Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, বুধবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ১০ ১৪৩২

আই নিউজ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৪:১৭, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

কেউ যেন হয়রানিমূলক হামলা-মামলার শিকার না হন: তারেক রহমান 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি- সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি- সংগৃহীত

দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আপনারাই বিএনপির প্রাণ। শত নির্যাতন নিপীড়ন হামলা, মামলা, হয়রানি শিকার হয়েও আপনারা জাতীয়তাবাদের আদর্শচ্যুত হননি। তবে, কেউ যেন হয়রানিমূলক হামলা-মামলার শিকার না হন বিএনপি নেতাকর্মীদের তা লক্ষ্য রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। 

রোববার (১ সেপ্টেম্বর) বিএনপির ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এ কথা বলেন তিনি।

তারেক রহমান বলেন, ‘এবার আমি সারা দেশে আমার দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলতে চাই আপনারাই বিএনপির প্রাণ। শত নির্যাতন নিপীড়ন হামলা, মামলা, হয়রানি শিকার হয়েও আপনারা জাতীয়তাবাদের আদর্শচ্যুত হননি। আমি জানি, অতীতে বছরের পর বছর ধরে আপনাদের অনেকেই মাফিয়া সরকার এবং তাদের দোসরদের দ্বারা নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। তবে বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আপনাদের প্রতি আমার একটি অনুরোধ অতীতে নির্যাতনের শিকার হওয়ার কারণে আপনারা কেউ প্রতিশোধ পরায়ণ হবেন না। কেউ নিজের হাতে আইন তুলে নেবেন না। বরং অন্যায় অবিচারের শিকার হলে আইনগত পদক্ষেপ নিন। তবে খেয়াল রাখবেন কেউ যেন হয়রানিমূলক হামলা-মামলার শিকার না হন।’

তারেক রহমান বলেন, ‘দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভেচ্ছা। প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ পর্যন্ত রাষ্ট্র পরিচালনা কিংবা বিরোধী রাজনৈতিক দল হিসেবে দেশে গণতন্ত্র এবং মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে বিএনপি দেশ এবং জনগণের স্বার্থ সমুন্নত রেখেছে। এ কারণেই, শত প্রতিকূল পরিস্থিতি পেরিয়েও দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণের কাছে স্বাধীনতার ঘোষকের দল বিএনপি সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বিশ্বস্ত রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। যাদের নেতৃত্বে, যাদের আত্মত্যাগে, যাদের শ্রম, ঘাম, মেধায় বিএনপি আজ সারা দেশের জনগণের কাছে বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই শুভলঘ্নে তাদের সবার অবদানকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশ বর্তমানে ইতিহাসের এক সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়িয়েছে। ছাত্র জনতার আকাঙ্ক্ষার বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার কঠিন এক চ্যালেঞ্জের মুখে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। হাজারো শহীদের আত্মত্যাগ আর অসংখ্য ছাত্র জনতার নিদারুণ যন্ত্রণাকর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গত ৫ আগস্ট দেশ স্বৈরাচারমুক্ত হয়েছে। তবে গণ অভ্যুত্থানের সাফল্য এবং সম্ভাবনা নস্যাৎ করে দিতে স্বৈরাচারের দোসররা এখনো ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের পক্ষের শক্তি সর্তক থাকলে বাংলাদেশকে আর বিপথে নেয়া যাবে না। আর পথ হারাবে না বাংলাদেশ।

‘ষড়যন্ত্র কিংবা অপপ্রচার চালিয়ে গত ১৫ বছরের অনাচার অবিচার জনগণকে ভুলিয়ে দেয়া যাবে না। রাষ্ট্রীয় স্থাপনা গণভবন ছিল দেশের রাষ্ট্র ও রাজনীতির ঐতিহ্যবাহী স্মারক। গণভবন বর্তমানে স্বৈরাচারী হাসিনার দুর্নীতি দুঃশাসন,অনাচার, অপকর্মের প্রতীক। ইতোমধ্যেই বিভিন্ন মহল থেকে এই গণভবনকে গুম, খুন, অপহরণ এবং গণহত্যার মিউজিয়াম হিসেবে প্রতিষ্ঠার দাবি উঠেছে। ২০০৯ সালের পিলখানায় সেনাহত্যা থেকে শুরু করে ২০১৩ সালের শাপলা চত্বর হত্যাকাণ্ড ২০১২, ২০১৪, ২০১৫, ২০১৮, ২০২২ এবং ২০২৩ সালে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনের সময় গুম ও বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, ২০১৮ সালের কোটাবিরোধী এবং নিরাপদ সড়ক আন্দোলন ২০২৪ সালে গণ অভ্যুত্থানে শহীদ এবং গুম হওয়া মানুষদের স্মৃতিগুলো এই মিউজিয়ামে সংরক্ষিত থাকবে। অবৈধ ক্ষমতায় থাকার জন্য বাংলাদেশে আর কোনো শাসক যাতে স্বৈরাচারী হাসিনার মতো বর্বরোচিত পথ অনুসরণ না করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এই মিউজিয়াম সেই বার্তাই বহন করবে,’ বলেন তারেক রহমান।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন গণ অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের পথে রয়েছে এমন সময় হঠাৎ করেই চাপিয়ে দেয়া বন্যা পরিস্থিতি দেশের পূর্বাঞ্চলের বিস্তৃত অঞ্চল গ্রাস করে নিয়েছে। বন্যার করাল গ্রাসে প্রায় এক কোটি মানুষ কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক মানুষ মারা গেছেন। বিনষ্ট হয়েছে সম্পদ। এমন পরিস্থিতিতে, সাধ্যমতো বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে বিএনপি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সকল কর্মসূচি বাতিল করেছে। ইতোমধ্যে কোনো কোনো এলাকায় বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। ফলে যারা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এই মুহূর্তে তাদেরকে বন্যা বিধ্বস্ত ঘরে ফেরানো কিংবা তাদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া বন্যাকালীন পরিস্থিতি থেকেও কিছুটা জটিল। সুতরাং, আপনারা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি আপনাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখুন। সমন্বিতভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ান। বিশেষ করে যেসব পরিবারে নারী শিশু বৃদ্ধ কিংবা বৃদ্ধা রয়েছেন অগ্রাধিকারভিত্তিতে তাদের প্রতি সহায়তার হাত বাড়ান। সফলজনকভাবে বন্যা পুনর্বাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে একজন নাগরিক হিসেবে সরকারি উদ্যোগ বাস্তবায়নেও সক্রিয় ভূমিকা রাখুন।’

আই নিউজ/এইচএ 

Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়