আপডেট: ১২:১৭, ২৫ জুলাই ২০১৯
সকল আশংকা মিথ্যা হোক, শান্তিতে থাকুক দেশের মানুষ
বন্যা, প্রিয়া সাহার বক্তব্য, ছেলেধরার গুজবের মাঝখানে আরেকটা বড় খবর অনেকটাই চাপা পড়ে গেছে। দুদিন আগে রাস্তায় পরিত্যাক্ত অবস্থায় পাওয়া শক্তিশালী বোমা। নিঃসন্দেহে এটা বাংলাদেশের জন্য সুখকর কিংবা বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনা নয়।দেবজ্যোতি দেবু
গুজব এবং গণধোলাই, বিষয়টাকে মোটেও আকস্মিক কিংবা বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে মনে করতে পারছি না বলে দুঃখিত।
সর্বপ্রথম পদ্মা সেতুর জন্য মাথা লাগবে বলে যখন গুজব ছড়ানো হলো তখন বিষয়টাকে অধিকাংশ মানুষই সিরিয়াসলি নেয়নি। ট্রলও অনেক হতে দেখেছি এই ইস্যুতে। এরপর যখন গুজব ছড়ানোর সাথে জড়িত একজনকে গ্রেফতার করা হলো, তখন জানা গেল সে একা নয়। তার সাথে আরো কয়েকজন আছে যারা পরিকল্পনা মাফিক খুব কৌশলে এই কাজটা করেছে। কিন্তু তারা কেন করেছে, কাদের ইন্ধনে করেছে সেটা এখনো পরিষ্কার করে জানানো হয়নি। কেন জানানো হয়নি, সেটাও ক্লিয়ার নই। তখন যদি ইন্ধনদাতা এবং তাদের মূল উদ্দেশ্য সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে জানানো হতো, তাহলে হয়তো গুজব ছড়ানোটা কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে রাখা যেত।
যারা গুজব ছড়ানোর দায়িত্ব পেয়েছিল কিংবা ছড়াতে চেয়েছিল তারা এখন পর্যন্ত সফল। কারণ গ্রামের নিরক্ষর খেটে খাওয়া মানুষ থেকে শুরু করে শহরের উচ্চশিক্ষিত মানুষের পরিবার পর্যন্ত এই গুজবকে সত্য বলে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে। যদিও শুরুতে অনেকেই বিশ্বাস করেনি। তাই গণধোলাইয়কে দ্বিতীয় ধাপ হিসেবে ব্যবহার করে সেটা বিশ্বাসযোগ্য করা হয়েছে।
গণধোলাইয়ের বিষয়টা আরো ইন্টারেস্টিং। এখন পর্যন্ত যতগুলো গণধোলাইয়ের ঘটনার খবর পড়লাম তার প্রায় সবগুলোই একই রকম গল্প নিয়ে মঞ্চায়িত। প্রতিটা ঘটনায় একজন বা দুইজন থাকে যারা টার্গেটের পথ রোধ করে। নাজেহাল করার জন্য নানা রকম উদ্ভট প্রশ্ন করে। স্বাভাবিক কারণেই উত্তর দিতে সমস্যা হয় তাদের। ইতিমধ্যে উৎসুক জনতার ভিড় জমে। আর তখনই ঐ টার্গেটকারী লোকটা ভিকটিমকে ধরে ছেলেধরা অপবাদ দিয়ে মারতে শুরু করে। দুয়েক ঘা দেয়ার পরেই ভিড় থেকে অনেকেই হাত সাফ করতে এগিয়ে আসে এবং সবশেষে কেউ একজন উদ্যোগী হয়ে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে উপস্থিত হয়। যখন পুলিশ তদন্ত করতে গিয়ে উপস্থিত জনতাকে প্রশ্ন করা শুরু করে তখন কিন্তু শুরুতে টার্গেটকারী ঐ একজন বা দুইজনকে খুঁজে পাওয়া যায় না। এখন পর্যন্ত আমি পথরোধকারী ঐ প্রথম মানুষটার ভাষ্য খুব কম খবরেই পেয়েছি। তার মানে সে তার কাজ উদ্ধার করে সুযোগ বুঝে সটকে পড়েছে। আরো ইন্টারেস্টিং বিষয় হচ্ছে, এদের অনেকেই স্থানীয় না কিংবা এদের অনেকের পরিচয়ই কেউ জানে না।
এর থেকে একটা বিষয় আমার কাছে মোটামুটি পরিষ্কার যে, পরিকল্পনা মাফিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে প্রতিটা জায়গায় টার্গেট করে করে এই ঘটনাগুলো শুরুতে ঘটানো হয়েছে। অবশ্য টার্গেটেড ভিকটিমের সাথে তাদের কোন ব্যক্তিগত শত্রুতা না থাকার সম্ভাবনাই বেশি। তিনি শুধুই পরিকল্পনার শিকার মাত্র। দুদিন আগে পর্যন্ত বিষয়টা এমনই ছিল। এরপর থেকে যখন এটা মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে পুরো দেশে তখন থেকে আর পরিকল্পনাকারীদের খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। পাব্লিক নিজেই দায়িত্ব নিয়ে ওদের উদ্দেশ্য সফল করে দিচ্ছে।
হয়তো বলবেন সারাদেশে এমন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য এতো লোকবল এলো কোত্থেকে? উত্তর হচ্ছে, অতীতে আমরা হরতালে পিকেটিং করতে, বাসে আগুন দিতে ভাড়া করা মানুষদের পরিচয় জেনেছি খবরের কাগজ পড়ে। তারমানে টাকা খরচ করলে এই দেশে যে কোন কাজের জন্যই মানুষ পাওয়া যায়। যাদের মূল পরিকল্পনার কিছু জানাতে হয় না। শুধু টাকা দিয়ে কাজ বুঝিয়ে দিলেই চলে। দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশে জঙ্গি আতঙ্ক আজকের নতুন কিছু নয়। জঙ্গিবাদ ছড়াতে যদি হাজার হাজার জেহাদি পাওয়া যায় তাহলে এমন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে লোক পাওয়া যাবে না? এটাও বিশ্বাস করেন? এরপর আরেকটা গ্রুপ আছে যারা মাদকের জন্য হাজারটা খুন করতেও কোনকিছু চিন্তা করে না। তাদের সংখ্যাও কিন্তু কম না। প্রয়োজন শুধু এদের কাজে লাগানোর মত একজন দক্ষ মানুষের।
ঘটনা এখানেই থেমে নেই। বন্যা, প্রিয়া সাহার বক্তব্য, ছেলেধরার গুজবের মাঝখানে আরেকটা বড় খবর অনেকটাই চাপা পড়ে গেছে। দুদিন আগে রাস্তায় পরিত্যাক্ত অবস্থায় পাওয়া শক্তিশালী বোমা। নিঃসন্দেহে এটা বাংলাদেশের জন্য সুখকর কিংবা বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনা নয়।
সব মিলিয়ে আমি নানা কারণেই বাংলাদেশকে বর্তমানে খুবই অস্থিতিশীল অবস্থায় দেখছি। প্রতিটি মুহূর্ত নিয়ে আতংকে আছি। বড় কোন মাস্টার প্ল্যানের আশংকায় আছি। আমি খুব করে চাই এই আশংকা মিথ্যা হোক। দেশের মানুষ শান্তিতে থাকুক। কিন্তু সেটা যদি না হয় তাহলে এই ধাক্কা সামলে উঠতে পারবেতো আমাদের সরকার?
লেখক – দেবজ্যোতি দেবু, সংস্কৃতি কর্মী- কাল থেকে যেসব শাখায় পাওয়া যাবে নতুন টাকার নোট
- 'জাতীয় মুক্তি মঞ্চ' গঠনের ঘোষণা
- এক বছরেই শক্তি, ক্ষিপ্রতা জৌলুস হারিয়ে 'হীরা' এখন বৃদ্ধ মৃত্যুপথযাত্রী
- ওয়াহিদ সরদার: গাছ বাঁচাতে লড়ে যাওয়া এক সৈনিক
- ভারতবর্ষে মুসলিম শাসনের ইতিকথা (প্রথম পর্ব)
- এবার ভাইরাস বিরোধী মাস্ক বানিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিলো বাংলাদেশ
- মায়েরখাবারের জন্য ভিক্ষা করছে শিশু
- ২৫ কেজি স্বর্ণ বিক্রি করল বাংলাদেশ ব্যাংক
- ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ
- তালিকা হবে রাজাকারদের