Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শনিবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ৬ ১৪৩২

শ্যামলাল গোসাঁই

প্রকাশিত: ১৩:০৮, ২৮ জানুয়ারি ২০২৪

দূরদেশী হাওয়া এবং অন্যান্য কবিতা

দূরদেশী হাওয়া এবং অন্যান্য কবিতা।

দূরদেশী হাওয়া এবং অন্যান্য কবিতা।

১. পৃথিবীর আত্মা 

পৃথিবীর আত্মার ভাষা পড়ে পড়ে
এখানে চিনেছে যাঁরা নিজ ভাগ্যরেখা
গমনে বেরোয় কি তাঁরা ফিরিবার প্রত্যাশা নিয়ে?
তরুণীর সুদীর্ঘ অপেক্ষা পূরণে ফেরে না তো আরবের যুবা, কাঁদে না তো ওই প্রিয় চোখ—
ঘুরে ঘুরে, উড়ে উড়ে, চক্রের ঘোরে
মিশে যায় তাঁরা, পৃথিবীর আত্মার সাথে। 

মাঘ-১২/১৪৩০ বাংলা

২. দূরদেশী হাওয়া 

তোমার বুকে হাত রাখলে মনে হয়—
রেখেছি হাত কোনও মহুয়া দুপুরে 
একা ডেকে চলা বিরহী ঘুঘুর বুকে।
মাছরাঙা ধ্যানাতুর চোখ তাক করে রাখলে 
তোমার চোখের দিকে সই
মনে হয়, চোখ নয়, মায়া কৌশল 
আমি যেন শুধু বশ হই। 
অথবা, যখন থাকো ঘাসের মতোন কাছে বসে
মনে হয়— বসে আছি মুখোমুখি দেবতার 
নয় কোনো সরল মানুষীর। 
যখন ভালোবাসি তোমায় 
মনে হয়— এই বুঝি প্রেম, চাওয়া, পাওয়া
অথচ, কল্পতরু সব
তুমি আজও দূরদেশী হাওয়া।     

মাঘ-৫/১৪৩০ বাংলা 

৩. সাথী হীন বহুদিন 

সে পাথর হতে চাইলে 
আমি বললাম— পাথরও ভেঙে যায় একদিন, ক্ষয়ে যায় শরীর তারও! 
সে বললো, আমি নদী হবো তবে
তারে আমি শুনালাম ভাঙনের গান, কুলহারা গৃহহীন মানুষের সুরে। 
সে বললো: যদি আকাশ হই?
বললাম— চলে যাবে দূরে, নাগাল পাবে কি এই মাটির মানুষ? 
আর যদি হই সাগরের মতো?
বললাম— তীরে র'বো বসে গোটা কাল, দেখে যাব নীল জলরাশি। 
শুধায় সে চোখে নিয়ে মেঘ ঘনঘটা
থাকবে না পাশে তবে আর?
বললাম— সাগর আর মানুষে একসাথে থাকে কোনো কালে? কোনোদিন?
সাগরের সাথে নয়, পাড়ের মানুষ হয়ে থাকে চিরদিন! 
সে বললো: কী হবো তবে বলো? মানুষের ছোট্ট জীবনে, কী-ই আর হতে পারা যায়?
বললাম— সাথী হও, সখি। দুনিয়াটা বড় গুঁজামিল, প্রেম মিলে সাথী পাওয়া দায়!

৪. মাটির সিন্দুক 

শীতের এই হিমেল ছাওয়া পথ, যদি—
নিয়ে যায়ও টেনে কোনো নরকের দ্বারে,
হেসে হেসে চলে যাব আমি। এই কুহেলিকা গায়ে মেখে এভাবেই চলে যাওয়া ভালো,
হাসি মুখে খুশি নিয়ে মনে সীমাহীন পথে নেমে যাওয়া
কিছু হোক পাওয়া কী না পাওয়া
তবুওতো— ফেলে যেতে হয়
খুব চেনা গৃহ আর দাওয়া
পরিচিত রমনির মুখ, থরে থরে জমানো অসুখ
কতোকিছু ফেলে যায় মানুষ
আগলে রেখে সারাটি জীবন, মাটির এক সিন্দুকে ভরে।  

পৌষ-২৮/১৪৩০ বাংলা 

৫. শীত

এই চোখে জমিয়ে রেখেছি কতো শীত
এই ঠোঁটে জমিয়েছি কতো উষ্ণতা
জানে না কিছুই কেউ। বীরহের গীত—
শুনেছেন শুধুই বিধাতা।

মাঘ১৪/১৪৩০ বাংলা 


লেখক- শ্যামলাল গোসাঁই, কবি ও সংস্কৃতিকর্মী 

Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়