মোস্তফা মনজুর
আপডেট: ১৩:২২, ২৯ এপ্রিল ২০২১
পবিত্র মাহে রমজান ও করণীয় আমল (পর্ব ৬)

মনে রাখবেন আমাদের প্রিয়নবী (স) দৈনিক ৭০ বারেরও অধিক ইস্তিগফার করতেন। আর আমরা? একবার বলতেও ভয় পাই। আমাদের তো ৭০ কোটি বার ইস্তিগফার করলেও তা যথেষ্ট হওয়ার কথা না। তাছাড়া এক পাপের জন্য ৭০ বার তাওবা ও ইস্তিগফার করার কথাও এসেছে। সুতরাং, আমরা তাওবা ও ইস্তিগফারের সুযোগ কেন ছাড়ব?
আলহামদুলিল্লাহ, নাহমাদুহু ওয়া নুছাল্লী আলা রাসূলিহিল কারীম
ইস্তিগফার ও তাওবা
মাহে রমজান এই উম্মতের জন্য একটি বিশেষ নিআমত। বিশেষ করে নিজের গুনাহ মাফের সবচেয়ে উত্তম সময়। রমজান পাওয়ার পরও যদি আমরা গুনাহগার হিসেবেই ঈদের মাঠে উপস্থিত হই তাহলে আমাদের চাইতে বড় দূর্ভাগা আর কেউ নেই।
এমনিতেই আল্লাহ তাআলা উছিলা খুঁজেন বান্দাকে মাফ করে দেওয়ার জন্য। তার উপর রমজানের অবারিত রহমত ও মাগফিরাতের সুযোগ বিরাট গাধা ছাড়া আর কেউ অবহেলা করার কথা না। রোজাদারদের ক্ষমা প্রার্থনা আল্লাহ কবুল করেন। আমাদের মালিক শুধু অপেক্ষায় আছেন কখন আমরা তাঁর দিকে ফিরে যাব, তাঁর কাছে কৃত পাপের ক্ষমা চাইব। বিশ্বাস করুন, আপনার ক্ষমা চাইতে সময় লাগতে পারে, কিন্তু আল্লাহ তাআলার ক্ষমার ঘোষণা আসতে দেরি হয় না, যদি আন্তরিকভাবে ক্ষমা চান।
রমজানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ ও আমল হচ্ছে তাওবা ও ইস্তিগফার। নিজের প্রতিটি পাপের কথা স্মরণ করে ক্ষমা চান, শেষ রাতে জায়নামাজে কাঁদুন, দেখবেন স্বর্গীয় অনুভূতি কাকে বলে। অনেক জায়গাতেই তো স্বর্গীয় অনুভূতির কথা শুনেছেন, পড়েছেন; কিন্তু অনুভব করা আমাদের অনেকেরই হয়নি। খালিস তাওবা ও ইস্তিগফার করার পর আপনি সে অনুভূতি লাভ করবেন।
রমজানে শুধু আনুষ্ঠানিকভাবে নয়, বরং সদাসর্বদাই ইস্তিগফারের আমল করা উচিত। উঠতে, বসতে, দাঁড়ানো শোয়া সব অবস্থাতেই ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত। কখন আল্লাহ তাআলা কবুল করে নেবেন তা তিনিই ভালো জানেন।
তাছাড়া আমাদের দীলের যে অবস্থা, সত্যিকারের তাওবা বা ইস্তিগফার কয়জনের নসীব হয় তা বলা কঠিন। দুনিয়ার মহব্বতে আমাদের অন্তর এতই গাফিল যে, এই দুর্যোগেও আমরা লম্বা জীবনের আশা করি, ভেবে বসে আছি, আরেকটু বয়স হোক তারপর না হয় তাওবা করা যাবে।
কিন্তু, কে জানে আমরা কে সে সুযোগ পাব। এই রমজানই হয়ত আমাদের শেষ রমজান। তাই বেশি করে ইস্তিগফার করি। হয়ত তেমন আন্তরিকতা না থাকলেও, শুধু বেশি বেশি বলার কারণেও আল্লাহ তাআলা আমাদের মাফ করে দিতে পারেন, তিনি তো রাহমানুর রাহীম।
মনে রাখবেন আমাদের প্রিয়নবী (স) দৈনিক ৭০ বারেরও অধিক ইস্তিগফার করতেন। আর আমরা? একবার বলতেও ভয় পাই। আমাদের তো ৭০ কোটি বার ইস্তিগফার করলেও তা যথেষ্ট হওয়ার কথা না। তাছাড়া এক পাপের জন্য ৭০ বার তাওবা ও ইস্তিগফার করার কথাও এসেছে। সুতরাং, আমরা তাওবা ও ইস্তিগফারের সুযোগ কেন ছাড়ব?
আরো একটি কথা, অনেকে ভাবি - তাওবা বা ইস্তিগফার করে কী লাভ? আমার মনে তো আর সে আন্তরিকতা নেই। তবুও করুন। কেননা বছরের পর বছর ধরে যে মন নষ্ট হয়েছে, তা একদিনে ঠিক হবে না। তবে ইস্তিগফারের ব্যাপার ভিন্ন। আপনি যতই করবেন ততই আপনার লাভ, তাতে আপনি একনিষ্ঠ হতে পারুন আর না-ই পারুন। মেহেরবানী করে আল্লাহ তাআলা যদি আপনার কোন একটি ইস্তিগফারও কবুল করে নেন, তাহলে সম্ভবত এই রমজানে আপনি সৌভাগ্যবানদের দলেই যোগ দিলেন।
রমজানের রহমত লাভের জন্যও নিজেকে প্রস্তুত করা উচিত। ইস্তিগফার হচ্ছে সে প্রস্তুতি। অতএব, আন্তরিক তাওবা ও ইস্তিগফারের মাধ্যমে রমজানে নিজেকে প্রস্তুত করা উচিত। আর যদি আন্তরিকতা নাও আসে তবুও ইস্তিগফারের আমল করব। শুধু মনে রাখবেন এই রমজান যেন আমাকে গুনাহ থেকে মুক্ত না করে চলে না যায়। এবার কীভাবে নিজেকে আল্লাহর দরবারে মাফ করাবেন তা আপনি আমার চাইতে ভালোই জানেন।
চলবে...
মোস্তফা মনজুর, সহকারি অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও
পিএইচডি গবেষক, নটিংহ্যাম ইউনিভার্সিটি, ইংল্যান্ড
- কাল থেকে যেসব শাখায় পাওয়া যাবে নতুন টাকার নোট
- 'জাতীয় মুক্তি মঞ্চ' গঠনের ঘোষণা
- এক বছরেই শক্তি, ক্ষিপ্রতা জৌলুস হারিয়ে 'হীরা' এখন বৃদ্ধ মৃত্যুপথযাত্রী
- ওয়াহিদ সরদার: গাছ বাঁচাতে লড়ে যাওয়া এক সৈনিক
- ভারতবর্ষে মুসলিম শাসনের ইতিকথা (প্রথম পর্ব)
- এবার ভাইরাস বিরোধী মাস্ক বানিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিলো বাংলাদেশ
- মায়েরখাবারের জন্য ভিক্ষা করছে শিশু
- ২৫ কেজি স্বর্ণ বিক্রি করল বাংলাদেশ ব্যাংক
- ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ
- তালিকা হবে রাজাকারদের