শ্যামলাল গোসাঁই
আপডেট: ১১:৫১, ২৫ জুন ২০২২
যতোবার হত্যা করো, জন্মাবো আবার, দারুণ সূর্য হবো: প্রধানমন্ত্রী

পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে জনসভায় বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে পদ্মা পাড়ে চলছে মহা উৎসব। লাখো মানুষ যোগ দিয়েছেন স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মাহেন্দ্র এই ক্ষণে উপস্থিত থাকার জন্য। অল্প সময়ের মধ্যে বহুল প্রতীক্ষার পদ্মা সেতুর উদ্বোধন ঘোষণা করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরইমধ্যে জনসভায় পৌঁছেছেন এই বৃহৎ স্বপ্নের কারিগর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জনসভায় এতো মানুষের সামনে বক্তব্য দিতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যতোবার হত্যা করো, জন্মাবো আবার, দারুণ সূর্য হবো। জয় বাংলা।'
শনিবার (২৫ জুন) মাওয়ায় সেতু উদ্বোধনের আগে জনসভায় যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি নেতাকর্মী এবং আমন্ত্রিত অতিথিদের সামনে বক্তব্য প্রদান করেন। বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী স্বপ্নের পদ্মা সেতুর শুরু থেকে শেষ নিয়ে দীর্ঘ বক্তব্য দেন।
এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই পদ্মা সেতু নির্মাণের দলে এদেশের লাখো মানুষ উপকৃত হবে, দেশ উপকৃত হবে। তবু কিছু মানুষ এই পদ্মা সেতু নির্মাণের বিরুদ্ধে সবসময় কথা বলেছে। তারা এবং তাদের দোসররা মিলে আমাদেরকে বারবার ব্যর্থ করার জন্য নানান চেষ্টা চালিয়েছে। তবু আমরা দমে যাই নি, আমরা স্বপ্নকে বাস্তবে রূপান্তর করে দেখিয়েছি।'
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাঙালি বীরের জাতি। এই জাতি একটুতেই দমে যায় না। বাঙালি জাতির উপর অনেকবার আঘাত এসেছে, কিন্তু বাঙালি আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত যেই দেশকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যাত্রা শুরু করেছিলেন সেই দেশ আজকে বিশ্বের বুকে একটি সম্ভাবনাময় দেশ। আমরা আঘাত পিঠে নিয়েও ঘুরে দাঁড়িয়েছি এবং বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছি।'
শেখ হাসিনা বলেন, ইতিহাসের এক বিশেষ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আমরা। কিছুক্ষণের মধ্যেই বাংলার মানুষের গর্বের পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। এ সেতু নির্মাণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তা-কর্মচারী, দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ পরামর্শক, ঠিকাদার, প্রকৌশলী, প্রযুক্তিবিদ, শ্রমিক, নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত সেনাবাহিনীর সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। ধন্যবাদ জানাই পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তের অধিবাসীদের যাদের জমিজমা ও বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের এ ত্যাগ ও সহযোগিতা জাতি চিরদিন স্মরণ করবে।
তিনি বলেন, দেশের কোটি কোটি মানুষের সঙ্গে আমিও আজ আনন্দিত, গর্বিত ও উদ্বেলিত। অনেক বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে আর ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে প্রমত্ত পদ্মার বুকে আজ বহু কাঙ্ক্ষিত সেতু দাঁড়িয়ে গেছে। এ সেতু শুধু ইট-সিমেন্ট-স্টিল-লোহা বা কংক্রিটের একটি অবকাঠামো নয়, এ সেতু আমাদের অহংকার, আমাদের গর্ব, আমাদের সক্ষমতা আর মর্যাদার প্রতীক। এ সেতু বাংলাদেশের জনগণের। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমাদের আবেগ, আমাদের সৃজনশীলতা, আমাদের সাহসিকতা, সহনশীলতা আর জেদ।
সরকারপ্রধান বলেন, ষড়যন্ত্রের ফলে আমাদের সেতু নির্মাণ খানিকটা বিলম্বিত হয়েছে, কিন্তু আমরা হতোদ্যম হইনি। শেষ পর্যন্ত অন্ধকার ভেদ করে আমরা আলোর মুখ দেখেছি। পদ্মার বুকে জ্বলে উঠেছে লাল, নীল, সবুজ, সোনালি আলোর ঝলকানি। ৪১টি স্প্যান যেন স্পর্ধিত বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, বাঙালিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না, পারেনি। আমরা বিজয়ী হয়েছি। তারুণ্যের কবি, দ্রোহের কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য্যের ভাষায় তাই বলতে চাই, ‘সাবাস, বাংলাদেশ, এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয় : জ্বলে পুড়ে-মরে ছারখার/তবু মাথা নোয়াবার নয়।’ আমরা মাথা নোয়াইনি।
২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ একটি উন্নত দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পাবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সবাইকে একযোগে দেশের মানুষের কল্যানে কাজ করে যেতে হবে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্ন আমাদের সবাইকে একসাথে মিলে পূরণ করতে হবে। আমরা সেই স্বপ্ন পূরণ থেকে বেশি দূরে নই।
এদিকে স্বপ্নকে বাস্তব রূপে দেখার অপেক্ষায় লাখো বাঙালি। পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে আজ পদ্মার পাড় জুড়ে যেন বসেছে কোনো আদিম মানুষের মেলা। শনিবার (২৫ জুন) ভোর ৫টা থেকে লঞ্চে, স্টিমারে, নৌকায় করে আসছেন বিভিন্ন জেলার মানুষ। স্বপ্নকে বাস্তবে দেখতে এবং ইতিহাসের সাক্ষী হতে লাল সবুজে সুসজ্জিত ট্রলার ও নৌকা নিয়েও জনসভাস্থলে আসছেন অনেকে।
বরিশাল থেকে আসা আ. রহমান বলেন, ‘প্রায় ৫০টি লঞ্চ বরিশাল থেকে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় আসবে। এ পর্যন্ত প্রায় ২০টি লঞ্চ চলে এসেছে। আরও ৩০টি লঞ্চ জনসভাস্থলের উদ্দেশ্যে আসছে। শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে আমরা লঞ্চে উঠি। পদ্মা সেতু হওয়ায় লঞ্চে যাতায়াত করা হবে না। লঞ্চের এ যাত্রাই আমাদের শেষ যাত্রা। এরপর আমরা পদ্মা সেতুতেই ঢাকা যাবো।’
চোখ যতদূর যায় নদীতে ভাসছে কয়েকশ লঞ্চ, ট্রলার আর ডিঙি নৌকা। এ যেন নদীর বুকে নৌযানের মেলা বসেছে। নৌযানগুলো রঙ-বেরঙে সুসজ্জিত করা হয়েছে। নৌযান থেকে নেমেই জনসভাস্থলে জড়ো হচ্ছেন মানুষ।
এদিকে জনসভাস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি যুবলীগ, ছাত্রলীগ স্বেচ্ছাসেবক টিম হিসেবে কাজ করছে। জনসভাস্থলের রঙ-বেরঙের বেলুন ওড়ানোর মধ্য দিয়ে জনসভাস্থলে সৌন্দর্য তৈরি করা হয়েছে।
বরিশাল থেকে আসা আ. রহমান বলেন, ‘প্রায় ৫০টি লঞ্চ বরিশাল থেকে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় আসবে। এ পর্যন্ত প্রায় ২০টি লঞ্চ চলে এসেছে। আরও ৩০টি লঞ্চ জনসভাস্থলের উদ্দেশ্যে আসছে। শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে আমরা লঞ্চে উঠি। পদ্মা সেতু হওয়ায় লঞ্চে যাতায়াত করা হবে না। লঞ্চের এ যাত্রাই আমাদের শেষ যাত্রা। এরপর আমরা পদ্মা সেতুতেই ঢাকা যাবো।’
খুলনা থেকে আসা রাকিব উদ্দিন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন। সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে আমাদের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে। পদ্মা সেতু উদ্বোধন হলে আমাদের যাতায়াত ব্যবস্থা খুবই সহজ হবে।’
জনসভায় আসা রেজাউল হক বলেন, ‘এত বড় লঞ্চ এ এলাকার মানুষ আগে দেখেনি। আজ প্রধানমন্ত্রীর জনসভা উপলক্ষে কয়েকশ লঞ্চ দেখে খুবই ভালো লাগছে।’
আইনিউজ/এইচএ
- কাল থেকে যেসব শাখায় পাওয়া যাবে নতুন টাকার নোট
- 'জাতীয় মুক্তি মঞ্চ' গঠনের ঘোষণা
- এক বছরেই শক্তি, ক্ষিপ্রতা জৌলুস হারিয়ে 'হীরা' এখন বৃদ্ধ মৃত্যুপথযাত্রী
- ওয়াহিদ সরদার: গাছ বাঁচাতে লড়ে যাওয়া এক সৈনিক
- ভারতবর্ষে মুসলিম শাসনের ইতিকথা (প্রথম পর্ব)
- এবার ভাইরাস বিরোধী মাস্ক বানিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিলো বাংলাদেশ
- মায়েরখাবারের জন্য ভিক্ষা করছে শিশু
- ২৫ কেজি স্বর্ণ বিক্রি করল বাংলাদেশ ব্যাংক
- ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ
- তালিকা হবে রাজাকারদের