প্রকাশিত: ০৮:১৬, ২৯ মে ২০১৯
আপডেট: ০৮:১৬, ২৯ মে ২০১৯
আপডেট: ০৮:১৬, ২৯ মে ২০১৯
বিশাল পানি সংকটে পরতে যাচ্ছে ভারত
আইনিউজ ডেস্কঃ ২০২৪ সালের মধ্যে প্রত্যেক বাড়িতে পানি পৌঁছাবেন ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। অন্যদিকে বিজেপির বিরোধিপক্ষ কংগ্রেস সার্বজনীনভাবে খাবার পানির ব্যবস্থার অঙ্গীকার করেছে।ভারতে ১৭তম লোকসভা নির্বাচনের প্রচারণায় নানা সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতির মধ্যে এগুলো ছিলো অন্যতম।
এক হিসাবে দেখা জানা যায় ভারতের ৪২ শতাংশ জমিই এখন খরায় আক্রান্ত। ফলে ঘরে ঘরে পানি পৌঁছে দেয়ার যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে-তা আদৌ পূরণ করা সম্ভব হবে কিনা তা এখন সময়ের প্রশ্ন।
বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ১৮ শতাংশই ভারতে বসবাস করে। অথচ এই বিপুল পরিমাণ মানুষের মধ্যে মাত্র চার শতাংশ পরিষ্কার পানি পাচ্ছে। সাম্প্রতিক সরকারি এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে ভারত এই মুহুর্তে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ পানি সংকটে’ ভুগছে। সতর্ক বার্তা দেওয়া হয়েছে, ২০২০ সালের দিকে দিল্লি, ব্যাঙ্গালোর, হায়দারাবাদ ও চেন্নাইসহ ভারতের ২১টি শহর পুরোপুরিভাবে পানিশূন্য হয়ে পড়বে। প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়েছে, ২০৩০ সালের দিকে পানযোগ্য পরিষ্কার পানি থাকবে না ভারতের ৪০ শতাংশ জনগোষ্ঠীর।
ভারতে শহর ও গ্রাম-উভয়েই পানির সমস্যা রয়েছে। তবে এ সংকটের ভিন্নতাও রয়েছে স্থানভেদে। আশোকা ট্রাস্ট ফর রিসার্চের গবেষক ড. ভেনা শ্রীনিবাসন বলেন, ‘শহরের সংখ্যা খুব দ্রুত বাড়ছে। কিন্তু এসব জায়গায় পানি সরবরাহ করার মতো অবকাঠামো নেই।’ ২০৩০ সাল নাগাদ ৬০ কোটিতে পৌঁছে যাবে শহরে বসবাসকারী জনসংখ্যা। এই পরিমান জনগোষ্ঠীর কাছে পানি পৌঁছে দেয়া রীতিমতো কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
সবচেয়ে বড় ভাবনার বিষয় হচ্ছে, ভারতের গ্রামাঞ্চলে ভূগর্ভস্থ পানির মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার হয়। ভারতে মোট ব্যবহৃত পানির ৮০ শতাংশই কৃষিকাজের পেছনে ব্যয় হয়। এর সিংহভাগই পাথর ও মাটির নিচে সংরক্ষিত ভূগর্ভস্থপানি।
‘যখন পানি সংরক্ষণের চেয়ে উত্তোলনের পরিমাণ বেশি হয়ে যায় তখনই সংকট তৈরি হয়।’ বলেন ওয়াটারএইড ইন্ডিয়ার প্রধান নির্বাহী ভিকে মাধুবন|
ওয়টার ফুটপ্রিন্ট নেটওয়ার্কের দেয়া তথ্যানুযায়ী, গম, চাল, আখ ও তুলার মতো শীর্ষ শস্যগুলো উৎপাদনে প্রচুর পানি প্রয়োজন হয়। তবে এই পানিও দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহৃত হয় না। যেখানে যুক্তরাষ্ট্রে এক কেজি তুলা চাষে মাত্র আট হাজার ১০০ লিটার পানি ব্যবহার করা হয়। ভারতে এই সংখ্যাটি দাঁড়ায় ২২ হাজার ৫০০ লিটার (পাঁচ হাজার গ্যালন)।
তার উপর ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সরকারিভাবে পরিচালিত ইকোনমিক সার্ভেতে দেখা গেছে গত ৩০ বছরে ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগে কমেছে ১৩ শতাংশ পানি।
নিট প্রাপ্তির তুলনায় বছরে কি পরিমাণ পানি উত্তোলন করা হচ্ছে তা পরিমাপের একটি গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ড হিসেবে ব্যবহৃত হয় এই জরিপটি। ২০১৩ সালে এই জরিপের দিক থেকে ভারত নিরাপদ অবস্থানেই ছিলো। এমনকি দেশের কিছু অংশে ভূপৃষ্ঠের পানি ব্যবহার হওয়ার পরে আবার ঘাটতি পূরণ হতেও দেখা গিয়েছে।
২০১৮ সালে দেখা গেছে নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে এমন অঞ্চলের মধ্যে ৬৬ শতাংশ স্থানেই পানি কমেছে। ধীরে ধীরে মাথপিছু পানির প্রাপ্যতাও কমে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফ্রেব্রুয়ারিতে ভারতীয় পার্লামেন্টে উপস্থাপিত নথিতে বলা হয়, ২০১১ সালে ভারতে মাথাপিছু পানির সহজলভ্যতা ছিলো এক হাজার ৫৪৫ ঘন মিটার বা চার লাখ গ্যালন। ২০৫০ সাল নাগাদ এসে যা এক হাজার ১৪০ ঘন মিটারে নামবে।
এক্ষেত্রে জলবায়ু একটি বড় বিষয়। বর্তমানে বৃষ্টিপাত কমে গেলেও কদাচিৎ যখন আসে তা প্রচন্ডভাবেই আসে। ফলে বৃষ্টির পানি মাটি শুষে নেয়ার আগেই গড়িয়ে পড়ে বলে সুন্দরাম ক্লাইমেট ইনস্টিটিউটের মৃদুলা রমেশ জানিয়েছেন। এ কারণে ভূপৃষ্ঠে তুলনামূলক কম পানি সঞ্চিত থাকছে। যার সহজ হিসাব ভবিষ্যতে পানি সহজলভ্যতা কমে আসবে।
বেশ কয়েকবছর ধরে দেশের রাজ্যগুলোকে গ্রাম পর্যায়ে পানযোগ্য পানি সরবরাহে উৎসাহী করতে একটি স্কিম চালু করেছে ভারত সরকার। কিন্তু গত পাঁচ বছরে এই তহবিলে বরাদ্দ কমেছে। বর্তমান সরকার পয়ঃনিষ্কাশনের মতো অন্যান্য স্কিমে গুরুত্ব দেয়ার কারণে এখানে অর্থব্যয় কমে গেছে।
এটি/ইএস
আরও পড়ুন
জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
- কাল থেকে যেসব শাখায় পাওয়া যাবে নতুন টাকার নোট
- 'জাতীয় মুক্তি মঞ্চ' গঠনের ঘোষণা
- এক বছরেই শক্তি, ক্ষিপ্রতা জৌলুস হারিয়ে 'হীরা' এখন বৃদ্ধ মৃত্যুপথযাত্রী
- ওয়াহিদ সরদার: গাছ বাঁচাতে লড়ে যাওয়া এক সৈনিক
- ভারতবর্ষে মুসলিম শাসনের ইতিকথা (প্রথম পর্ব)
- এবার ভাইরাস বিরোধী মাস্ক বানিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিলো বাংলাদেশ
- মায়েরখাবারের জন্য ভিক্ষা করছে শিশু
- ২৫ কেজি স্বর্ণ বিক্রি করল বাংলাদেশ ব্যাংক
- ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ
- তালিকা হবে রাজাকারদের
সর্বশেষ
জনপ্রিয়