আইনিউজ ডেস্ক
মেয়ে শিশু নিয়ে মসজিদে যাওয়া ইসলামবিরোধী? কি বলছেন বিশেষজ্ঞরা

নরসিংদীতে সম্প্রতি এক বাবা তাঁর চার বছরের মেয়ে শিশুকে নিয়ে মসজিদে গিয়েছিলেন। এ ঘটনায় সেখানে দুপক্ষের সংঘর্ষ বাঁধে, তাতে মারা যান এক যুবক। প্রশ্ন উঠছে, মেয়ে শিশুকে মসজিদে নিয়ে যাওয়া কি ইসলামবিরোধী? জেনে নেওয়া যাক এ বিষয়ে কি বলছেন ইসলামি চিন্তাবিদ ও বিশেষজ্ঞরা।
ইমলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ অ্যাকাডেমির পরিচালক মওলানা আনিসুজ্জামান শিকদার বলেন , “শিশুদের মসজিদে নামাজ পড়তে যাওয়ায় কোনো বাধা নেই। সে ছেলে বা মেয়ে শিশু যা-ই হোক না কেন। আর মেয়েরা ‘বালেগ' হলেও মসজিদে নামাজ পড়তে পারেন। পর্দা মেনে আলাদা লাইনে মসজিদে নারীরা নামাজ পড়তে পারেন। মসজিদে নববী, কাবা শরীফে নারীদের জন্য আলাদা নামাজের ব্যবস্থা আছে। রসুল (সা.)-এর সময়েও নারীরা মসজিদে নামাজ পড়তেন। ঢাকার বায়তুল মেকাররম জাতীয় মসজিদেও ছয় হাজার নারীর আলাদা নামাজের ব্যবস্থা আছে।”
তবে তিনি বলেন, “হযরত ওমর ফারুক (রা.)- যখন খলিফা হন, তখন তিনি নারীদের মসজিদে নামাজ পড়তে যেতে নিরুৎসাহিত করতেন। কারণ, কেউ কেউ নারীদের আপত্তিকর কথা বলতেন। পরে এটা কেউ মেনেছেন, কেউ মানেননি। কারণ, রসুল নিজেই নারীদের মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়ার অনুমতি দিয়েছেন।”
এ বিষয়ে ঢাকার ধানমন্ডির তাকওয়া মসজিদের ইমাম মুফতি সাইফুল ইসলাম বলেন, “মেয়ে শিশুরা মসজিদে নামাজ পড়তে যেতে পারবে না- এটা অহেতুক কথা। আর চার বছরের শিশুর ওপর তো শরিয়তই কার্যকর না। সব শিশুই যেতে পারবে। নারীরাও পর্দা মেনে, নিয়ম মেনে মসজিদে নামাজ পড়তে পাবেন।”
তিনি বলেন, “রসুল (সা.) জুমার দিনে খুতবা দিচ্ছিলেন, তখন শিশু হাসান ও হোসাইন (রা.) হেলেদুলে মসজিদে আসেন। তখন খুতবা থামিয়ে ওনাদের দুইজনকে কোল নিয়ে আবার খুতবা দিয়েছেন।”
তিনি আর বলেন, “আসলে ইসলামকে সঠিকভাবে জানা প্রয়োজন। অনেকেই না জেনে ইসলামের নামে নানা কথা বলেন। অনেক কিছু দেশে প্রচলিত আছে, সেটাতে অনেকে ইসলামের বিধান মনে করেন। এই প্রচলিত জিনিসকে ইসলামের সাথে মিলিয়ে ফেলা ঠিক না।”
গত বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রায়পুরার উত্তর বাখরনগর ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামে আড়ো এলাকার একটি মসজিদে মেয়ে শিশুকে নিয়ে যাওয়া নিয়ে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
মামলা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বাহাদুরপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম তার চার বছরের মেয়েকে নিয়ে মাগরিবের নামাজ আদায় করতে বাড়ির পাশের মসজিদে যান। জামাত শুরু হলে মেয়ে ও তিনি ইমামের পেছনের সারিতে দাঁড়ান। ওই সময় ইমামের পেছনে মেয়ে শিশু দাঁড়ানো নিয়ে আপত্তিকর কথা বলেন প্রতিবেশী আলাউদ্দিন। এরই জেরে দুজনের মধ্যে তর্ক শুরু হয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। পরে এ ঝগড়ায় পরিবারের সদস্যরা জড়িয়ে পড়েন। এ ঘটনায় আলাউদ্দিন আহত হন।
নিহত লালচান মিয়া।
এদিকে, আলাউদ্দিনের আহত হওয়ার খবর পেয়ে সে রাতেই তাকে দেখতে আসেন ভাগ্নে লাল চাঁন মিয়া। পরে রাত ১০টার দিকে দুই পক্ষ আবারও সংঘর্ষে জড়ায়। এ সময় নুরুল ইসলাম তার লোকজন নিয়ে লাল চাঁনকে উপর্যুপরি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।
রবিবার দুপুর ২টার দিকে রাজধানী ঢাকার উত্তরার শিন শিন জাপান হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
লালচাঁন মিয়ার বড় ভাই কামাল বাদশা বলেন, “আমরা ভাই কোনো সংঘর্ষে জড়িত ছিল না। সে শুধু মামা আলাল উদ্দিন আহত হওয়ার খবর পেয়ে সেখানে গিয়েছিল। তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে।”
রায়পুরা থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) গোবিন্দ সরকার বলেন, “মারামারির ঘটনায় আগেই মামলা হয়েছে। সেই মামলাই হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হবে। একজন আসামিকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”
ঘটনার পর থেকে নুরুল ইসলাম পলাতক রয়েছেন।ওই এলাকায় এখন গ্রেপ্তার আতঙ্ক চলছে।
আইনিউজ/এসডি
আইনিউজ ভিডিও
রমজানেও ব্যবসায় ডাকাতি, শ্রীমঙ্গলের ২-৩ টাকার লেবু ঢাকায় হয়ে যায় ২০ টাকা
রোজার বাজারে ২ কেজি মাংসে ৪০০ গ্রাম কম দিলেন ব্যবসায়ী, ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযান
নয় বছরের মেয়েটি কিভাবে নেভায় একের পর এক আগুন?
- কাল থেকে যেসব শাখায় পাওয়া যাবে নতুন টাকার নোট
- 'জাতীয় মুক্তি মঞ্চ' গঠনের ঘোষণা
- এক বছরেই শক্তি, ক্ষিপ্রতা জৌলুস হারিয়ে 'হীরা' এখন বৃদ্ধ মৃত্যুপথযাত্রী
- ওয়াহিদ সরদার: গাছ বাঁচাতে লড়ে যাওয়া এক সৈনিক
- ভারতবর্ষে মুসলিম শাসনের ইতিকথা (প্রথম পর্ব)
- এবার ভাইরাস বিরোধী মাস্ক বানিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিলো বাংলাদেশ
- মায়েরখাবারের জন্য ভিক্ষা করছে শিশু
- ২৫ কেজি স্বর্ণ বিক্রি করল বাংলাদেশ ব্যাংক
- ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ
- তালিকা হবে রাজাকারদের