নিজস্ব প্রতিবেদক
খুলনা ও বরিশাল দুই সিটিতেই নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে : ইসি
আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবন থেকে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে ভোটকেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করছে ইসি। ছবি- সংগৃহীত
আজ দেশের দুই গুরুত্বপূর্ণ সিটি খুলনা সিটি কর্পোরেশন এবং বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে চলছে নির্বাচন। সোমবার (১২ জুন) সকাল ৮টা থেকে দুই সিটিতেই শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ কার্যক্রম। দুই সিটিতেই এখন পর্যন্ত খুব সুন্দর, সুষ্ঠু ও অবাধভাবে নির্বাচন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান (অব.)।
সোমবার সকাল থেকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবন থেকে দুই সিটির নির্বাচনের ভোটগ্রহণ কার্যক্রম সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে মনিটরিংয়ের মাধ্যমে সরাসরি দেখছেন ইসি কর্মকর্তা। মনিটরিংয়ের এক পর্যায়ে সাংবাদিকদের নির্বাচন নিয়ে এসব কথা বলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান।
মো. খান সাংবাদিকদের জানান, সিইসিসহ আমরা প্রত্যেকটা সিসি ক্যামেরা মনিটরিং করছি। সকাল থেকে এতো বেশি উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটার উপস্থিতি, যে কল্পনার বাইরে। নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের আশ্বস্ত করেছে এবং তাদের ভোটকেন্দ্রে আসতে উদ্বুদ্ধ করেছে।
তিনি বলেন, আমরা মাঠ পর্যায় থেকে রিপোর্ট পাচ্ছি আমাদের নিজস্ব পর্যবেক্ষক টিমের কাছ থেকে। বরিশালে আমাদের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ গেছেন এবং খুলনায় গেছেন যুগ্মসচিব মনিরুজ্জামান। তাদের সঙ্গে ১০ জন করে কর্মকর্তারা আছেন। তাদের কাছ থেকে যে ফিডব্যাকটা পেলাম- খুব সুন্দর, সুষ্ঠু এবং অবাধভাবে নির্বাচন হচ্ছে। কোনো প্রকার অসহযোগিতা কারো কাছ থেকে পাইনি। প্রথমত যারা ভোটার, তারা নির্বিঘ্নে কেন্দ্রে এসেছে। যারা প্রার্থী তারা সহযোগিতা করছে, যেকোনো প্রকার উচ্ছৃঙ্খল পরিস্থিতি হয় নাই। তৃতীয়ত, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং প্রশাসন এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন। সবাই মিলে এই পর্যন্ত নির্বাচন পরিচালনা করছে। ভোটাররা উৎসবমুখর পরিবেশে আনন্দের সঙ্গে ভোট দিচ্ছেন।
তিনি আরো বলেন, আমরা আশা করি- অতীতের চেয়ে ভোটার উপস্থিতি বেশি হবে। যেহেতু ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে ভোট হচ্ছে, তেমন কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। কারো পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ আসেনি। আশা করি শেষ পর্যন্ত এইভাবেই একটা সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে পারবো।
বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন : ছাপ মেলেনি জাপা প্রার্থীর
বরিশালে সমর্থকদের ভোটদানে একটি পক্ষ নিরুৎসাহিত করার অভিযোগ তোলেছেন একজন জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী। তাছাড়া, ভোটদানের সময় তাঁর আঙুলের ছাপ মেলেনি বলেও অভিযোগ তাঁর।
জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী ইকবাল হোসেন সোমবার (১২ জুন) সকাল সাড়ে ৮টায় নগরীর ২১ নম্বর ওয়ার্ডের সৈয়দ আব্দুল মান্নান ডি ডি এফ মাদরাসা কেন্দ্রে তিনি তার ভোট দেন।
ভোট দেয়ার পর সাংবাদিকদের তিনি জানান, তার সমর্থকদের ভোটকেন্দ্রে যেতে একটি পক্ষ নিরুৎসাহিত করছে। এছাড়া ভোট দিতে এসে তার আঙুলের ছাপ মেলেনি। পরে প্রিজাইডিং অফিসার ভোট প্রদানের ব্যবস্থা করে দেন। তবে সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত পরিস্থিতি ভালো রয়েছে বলে জানান তিনি।
বরিশাল সিটি নির্বাচনে প্রার্থী ও ভোটার সংখ্যা
অন্যদিকে বরিশাল সিটি করপোরেশনে (বিসিসি) সাতজন মেয়র প্রার্থী ছাড়াও ১১৮ জন সাধারণ ও ৪২ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী ভোটে লড়ছেন। এখানে ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৭৬ হাজার ২৯৮ জন। তাদের মধ্যে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৮৯ জন পুরুষ ও ১ লাখ ৩৮ হাজার ৮০৯ জন নারী।
বিসিসির মেয়র প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগের আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত, জাতীয় পার্টির প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম, জাকের পার্টির মিজানুর রহমান, স্বতন্ত্র হিসেবে সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামালের ছেলে সাবেক ছাত্রদল নেতা কামরুল আহসান রুপন প্রমুখ।
এক নজরে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন
৩টি থানা ও ৩০টি ওয়ার্ড এবং ২২৫টি মহল্লা নিয়ে গঠিত দেশের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল বরিশাল সিটি কর্পোরেশন। ১৮৬৯ সালে বরিশাল টাউন কমিটি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় ও ১৮৭৬ সালে বরিশাল মিউনিসিপ্যালিটিতে উন্নীত হয়। ১৯৮৫ সালে একে একটি প্রথম শ্রেনীর পৌরসভা হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
পরবর্তীতে ২০০২ সালে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন (সংশোধন) আইন ২০০২ এর মাধ্যমে পৌরসভা বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে উন্নীত হয়। বরিশাল একটি ব্যাবসা-বাণিজ্যের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হওয়ায় বরিশাল নগরী অন্যান্য সিটির মধ্যে অন্যতম।
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মোট জনসংখ্যা ৩,২৮,২৭৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১,৬৯,৪৭৫ জন এবং মহিলা ১,৫৮,৮০৩ জন। এই নগরীতে মোট বসবাসকারী পরিবার সংখ্যা ৭২,৭০৯টি।
খুলনা সিটি নির্বাচনে প্রার্থী ও ভোটার সংখ্যা
খুলনা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কেসিসি নির্বাচনে মেয়র পদে ৫ জন প্রার্থী এবং ৩১টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১৩৬ জন ও ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৩৯ জন কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। যার মধ্যে নগরীর ১৩ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে ২ জন কাউন্সিলর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
খুলনা সিটি নির্বাচনের এবারের নির্বাচন হবে ইভিএমে। নগরীর ৩১টি ওয়ার্ডে ২৮৯ ভোটকেন্দ্রের ১ হাজার ৭৩২টি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ করা হবে।
এক নজরে খুলনা সিটি কর্পোরেশন
খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান বিভাগীয় সিটি কর্পোরেশন। খুলনা সিটি কর্পোরেশনের আয়তন ৪৫ বর্গ কিলোমিটার। আর এই সিটির জনসংখ্যা ২০১৭ সালের হিসাব অনুযায়ী প্রায় পনেরো লক্ষ।
সর্বপ্রথম ১৮৮৪ সালে খুলনা নগরের মর্যাদা পায়। কলকাতা গেজেট অনুযায়ী ১৮৮৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর খুলনাকে মিউনিসিপাল বোর্ড ঘোষণা করা হয়। এরপর ১৩ ডিসেম্বর রেভারেন্ড গগন চন্দ্র দত্ত প্রথম চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করে। সেসময়ে টুটপাড়া, শেখপাড়া, চারাবাটি, হেলাতলা এবং কয়লাঘাট এলাকায় সমন্বয়ে খুলনা পৌর সরকার যাত্রা শুরু করে।
এদিকে ভোটগ্রহণ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সবধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মো. আশাদুল হক জানিয়েছেন, নির্বাচন ভবনের বেজমেন্টে স্থাপিত সিসিটিভি মনিটরিং কন্ট্রোল রুম থেকে খুলনা ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সরাসরি মনিটরিং করছেন কমিশন।
সম্প্রতি সিলেটে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল জানিয়েছিলেন, কেউ ভোট দিতে না পারলে তিনি যেন সিসি টিভি ক্যামেরায় চিৎকার করে বলেন। সে দেখে নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা নেবে।
উল্লেখ্য, আগামী ২১ জুন সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ২০২৩ অনুষ্ঠিত হবে।
আই নিউজ/এইচএ
- কাল থেকে যেসব শাখায় পাওয়া যাবে নতুন টাকার নোট
- 'জাতীয় মুক্তি মঞ্চ' গঠনের ঘোষণা
- এক বছরেই শক্তি, ক্ষিপ্রতা জৌলুস হারিয়ে 'হীরা' এখন বৃদ্ধ মৃত্যুপথযাত্রী
- ওয়াহিদ সরদার: গাছ বাঁচাতে লড়ে যাওয়া এক সৈনিক
- ভারতবর্ষে মুসলিম শাসনের ইতিকথা (প্রথম পর্ব)
- এবার ভাইরাস বিরোধী মাস্ক বানিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিলো বাংলাদেশ
- মায়েরখাবারের জন্য ভিক্ষা করছে শিশু
- ২৫ কেজি স্বর্ণ বিক্রি করল বাংলাদেশ ব্যাংক
- ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ
- তালিকা হবে রাজাকারদের