আই নিউজ ডেস্ক
মানুষের জীবনযাপন উন্নত করার লক্ষ্যে চালু সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা
সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি- বাসস
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সকলের আরো ভালো ও একটি উন্নত জীবন নিশ্চিত করতে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার উদ্বোধন করা হলো। এই ব্যবস্থার লক্ষ্য হলো দেশের ১৮ বছরের বেশি বয়সী নাগরিকদের এর আওতায় নিয়ে আসা আমরা পেনশন স্কিম চালু করেছি যাতে দেশের প্রতিটি মানুষ একটি উন্নত জীবনযাপন করতে পারে।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার উদ্বোধন কর্মসূচিতে এসব কথা বলেন।
সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির উদ্বোধন ঘোষণা শেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রাথমিকভাবে ছয়টির মধ্যে চারটি স্কিম প্রগতি, সুরক্ষা, সমতা এবং প্রবাসী উদ্বোধন করা হয়েছে এবং অন্য দু’টি পরে চালু করা হবে।শ
তাঁর এবং আওয়ামী লীগের প্রতি জনগণের আস্থা, বিশ্বাস ও ভালোবাসাই দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করার চালিকাশক্তি বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আগামী দিনেও আমার প্রতি আস্থা, বিশ্বাস ও ভালোবাসা অব্যাহত রাখার জন্য আমি বাংলাদেশের জনগণকে অনুরোধ করছি।’
সরকার প্রধান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একমাত্র লক্ষ্য ছিল দেশবাসীকে একটি উন্নত জীবন উপহার দেওয়া, যার জন্য তিনি তাঁর সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা শোকের মাসে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করেছি। জনগণকে একটি সুন্দর ও উন্নত জীবন দেওয়ার আমাদের প্রচেষ্টা দেখে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বঙ্গমাতার আত্মা শান্তি পাবে।’
তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি মানুষকে আরো ভালো ও উন্নত জীবন দিতে ব্যর্থ হলে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া দেশের স্বাধীনতা বৃথা যাবে।
স্বাধীনতাকে ব্যর্থ হতে দেব না
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা দেশের স্বাধীনতাকে ব্যর্থ হতে দেব না, এটি ব্যর্থ হবে না এবং এটি ব্যর্থ হয়নি। তাঁর (বঙ্গবন্ধুর) আদর্শ অনুসরণ করে আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়তে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা বজায় রেখে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশের দিকে অগ্রসর হওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
সরকার প্রধান স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সুবিধাভোগি তিনটি জেলা-গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট ও রংপুর মত বিনিময় করেন এবং সৌদি আরবের জেদ্দায় বাংলাদেশের কনস্যুলেট জেনারেলও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ইভেন্টে যুক্ত হন।
প্রয়াত অর্থমন্ত্রীর প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন
শেখ হাসিনা সর্বজনীন পেনশন প্রকল্প চালু করতে কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে, বিশেষ করে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও বর্তমান অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তিনি কেবলমাত্র তাঁর দলের শাসনামলে পেনশন স্কিমটি খুলতে চেয়েছিলেন। কারণ, তিনি আশঙ্কা করেছিলেন যে অন্য কোনও সরকার এই জাতীয় কর্মসূচি গ্রহণ করবে না। কারণ, অতীতে তাদের একচেটিয়েভাবে নিজেদের ভাগ্য গড়তে দেখা গেছে।
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় থাকার সময় পেনশন স্কিম চালু করতে চেয়েছিলাম। নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে। আমরা ক্ষমতায় আসলে ভালো হবে, অন্যথায় এই প্রকল্প আলোর মুখ দেখবে না।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, জিয়া, এরশাদ ও খালেদার শাসনামলে অমানুষিকভাবে নির্যাতন, হত্যা ও গুম করায় আওয়ামী লীগ তার দলের নেতাকর্মীদের সুরক্ষা দেয়ার জন্য আওয়ামী ফাউন্ডেশন গঠন করে পেনশন স্কিম খুলেছিল।
তিনি আরো বলেন, তারা এই স্কিমটি চালিয়ে যেতে পারেনি। পরবর্তীতে ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে দেশের প্রতিটি ব্যক্তিকে একটি সর্বজনীন পেনশন স্কিমে আনার সিদ্ধান্তকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটি সবচেয়ে বড় বিষয় যে, আমরা বাংলাদেশের সকল মানুষের জন্য সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করতে পেরেছি। এটি আমাদের আত্মতৃপ্তি দেয়।’
শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে দেশবাসীকেও ধন্যবাদ জানান। কারণ, তারা বারবার আওয়ামী লীগের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস দেখিয়েছে। ফলে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থেকে তাদের সেবা করতে পেরেছে।
তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তাঁর বাবা, মা ও ভাইদের হত্যার মাধ্যমে সবকিছু হারিয়েছেন। ১৯৮১ সালে দেশে ফেরার পর বাবা, মা, ভাই কাউকে পাইনি। কিন্তু দেশবাসীকে পাশে পেয়েছি। তাই দেশের সবাইকে একটি সুন্দর জীবন দিতে কাজ করে যাচ্ছি।’
এক নজরে সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি
সরকার ঘোষিত সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির আওতায় প্রগতি স্কিমটি বেসরকারি খাতের চাকরিজীবীদের জন্য, স্ব-কর্মে নিযুক্ত লোকদের জন্য সুরক্ষা, প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য প্রবাসী এবং দেশের নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য সমতা প্রযোজ্য হবে।
সর্বজনীন পেনশন স্কিমের মূল লক্ষ্য দেশের ১৮ বছরের বেশি বয়সী সকলকে এর আওতায় আনা এবং তারা তাদের ৬০ বছর বয়স হওয়ার পরে আজীবন পেনশন সুবিধা ভোগ করবেন।
পেনশন ব্যবস্থার বয়সসীমা প্রাথমিকভাবে ৫০ বছর নির্ধারণ করা হয়েছিল কিন্তু পরে তা সংশোধন করা হয়। ৫০ বছরের বেশি বয়সীরাও টানা ১০ বছর ধরে কিস্তি ভিত্তিতে পরিশোধের পরে পেনশন সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর আবদুর রউফ তালুকদার।
প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন। অনুষ্ঠানে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার ওপর একটি ভিডিও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
আই নিউজ/এইচএ
- কাল থেকে যেসব শাখায় পাওয়া যাবে নতুন টাকার নোট
- 'জাতীয় মুক্তি মঞ্চ' গঠনের ঘোষণা
- এক বছরেই শক্তি, ক্ষিপ্রতা জৌলুস হারিয়ে 'হীরা' এখন বৃদ্ধ মৃত্যুপথযাত্রী
- ওয়াহিদ সরদার: গাছ বাঁচাতে লড়ে যাওয়া এক সৈনিক
- ভারতবর্ষে মুসলিম শাসনের ইতিকথা (প্রথম পর্ব)
- এবার ভাইরাস বিরোধী মাস্ক বানিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিলো বাংলাদেশ
- মায়েরখাবারের জন্য ভিক্ষা করছে শিশু
- ২৫ কেজি স্বর্ণ বিক্রি করল বাংলাদেশ ব্যাংক
- ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ
- তালিকা হবে রাজাকারদের