ডেস্ক নিউজ
পটকা মাছ বিষাক্ত কিনা বুঝবেন যেভাবে
পটকা মাছ- ফাইল ছবি
পটকা মাছ খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর প্রায়ই শোনা যায়। মৃত্যুও হয় অনেকের। গতকাল বুধবারই মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে এক পরিবারের দুই জন মারা গেছেন। আট বছরের এক শিশু গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি।
এছাড়া ২০১৫ সালে সিলেটের জৈন্তায় পটকা খাওয়ার ঘটনায় বড় ট্রাজেটি ঘটেছিল- সেবার একই পরিবারের ৬ জন বিষক্রিয়ায় মারা গিয়েছিল।
দেশে পটকা মাছ
দেশের সব নদ-নদী ও সমুদ্রে এই মাছ পাওয়া যায়। তবে পটকা নামে পরিচিত এর নাম ‘বেলুন মাছ’। অনেক অঞ্চলে টেপা মাছ নামেও পরিচিত। দেখতে গোবেচারা টাইপের হলেও মাছটি অত্যন্ত বিষাক্ত।
গবেষকদের মতে, প্রাণী হিসেবে পটকা মানুষের পক্ষে এতটাই বিষাক্ত যে- একটি মাছ খেয়ে মারা যেতে পারে অন্তত ৩০ জন।
বাংলাদেশে পটকা মাছের ১৩টি প্রজাতি আছে, যাদের দুটি মিঠা পানিতে এবং বাকিগুলো সমুদ্রে বাস করে। এটি সম্পর্কে জেলেদের কোনো ধারণা না থাকায় তারা নিজেরা এ মাছ খায় অথবা বাজারে বিক্রি করে। বিষাক্ত এ মাছ খেয়ে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে অথবা মারা যায়।
পটকা যেভাবে বিষক্রিয়া ছড়ায়-
পটকা মাছের শরীরে থাকা নিউরোটক্সিন (টেট্রোডোটক্সিন) নামক বিষাক্ত প্রোটিনের প্রভাবে মানুষের মৃত্যু হয়।
অনেক মৎস্য গবেষকের মতে- ‘পটকা মাছ’ আসলে সে অর্থে মাছ নয়। এটি একটি বিষাক্ত জলজ প্রাণী। এর শরীরে থাকা নিউরোটক্সিন মানবদেহে প্রবেশের পর খুব সহজেই নার্ভাস সিস্টেম ও হৃদপিণ্ডকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়। ফলে দ্রুতই আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হয়। জানা মতে এর তেমন কোনো অ্যান্টিডোটও নেই।
‘পটকা মাছের বিষ টেট্রোডোটক্সিন (টিটিএক্স) একটি শক্তিশালী বিষাক্ত পদার্থ যা মানুষের উত্তেজক (এক্সাইট্যাবল) সেল মেমব্রেনের সোডিয়াম চ্যানেল বন্ধ করে দিয়ে খুব তাড়াতাড়ি মৃত্যু ঘটাতে সক্ষম।’
বিষাক্ত পটকা কীভাবে চেনা যায়?
একটি পটকা মাছ বিষাক্ত কিনা তা বোঝার সহজ উপায় হলো- এর পূর্ণতা ও পরিপক্কতা (full maturity)। ফলে এর যকৃত ও ডিম্বাশয়ও তখন বড় হয়ে এবং আস্তে আস্তে দিনান দিন বিষে পূর্ণ হতে থাকে। এসব অঙ্গ যত বড় তার বিষের ব্যাপকতা ও প্রকটতা তত বেশি মারাত্মক বলেই বোঝাই।
মাছের বিষের পরিমাণ নির্ভর করে এর লিঙ্গ, ভৌগোলিক অবস্থান এবং মওসুমের ওপর। প্রজননের অব্যবহিত পূর্বে এবং প্রজননকালীন সময়ে এতে অপেক্ষাকৃত বেশি বিষ থাকে। পুরুষ থেকে স্ত্রী জাতীয় মাছ বেশি বিষাক্ত। কারণ অণ্ডকোষ থেকে ডিম্বাশয় বেশি বিষাক্ত।
বিষক্রিয়া ঘটলে শরীরে যেমন অনুভূতি হয়-
এ বিষের ফলে মানুষের জিহ্বা এবং ঠোঁটের স্বাদ নেওয়ার ক্ষমতা থাকে না, মাথা ঘোরে ও বমি হয় এবং পরবর্তীতে শরীর অসাড় হয়ে আসে। সারা শরীর ঝিঁঝি ধরে, হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়, রক্তচাপ কমে যায় এবং মাংসপেশী অসাড় হয়ে পড়। ডায়াফ্রাম অসাড় হয়ে যাওয়ার ফলে শ্বাসতন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে রোগী মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়।
তবে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ২৪ ঘণ্টার বেশি যে জীবিত থাকে সে সাধারণত বেঁচে যায়।
বিশ্বের অন্যতম উন্নত দেশ জাপানে পটকা মাছ খুবই জনপ্রিয়। তবে জাপানিরা রান্নার আগে এর থেকে বিশেষ কায়দায় বিষযুক্ত অংশগুলো আলাদা করে নেয়। তবে সে প্রযুক্তি এখনো আসেনি বাংলাদেশে। তাই এ মাছের বিষক্রিয়া থেকে বাঁচার একমাত্র উপায়- কোনোমতেই এই মাছটি আর না খাওয়া।
- ফুল | Flower | Eye News
- বিলুপ্ত প্রজাতির গন্ধগোকুল উদ্ধার; লাউয়াছড়ায় অবমুক্ত
- সুন্দরবন সুরক্ষায় গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে সরকার: পরিবেশমন্ত্রী
- জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে উদ্ভিদ প্রজাতির জরিপ করছে সরকার : পরিবেশমন্ত্রী
- টর্নেডো: কি, কেন কীভাবে?
- জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায় ছড়াচ্ছে রোগবালাই
- শুশুক বাঁচলে বেঁচে যায় গোটা জলজ জীবন চক্র
- ফ্রি ডাউনলোড-গোলাপ ফুলের ছবি
- ফুল ছবি | Flower Photo | Download | Eye News
- পটকা মাছ বিষাক্ত কিনা বুঝবেন যেভাবে