আই নিউজ ডেস্ক
জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি

ফাইল ছবি
বহুদিনের আলোচনা, সমালোচনা আর বিতর্কের পর অবশেষে বাংলাদেশের রাজনীতিতে নিষিদ্ধ হলো ধর্মভিত্তিক সংগঠন জামায়াতে ইসলামী এবং দলটির ছাত্র সংগঠন ছাত্রশিবির। সংগঠনগুলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে আজ বৃহস্পতিবার (০১ জুলাই) প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার।
বৃহস্পতিবার বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জামায়াত-শিবিরকে মোকাবিলায় দলীয় নেতাকর্মী ও দেশপ্রেমিক জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
আজ রাজধানীর খামারবাড়িতে কেআইবি ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে কৃষক লীগ আয়োজিত স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি, আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওরা তো (জামায়াত-শিবির) জঙ্গিবাদী হিসেবে আন্ডারগ্রাউন্ডে গিয়ে আবার ধ্বংস করার চেষ্টা করবে। এ কারণে জঙ্গি সংগঠন হিসেবে এদের মোকাবিলা করা ও মানুষকে রক্ষা করার চেষ্টা সবাই মিলে করতে হবে।
এর আগে দুপুরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, কিছুক্ষণের মধ্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। আজ দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।
আইনমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৮/১ ধারায় জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র শিবিরসহ এর অঙ্গসংগঠন রাজনৈতকিভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিছুক্ষণের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী ও দলটির ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির নিষিদ্ধ করার ফাইল ভেটিং (বাংলাদেশের মতামত) করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
জামায়াতে ইসলামী আন্ডারগ্রাউন্ডে গিয়ে কোনো কিছু করার চেষ্টা করলে সরকারের সেই প্রস্তুতি আছে বলেও জানান মন্ত্রী।
বুধবারের মধ্যে জামায়াত নিষিদ্ধ হওয়ার কথা জানালেও আইনমন্ত্রী আজ জামায়াত নিষিদ্ধ করার প্রজ্ঞাপন জারির কথা বলেন।
এর আগে বুধবার (৩১ জুলাই) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সন্ত্রাস দমন আইনের ১৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জামায়াতকে যেকোনো সময় নিষিদ্ধ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন। মন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাস দমন আইনের ১৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে।
এক নজরে জামায়াতে ইসলামীর বিতর্কিত ইতিহাস
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল জামায়াত। যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলায় দলটির সাবেক আমির মতিউর রহমান নিজামীসহ শীর্ষনেতাদের সাজা হয়েছে। গঠিত বিশেষ ট্রাইবুনালে বিচারের পর মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, আবদুল কাদের মোল্লা এবং মোহাম্মদ কামারুজ্জামানসহ পাঁচ নেতার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
জামায়াতের আমির অধ্যাপক গোলাম আযমের মামলার রায়ে জামায়াতকে একটি ‘ক্রিমিনাল সংগঠন’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে বলা হয়, জামায়াত একটি অপরাধী সংগঠন। একাত্তরে তাদের ভূমিকা ছিল দেশের স্বার্থের পরিপন্থি।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে ১৯৭২ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত নিষিদ্ধ ছিল জামায়াত। রাজনৈতিক নানা পট পরিবর্তনের পর দেশের রাজনীতিতে আবারও সক্রিয় হয় জামায়াত। ১৯৮৬ সালে প্রথম বাংলাদেশে নির্বাচনে অংশ নেয় দলটি। ২০০১ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার গঠন করলে জামায়াতের কয়েকজন নেতা মন্ত্রিসভায়ও স্থান পান, যা তখন ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়।
২০০৮ সালে জামায়াতে ইসলামীকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন দেওয়া হয়। এরপর দলটির নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০০৯ সালে রিট আবেদন করেন তরিকত ফেডারেশনের তৎকালীন মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ ২৫ ব্যক্তি। ২০১৩ সালের ১ আগস্ট হাইকোর্ট জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে রায় ঘোষণা করেন। ২০১৮ সালের ৮ ডিসেম্বর দলটির নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন।
আই নিউজ/এইচএ
- কাল থেকে যেসব শাখায় পাওয়া যাবে নতুন টাকার নোট
- 'জাতীয় মুক্তি মঞ্চ' গঠনের ঘোষণা
- এক বছরেই শক্তি, ক্ষিপ্রতা জৌলুস হারিয়ে 'হীরা' এখন বৃদ্ধ মৃত্যুপথযাত্রী
- ওয়াহিদ সরদার: গাছ বাঁচাতে লড়ে যাওয়া এক সৈনিক
- ভারতবর্ষে মুসলিম শাসনের ইতিকথা (প্রথম পর্ব)
- এবার ভাইরাস বিরোধী মাস্ক বানিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিলো বাংলাদেশ
- মায়েরখাবারের জন্য ভিক্ষা করছে শিশু
- ২৫ কেজি স্বর্ণ বিক্রি করল বাংলাদেশ ব্যাংক
- ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ
- তালিকা হবে রাজাকারদের