আই নিউজ প্রতিবেদক
দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ডেঙ্গু আক্রান্ত এবছর

এবছর ডেঙ্গুর প্রকোপ অন্যান্য সকল সময়ের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে। চলতি বছর এখন পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ২ হাড়িয়েছ ১৯১ জন। ক্রমাগত হারে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। থেমে নেই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যাও। আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা চূড়ান্তভাবে কতোতে গিয়ে দাঁড়াবে তা নিয়ে রীতিমত শঙ্কিত সংশ্লিষ্টজন। সেই সাথে নাগরিক সমাজের অভিযোগের আঙুল আছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ডেঙ্গু ইস্যুতে অবহেলার ব্যাপারেও।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য বলছে, সোমবার (২১ আগস্ট) সকাল ৮টা পর্যন্ত দেশে নতুন করে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন দুই হাজার ১৯৭ জন। তাঁরা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের নিয়ে দেশে মোট ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২ হাড়িয়েছ ১৯১ জনে। আর এই বাড়ার ফলেই ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা দেশের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড গড়েছে।
দেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব প্রথম দেখা দেয় ২০০০ সালে। এর পর গত বাইশ বছর ধরে প্রায় প্রতিবছরই দেশে ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাবের শিকার হয়েছেন মানুষ। কিন্তু এবছরের মতো কোনোকালেই ডেঙ্গু আক্রান্ত হন নি। এবছরের হিসেবে পূর্বের সকল হিসেবকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এখনো অব্যাহত আছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি।
২০১৯ সালে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ডেঙ্গু আক্রান্ত হন। এতোদিন ২০১৯ সালের এই তথ্যই ছিলো সর্বোচ্চ ডেঙ্গু আক্রান্তের রেকর্ড। সে বছর দেশে মোট ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন। কিন্তু এবছর এরিমধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ২ হাজার ছাড়িয়েছে।
চলতি বছর শুধু আক্রান্তের দিক থেকে নয় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারাও যাচ্ছেন বেশি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, গত চব্বিশ ঘণ্টায় দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন আরো ৯ জন; মোট মারা গেছেন ৪৮৫ জন। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের ইতিহাসে আর কখনো এতো মৃত্যু হয় নি। ২০২২ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সর্বোচ্চ ২৮১ জন মারা যান।
শেষ দুই মাসে অধিক আক্রান্ত-মৃত্যু
চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্তের পুর্ণাঙ্গ তথ্য ঘাঁটলে দেখা যায়, এই মৌসুমে ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাব শুরুর প্রথম সাত মাসে (৩১ জুলাই পর্যন্ত) দেশজুড়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন ৫১ হাজার ৮৩২ জন। কিন্তু চলতি আগস্ট মাসের ২১ দিনেই প্রায় সমপরিমাণ মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে এটি আতঙ্কের জন্ম দিয়েছে স্বাস্থ্য খাতে জড়িত সংশ্লিষ্টদের মাঝে।
আগস্ট মাসে ঢাকা শহরের বাইরেও ডেঙ্গু আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে তুলনামূলক বেশি। একইসময়ে রাজধানী ঢাকাতেও সমানতালে ডেঙ্গু রোগী বেড়েছে। কিছু কিছু জায়গায় পর্যাপ্ত চিকিৎসার অভাবের অভিযোগ ওঠেছে। বিশেষ করে স্যালাইনের দাম বৃদ্ধি পাওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
সিটি কর্পোরেশনের ব্যর্থতা
ডেঙ্গু প্রতিরোধে বিশেষ ঢাকায় ব্যর্থতায় প্রায় সকল দায়ই পড়ছে সিটি কর্পোরেশনের মেয়রদের উপর। সময়োপযোগী ও মানহীন পদক্ষেপ আর কর্মসূচি নেয়ার ফলে মশা প্রতিরোধের বদলে বেড়েই চলেছে প্রাদুর্ভাব। সম্প্রতি ঢাকায় মশা নিয়ন্ত্রণে বিটিআই নামক এক ধরণের ওষুধ আমদানি বিষয়েও বেশ সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন মেয়র আতিকুল ইসলামকে।
মার্শাল অ্যাগ্রো নামক একটি কোম্পানির মাধ্যমে সিঙ্গাপুর থেকে মশার ওষুধ আনার কথা থাকলেও সেখানে জালিয়াতির প্রমাণ পায় সংবাদ মাধ্যম। সিঙ্গাপুর থেকে বিটিআই আনার কথা বলে মার্শাল অ্যাগ্রো চীন থেকে বিটিআই এনে কর্পোরেশনকে সরবরাহ করে। চীনা একজন নাগরিককে বিশেষজ্ঞ হিসেবে উপস্থিত রেখেও নাটক সাজানোর অভিযোগও ওঠছে গণমাধ্যমে। ফলে একদিকে যখন ডেঙ্গু সকল মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে তখন ডেঙ্গু নিয়ে নানা হতাশার খবরই শুনতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
জনস্বাস্থ্যবিদ অধ্যাপক বে-নজির আহমেদ বলেছেন, আমাদের প্রাকৃতিক পরিণতির জন্য অপেক্ষা করতে হবে। অর্থাৎ বৃষ্টিপাত ও তাপমাত্রা পরিবর্তনের কারণে মশা কমলে ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাবও নিয়ন্ত্রণে আসবে।
আই নিউজ/এইচএ
- কাল থেকে যেসব শাখায় পাওয়া যাবে নতুন টাকার নোট
- 'জাতীয় মুক্তি মঞ্চ' গঠনের ঘোষণা
- এক বছরেই শক্তি, ক্ষিপ্রতা জৌলুস হারিয়ে 'হীরা' এখন বৃদ্ধ মৃত্যুপথযাত্রী
- ওয়াহিদ সরদার: গাছ বাঁচাতে লড়ে যাওয়া এক সৈনিক
- ভারতবর্ষে মুসলিম শাসনের ইতিকথা (প্রথম পর্ব)
- এবার ভাইরাস বিরোধী মাস্ক বানিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিলো বাংলাদেশ
- মায়েরখাবারের জন্য ভিক্ষা করছে শিশু
- ২৫ কেজি স্বর্ণ বিক্রি করল বাংলাদেশ ব্যাংক
- ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ
- তালিকা হবে রাজাকারদের