেখছি,
দেখে মন ভরে যাচ্ছে,
না দেখতে পেলে বুক টনটন করে,
বেঁচে থাকাটা বিবর্ণ হয়ে যায়,
এই অনুভূতি কি
ভালোবাসা নয়?
আই নিউজ/এইচএ
- কৃপার শাস্ত্রের অর্থভেদ: বাঙলা ভাষার প্রথম বই
- জীবনানন্দ দাশের কবিতা: বৃক্ষ-পুষ্প-গুল্ম-লতা (শেষ পর্ব)
- জীবনানন্দ দাশের কবিতার পাখিরা
- দুঃখের নাগর কবি হেলাল হাফিজ
- সমরেশ মজুমদার এবং ২টি কবিতা
- মাকে নিয়ে লিখা বিখ্যাত পঞ্চকবির কবিতা
- হ্যারিসন রোডের আলো আঁধারি
- সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ৯ দিনব্যাপী অমর একুশের অনুষ্ঠানমালা
- পিকলু প্রিয়’র ‘কবিতা যোনি’
- গল্পে গল্পে মহাকাশ
মেজোমামা খুব বোকা