Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, রোববার   ২০ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ৭ ১৪৩২

আই নিউজ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮:৩৯, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

দেশে নদীর সংখ্যা নিয়ে নতুন তথ্য দিলো নদী রক্ষা কমিশন  

বাংলাদেশের একটি নদী।

বাংলাদেশের একটি নদী।

বাংলাদেশে মোট নদ-নদীর সংখ্যা সম্বলিত একটি তালিকা প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করেছে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন। সেই তালিকায় দেশে মোট নদ-নদীর সংখ্যা বলা হয়েছে ১ হাজার ৮টি। এসব নদীপথের দৈর্ঘ্য প্রায় ২২ হাজার কিলোমিটার।  অবশ্য গত আগস্টের ১০ তারিখে নদী রক্ষা কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক খসড়া তালিকায় মোট নদীর সংখ্যা বলা হয়েছিল ৯০৭।

আজ রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত ‘বাংলাদেশের নদ-নদী : সংজ্ঞা ও সংখ্যাবিষয়ক সেমিনার’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে নদ-নদীর সংখ্যা নিয়ে চূড়ান্ত এ তালিকা প্রকাশ করা হয়। 

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক প্রধান হাইড্রোলজিস্ট মো. আখতারুজ্জামান তালুকদার জানান, দেশে বর্তমানে ২০০ কিলোমিটারের বেশি নদী রয়েছে ১৪টি। এছাড়া ১০০ থেকে ১৯৯ কিলোমিটারের নদী রয়েছে ৪২টি, ১০ থেকে ৯৯ কিলোমিটারের নদী ৪৮০টি এবং ১ থেকে ৯ কিলোমিটারের দৈর্ঘ্যের নদীর সংখ্যা ৩৭৬টি। এক কিলোমিটারের‌ও কম দৈর্ঘ্যের নদী রয়েছে ৪১টি। সবচেয়ে বেশি নদী রয়েছে সুনামগঞ্জ জেলায় ৯৭টি। নদ-নদীর এই তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালে। তালিকা তৈরিতে তথ্যের প্রধান উৎস ছিল জেলা প্রশাসন।

এছাড়া, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক ৬ খণ্ডে প্রকাশিত নদ-নদীর তালিকা, সার্ভে অব বাংলাদেশ কর্তৃক প্রকাশিত প্রশাসনিক ম্যাপ ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ট্রাস্টি প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (সিইজিআইএস) ম্যাপ মাধ্যমিক (সেকেন্ডারি) উৎস হিসেবে ব্যবহার করা হয় এই গবেষণায়।

কমিশন জানিয়েছে, এই তালিকায় নদীর সংখ্যা সংযোজন ও বিয়োজনের কাজ চলমান থাকবে। এই তালিকা তৈরির কাজে তাদের কোনো অর্থ ব্যয় হয়নি। নিয়মিত দাফতারিক কাজের অংশ হিসেবেই এটি করা সম্ভব হয়েছে।

অনুষ্ঠানের শেষে নদী রক্ষা কমিশন নদ-নদীর তাদিকা সম্বলিত ‘বাংলাদেশের নদ-নদী: সংজ্ঞা ও সংখ্যা’ শীর্ষক ব‌ইয়ের মোড়ক উন্মোচন করে।

কমিশন বলছে, তালিকায় থাকা সব নদী জীবন্ত, অর্থাৎ এসব নদী মরে যায়নি। বর্ষায় এসব নদীতে পানি থাকে। কিছু নদী শুষ্ক মৌসুমে শুকিয়ে যায়। তবে একেবারে অস্তিত্ব নেই বা হারিয়ে গেছে—এমন কোনো নদী তাদের তালিকায় নেই।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন -পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মার্গুব মোর্শেদ, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মনজুর আহমেদ চৌধুরী প্রমুখ।

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশে কতটি নদ-নদী আছে, তার কোনো প্রামাণ্য দলিল ছিল না। পানি উন্নয়ন বোর্ড ৪০৫টি নদীর যে তালিকা তৈরি করেছে, তার তথ্য ভিত্তি স্পষ্ট নয়। বাংলাদেশের মানচিত্রেও যেসব নদীর উল্লেখ করা হয়, সেটিও পূর্ণাঙ্গ নয়। 

২০১৯ সাল থেকে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন নদ-নদীর তালিকা তৈরির কাজ হাতে নেয়। সেই কাজের সঙ্গে শুরু থেকে যুক্ত ছিলেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সদ্য সাবেক উপপরিচালক মো. আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘প্রতিটি জেলা প্রশাসকের কাছে আমরা চিঠি দিয়েছিলাম নিজ নিজ জেলার নদীর তালিকা তৈরি করতে। কারণ, জমিজমার সমস্ত দলিল সংরক্ষণের দায়িত্ব জেলা প্রশাসকের দপ্তরের। এ ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল জরিপ অধিদপ্তরের সিএস (ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভে) ও আরএস (রিভিশনাল সার্ভে) দলিলের ওপরে।’

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে জেলা প্রশাসকের কাছে স্পষ্টভাবে চারটি বিষয় জানতে চেয়েছিল: এক. প্রতিটি নদীর উৎস ও সমাপ্তি (যেখানে অন্য নদী বা সাগরের সঙ্গে মিশেছে) কোথায়; দুই. কোন কোন জেলার ওপর দিয়ে নদীটি বয়ে গেছে; তিন. কোন কোন উপজেলার ওপর দিয়ে নদীটি বয়ে গেছে এবং চার. নদীটির দৈর্ঘ্য কত। 

আই নিউজ/এইচএ 

Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়