প্রকাশিত: ১০:৩৯, ১৫ মে ২০১৯
আপডেট: ১০:৪৬, ১৫ মে ২০১৯
আপডেট: ১০:৪৬, ১৫ মে ২০১৯
মালেশিয়ায় সর্বনিম্ন বেতনধারী বাংলাদেশি শ্রমিক
আইনিউজ ডেস্ক: হাড়ভাঙ্গা-খাটুনি আর পরিশ্রমের জন্য পুরোটা মালয়েশিয়াজুড়ে বাংলাদেশি শ্রমিকদের সুনাম থাকলেও শ্রমের ন্যায্য মূল্যায়ন পাচ্ছেন না শ্রমিকরা। মালয়েশিয়ায় মজুরির দিক দিয়ে সর্বনিম্ন বেতনধারী হলেন বাংলাদেশি শ্রমিকেরা।
সম্প্রতি মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।
ভুক্তভোগীদের সাথে আলাপকালে জানা যায় , যেখানে ৮ ঘণ্টা কাজ করে চীন, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া কিংবা ভিয়েতনামের লোকজন মাসে বেতন পান সর্বনিম্ন ৩ হাজার মালয়েশী রিঙ্গিত; সেখানে বাংলাদেশিরা ১২ ঘণ্টা কাজ করে পাচ্ছেন সর্বোচ্চ দেড় হাজার রিঙ্গিত। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় দাঁড়ায় ৩০ হাজার টাকা।
তবে, তারা এ ধরনের বৈষম্যের কারণ হিসেবে অদক্ষ জনশক্তি প্রেরণ ও অবৈধ’ভাবে বিদেশে পাড়ি জমানোকেই দায়ী করছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে , মালয়েশিয়ায় কতসংখ্যক প্রবাসী শ্রমিক রয়েছেন, এর কোনো সঠিক পরিসংখ্যান নেই। তবে বলা হয়ে থাকে, বৈধ-অবৈধ মিলে প্রায় ১০ লাখ বাংলাদেশি শ্রমিক রয়েছেন তেরটি রাজ্য ও তিনটি ঐক্যবদ্ধ প্রদেশ নিয়ে গঠিত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে। এর মধ্যে অবৈধ রয়েছেন প্রায় দুই লাখ বাংলাদেশি।
প্রবাসীরা বলছেন, অবৈধ প্রবাসীদের বেশিরভাগই সাগর পথে পাড়ি দিয়ে মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করেন। ফলে এর প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণ করা সম্ভব নয়।
রাজধানী কুয়ালালামপুর ছাড়াও মালয়েশিয়ার পর্যটনসমৃদ্ধ এলাকাগুলোর বিভিন্ন হোটেল-মোটেল কিংবা রেস্তোরাঁয় প্রচুর বাংলাদেশি শ্রমিক কাজ করেন। তবে বাংলাদেশের বেশির ভাগ শ্রমিক নিয়োজিত নির্মাণ খাতে।
কুয়ালালামপুরের বুকিত বিনতাংয়ের একটি ক্যাফেতে কাজ করেন নোয়াখালির সামসুল আলম। তিনি বলেন,যারা মালয়েশিয়ায় আসেন, তাদের বেশির ভাগই অদক্ষ জনশক্তি। ফলে অন্যদেশের চেয়ে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়েন বাংলাদেশিরা। এজন্যই বেশি পরিশ্রম করেও কম বেতন পান তারা।
আরেকটি ক্যাফেতে কাজ করেন মো. মুহিবুল্লাহ। বাংলাদেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক-স্নাতকোত্তর করে দুই বছর আগে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান স্টুডেন্ট ভিসায়। কিন্তু দেশটিতে এসে জানতে পারেন তার কলেজ কালো-তালিকাভুক্ত। তাই আসার পর থেকেই অবৈধ অভিবাসী হয়ে পড়েন তিনি। অবৈধ হয়েই গত ২ বছর ধরে থাকছেন দেশটিতে। তিনি আরো জানান , এখানে (মালয়েশিয়া) বাংলাদেশিরা সবচেয়ে বেশি সস্তা শ্রমে কাজ করছে। কারণ এখানে শিক্ষিত ও দক্ষ জনশক্তি আসছে না। আর এ সুযোগটা নিয়ে নিচ্ছে ভারত, চায়নাসহ আরও বেশি কয়েকটি দেশের শ্রমিকরা।
সেলানগর রাজ্যের বাতুতে ভারতীয় মালিকানাধীন একটি দোকানে কাজ করেন নারায়ণগঞ্জের রহমত আলী। তিনি বলেন, বাংলাদেশি নির্মাণ শ্রমিকরা সবচেয়ে কষ্টের কাজ করেন কিন্তু বেতন পান অনেক কম। তবে আমরা যারা দোকানে কাজ করি, তারা মোটামুটি আরামেই আছি।
কথা হয় সেলানগরে থাকা আরেক বাংলাদেশি শ্রমিক নেত্রকোণা জেলার আটপাড়ার জুবায়ের হোসেনের সঙ্গে। একটি কোম্পানিতে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন তিনি। তার ভাষ্য, আমরা সাগর পাড়ি দিয়ে থাইল্যান্ড হয়ে ২০১৬ সালে মালয়েশিয়ায় আসি। এখনও বৈধ হতে পারিনি। তাই অন্যান্য শ্রমিকদের তুলনায় আমাদের বেতন কম।
বাংলাদেশি শ্রমিকরা কেমন ? এমন প্রশ্নের জবাবে গেনটিং হাইল্যান্ডের ক্যাফে অ্যারেনার স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ নাজমির বলেন, বাংলাদেশিরা অত্যন্ত পরিশ্রমী, তারা বেশির ভাগই ভালো। তবে শতকরা ২ শতাংশ আছেন যারা খারাপ কাজে জড়িত।
তাদের বেতন কম কেন ? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন , প্রথমত বাংলাদেশিরা ইংরেজি জানে না,দ্বিতীয়ত তারা অদক্ষ হয় সে কারণেই ভালো পজিশনে চাকরি পায় না। ফলে নিম্ন বেতনেই তাদের বেশি সময় কাজ করতে হয়।
এসএ/ইএন
আরও পড়ুন
জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
- কাল থেকে যেসব শাখায় পাওয়া যাবে নতুন টাকার নোট
- 'জাতীয় মুক্তি মঞ্চ' গঠনের ঘোষণা
- এক বছরেই শক্তি, ক্ষিপ্রতা জৌলুস হারিয়ে 'হীরা' এখন বৃদ্ধ মৃত্যুপথযাত্রী
- ওয়াহিদ সরদার: গাছ বাঁচাতে লড়ে যাওয়া এক সৈনিক
- ভারতবর্ষে মুসলিম শাসনের ইতিকথা (প্রথম পর্ব)
- এবার ভাইরাস বিরোধী মাস্ক বানিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিলো বাংলাদেশ
- মায়েরখাবারের জন্য ভিক্ষা করছে শিশু
- ২৫ কেজি স্বর্ণ বিক্রি করল বাংলাদেশ ব্যাংক
- ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ
- তালিকা হবে রাজাকারদের
সর্বশেষ
জনপ্রিয়