নিজস্ব প্রতিবেদক
রানি এলিজাবেথ একজন মাতৃত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব ছিলেন : প্রধানমন্ত্রী

বিবিসির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্যে অংশ নিতেনে ব্রিটেনে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে বিবিসির সঙ্গে রানিকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘আমি মনে করি যে এই বিশ্বের জন্য তিনি কেবল একজন রানিই ছিলেন না, তিনি একজন অত্যন্ত স্নেহময় এবং মাতৃত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বও ছিলেন। যখনই আমি তার সাথে দেখা করেছি, আমি এটি অনুভব করেছি।’
বিবিসিকে দেয়া ওই সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে ঘিরে তার অনেক স্মৃতির কথা বলেন।
সাক্ষাৎকারে এলিজাবেথের সাথে ব্যক্তিগত স্মৃতি নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৬১ সালে যখন তিনি (রানি) তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সফর করেছিলেন এবং তিনি তাকে (ব্যক্তিগতভাবে প্রথমবার) দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন। তখন আমরা খুব ছোট এবং আমার বাবার (বঙ্গবন্ধুর) অফিসে গিয়েছিলাম, কারণ, আমরা জানতাম যে তিনি সেই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। তাই, আমরা সবাই, পুরো পরিবার, দূরবীন নিয়ে জানালায় অপেক্ষা করেছি। ফলে, আমরা তাকে আরও স্পষ্টভাবে দেখতে পেয়েছি।
এছাড়াও কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনেও কয়েকবার রানির সাথে দেখা করেছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি প্রায় সাতটি কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছি। প্রতিবারই আমি তার সাথে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি। প্রয়াত রানির আমন্ত্রণে অলিম্পিক গেমসে যোগ দিতেও গিয়েছিলেন বলে তারা দীর্ঘদিন ধরে একে অপরের সাথে আলাপ আলোচনা করেছেন।
প্রয়াত রানির সঙ্গে সুন্দর স্মৃতির কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘তার চমৎকার স্মৃতিশক্তি ছিল এবং তিনি আমাকে না দেখলে হাসিনা কোথায় ছিলেন বলতেন। তিনি কমনওয়েলথেরও একজন নেতা। কমনওয়েলথ দেশগুলোর একজন সদস্য হিসাবে, তিনি আমাদের কাছে অনেক মূল্যবান ছিলেন।
এছাড়াও এদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের রাজনীতি ও তার সরকারের ব্যাপারে বলেছেন, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি নিজে সংগ্রাম করেছেন এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ শাসন আমলেই হয়েছে।
বিবিসির সাংবাদিক লরা কুনেসবার্গের এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, অবশ্যই, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন প্রতিষ্ঠার জন্যই আমার সংগ্রাম। শুধু আওয়ামী লীগের আমলেই আপনারা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে পাবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গুমের বিষয়ে অনেকেই অভিযোগ করতে পারেন, কিন্তু তা কতটা সত্য তা বিচার করতে হবে।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে আমার বাবাকে (জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) হত্যা করা হয়। তিনি তখন দেশের রাষ্ট্রপতি ছিলেন এবং আপনি জানেন যে আমার পুরো পরিবার, আমার মা, আমার তিন ভাই, দুই ভাতৃবধু, পরিবারের অন্যান্য সদস্যসহ মোট ১৮ জন সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। তারপর থেকে ২১ বছর ধরে, যে দেশটি বারবার অভ্যুত্থান প্রত্যক্ষ করেছে। তিনি যোগ করেন যে প্রায় ২০ বার অভ্যুত্থানের চেষ্টা হয়েছে এবং প্রতিবার রক্তপাত হয়েছে।
শেখ হসিনা বলেন, সেখানে গণতন্ত্র ছিল না, গণতান্ত্রিক অধিকার ছিল না, তাই আমি আমার দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছি।
নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, অনেকেই অভিযোগ করতে পারে, কিন্তু এটা কতদূর সত্য, বিচার করতে হবে। এটা জানার আগে কেউ কোনো মন্তব্য করবেন না।
প্রধানমন্ত্রী বিবিসিকে বলেন, সামরিক শাসকরা দীর্ঘদিন ধরে দেশ শাসন করেছে এবং তারা দল গঠন করেছে এবং ভোটের জন্য তারা কখনো জনগণের কাছে যায়নি। তারা (সামরিক স্বৈরশাসক) সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করেছে, প্রশাসনকে ব্যবহার করেছে এবং ক্ষমতায় থাকার জন্য সবকিছু ব্যবহার করেছেন।
নিখোঁজের অভিযোগের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বিবিসি সাংবাদিককে প্রশ্ন করেন, আপনার দেশে এবং অন্যান্য দেশে কত লোক নিখোঁজ হয়েছে? আপনি বিচার করতে পারেন। এই সমস্ত বিষয় আমি মনে করি, প্রথমে আপনাকে (বিবেচনায়) নিতে হবে। সমস্ত তথ্য আপনার সংগ্রহ করা উচিত, তারপর আপনি অভিযুক্ত করতে পারেন।
আপনার এবং বাংলাদেশের কাছে কমনওয়েলথের গুরুত্ব কতটা, এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অবশ্যই (এর মূল্য অনেক বেশি), যখন আমরা একসাথে থাকি, সেখানে অনেক সুযোগ থাকে, তাই, এটা ভালো এবং গুরুত্বপূর্ণ কারণ আমাদের একটা জায়গা আছে যেখানে আমরা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বিনিময় করতে পারি। কিছু ধারণা গ্রহণ করতে পারি বা দেশ বা জনগণের জন্য কিছু ভাল কাজ করতে পারি। তাই, আমার মনে হয় এটা ভালো।
তিনি বলেন, বর্তমানে, আপনি দেখতে পাচ্ছেন, যে একটি দেশ একা চলতে পারে না। কারণ, এটি একটি আন্তঃনির্ভর বিশ্ব, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী এবং বলেন, সুতরাং, এই পরিস্থিতিতে, সদস্য দেশগুলোর জন্য কমনওয়েলথের অর্থ অনেক বড়। প্রতিটি দেশ একসাথে কাজ করতে পারে- কারণ, অনেক দেশ আছে, উন্নত দেশ, উন্নয়নশীল দেশ এবং দরিদ্র দেশ, ছোট দ্বীপ দেশ।
আইনিউজ/এইচএ
আইনিউজে আরও পড়ুন-
- ২০ হাজার গানের জনক গাজী মাজহারুল আনোয়ার ও তার কীর্তি
- প্রেম-ভালোবাসার ১০ উপকারিতা : শ্রেষ্ঠ কিছু প্রেমের গল্প
- কোমরে বাশি, হাতে তালি — গানই মদিনা ভাই’র জীবন-মরণ
দেখুন আইনিউজের ভিডিও গ্যালারি
সৌদি আরবে মেয়েকে নির্যাতনের খবরে মায়ের আহাজারি-কান্না
গ্রিসের বস্তিতে বাংলাদেশীদের মানবেতর জীবন, অধিকাংশই সিলেটি
গ্রিসে পাঁচ বছরের ভিসা পাবে বাংলাদেশিরা
- কাল থেকে যেসব শাখায় পাওয়া যাবে নতুন টাকার নোট
- 'জাতীয় মুক্তি মঞ্চ' গঠনের ঘোষণা
- এক বছরেই শক্তি, ক্ষিপ্রতা জৌলুস হারিয়ে 'হীরা' এখন বৃদ্ধ মৃত্যুপথযাত্রী
- ওয়াহিদ সরদার: গাছ বাঁচাতে লড়ে যাওয়া এক সৈনিক
- ভারতবর্ষে মুসলিম শাসনের ইতিকথা (প্রথম পর্ব)
- এবার ভাইরাস বিরোধী মাস্ক বানিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিলো বাংলাদেশ
- মায়েরখাবারের জন্য ভিক্ষা করছে শিশু
- ২৫ কেজি স্বর্ণ বিক্রি করল বাংলাদেশ ব্যাংক
- ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ
- তালিকা হবে রাজাকারদের