Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, রোববার   ২০ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ৬ ১৪৩২

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৮:৫১, ১৮ এপ্রিল ২০২১
আপডেট: ১৮:৫২, ১৮ এপ্রিল ২০২১

শ্রীমঙ্গলে বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনে মাতৃআদরে ৬ গন্ধগোকুল শাবক

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

গন্ধগোকুলের ছয়টি ছানা। চোখই ফোটেনি। মায়ের দুধ পান করেই তারা বড় হচ্ছিল। কিন্তু ধরা পড়ায় সেই মাতৃআদরে ছেদ পড়ে। এরপর ছানাগুলোর ঠাঁই হয় মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বাংলাদেশ বন্য প্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনে। সেখানে ছানাগুলো মা ছাড়াই পাচ্ছে মাতৃআদর।

ইতিমধ্যেই তাদের চোখ ফুটেছে। একইসাথে বেড়েছে চঞ্চলতাও।

বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা গেছে, মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসানের বাংলোতে গত ২৮ মার্চ গন্ধগোকুলের এই ৬ ছানা ধরা পড়ে। কার্যালয়ের ফাইলের তাকে ছিল ছানাগুলো। নিরিবিলি পেয়ে হয়তো ছানাগুলো রেখে যায় তাদের মা। উদ্ধারের সময় ছানাগুলোর চোখও ফোটেনি। খবর দেওয়া হয় বাংলাদেশ বন্য প্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষকে।

ফাউন্ডেশনের পরিচালক স্বপন দেব সজল, এসে ছানাগুলো নিয়ে যান। তবে তা ফাউন্ডেশনে নিয়ে রাখেননি। রেখেছেন নিজের বাসারই একটি কক্ষে। প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে ছানাগুলোর যত্ন-আত্তি করছেন তিনি। এত দিনে ছানাগুলোর চোখ ফুটেছে। ঘরের ভেতরে তাদের লাফালাফি ও চঞ্চলতা বেড়েছে। সজল দেবের কোলে-কাঁখে উঠে নাচানাচি করছে।

নিশাচর প্রাণী গন্ধগোকুল। তাই ছানাগুলোর দিন কাটে অনেকটাই ঘুমের মধ্যে। রাত হলে তারা জেগে ওঠে। দাপাদাপি করে।

চোখ ফুটলেও এখনো দাঁত ওঠেনি। তাই ভরসা তরল খাবার। শুরু থেকেই ফিডারের মাধ্যমে তাদের দুধ দিচ্ছেন সজল দেব। দিনে অন্তত আট-নয়বার এই দুধ খাওয়াতে হচ্ছে। রাতের বেলা থাকার স্থানটির কাঁথা-কম্বল প্রস্রাবে ভিজিয়ে দিচ্ছে। যাতে ঠান্ডা না লাগে,এ জন্য অনেকবার বদলে দিতে হয়।

বন্যপ্রাণী গবেষকদের সূত্রে জানা গেছে, পুরোনো গাছের খোঁড়লই গন্ধগোকুলের ছানা প্রসবের উপযুক্ত স্থান। কিন্তু পুরোনো গাছের সংখ্যা কমে গেছে। খোঁড়লের অভাবে গাছের ডালের ফাঁকে, পরিত্যক্ত ঘর, ইটের ভাটা, ধানের গোলা, তাল-সুপারির গাছের আগায় ছানা তুলে থাকে। ১০ থেকে ১২ দিনে ছানার চোখ খুলে। প্রায় ছয় মাসে ছানা সাবালক হয়ে ওঠে।

গন্ধগোকুল একা থাকলেও প্রজননের সময় স্ত্রী-পুরুষ একত্রে থাকে। বছরে সাধারণত দুবার বাচ্চা দেয়। দুই মাসের কিছু বেশি সময় গর্ভধারণের কাল।

গন্ধগোকুলের ইংরেজি নাম Asian palm civet। নিশাচর এই প্রাণী মূলত ফলখেকো। তবে কীটপতঙ্গ, শামুক, ডিম, বাচ্চা পাখি, ছোট প্রাণী, তাল-খেজুরের রস খেয়ে থাকে। খাদ্যের অভাব হলে মোরগ, কবুতরও চুরি করে খায়। ইঁদুর ও ফল-ফসলের পোকামাকড়ও খেয়ে থাকে। এটি এখন পৃথিবীর বিপন্ন প্রাণীর তালিকাভুক্ত।

বাংলাদেশ বন্য প্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক স্বপন দেব সজল বলেন, আরও মাসখানেক তাদের এভাবে রাখতে হবে। এখনো দাঁত ওঠেনি। নিজেরা খেতে সক্ষম হলে এগুলোকে কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে অবমুক্ত করে দেওয়া হবে।

আইনিউজ/সাজু মারছিয়াং/এসডি

Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়