Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শনিবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ৬ ১৪৩২

সাজু মারছিয়াং

প্রকাশিত: ২১:৫০, ১৫ জুলাই ২০২১
আপডেট: ২১:৫১, ১৫ জুলাই ২০২১

জলময়ূর: জলেই জীবন, জলেই মৃত্যু

জলময়ূর। ছবি: কাজল হাজরা।

জলময়ূর। ছবি: কাজল হাজরা।

জল-ময়ূর। পদ্ম-পাতায় যাদের জীবন। নামে ময়ূর হলেও সত্যিকারের ময়ূরের সঙ্গে কোনো মিল নেই। জলেই এদের জীবন কাটে। ইংরেজিতে  Pheasant-tailed jacana বলা হয়। অনিন্দ্য সুন্দর পাখি এটি।

ময়ূর সবাই চিনে তবে জলময়ূর অনেকেরই অচেনা। এটি নেউপিপি, পদ্মপিপি বা মেওয়া নামেও পরিচিত। এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পাখি। লম্বালেজী অনিন্দ্য সুন্দর পাখিটি বাংলাদেশের দুর্লভ বিলুপ্ত প্রজাতির আবাসিক পাখি ‘জল ময়ূর’।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের বাইক্কা বিলে ঝাঁকেঝাঁকে এদের বিচরণ দেখতে পাওয়া যায়। পাখিটির বৈজ্ঞানিক নাম: হায়দফাসিয়ানো চিরুরগাস। প্রজননকারী পাখির মাথা,গলা ও ডানার পালক-ঢাকনি সাদা থাকে। ঘাড় সোনালি- হলুদ, পিঠ গাঢ় বাদামি, বুক-পেট কালচে বাদামি ও লেজ কালচে। এই পাখির প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে জলাধারের কাছাকাছি থাকতে ভালোবাসে।

বনবিভাগ জল ময়ূরের প্রজাতি রক্ষায় নানা ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এটি লম্বা লেজী। বাংলাদেশের দুর্লভ আবাসিক পাখি ‘জল ময়ূর’। এ পাখির তিন ধরনের প্রজাতি রয়েছে। নেউপিপি এবং পদ্মপিপি বা মেওয়া নামেও পরিচিত।

প্রজননকালে জল ময়ূর অত্যন্ত সুন্দর হয়ে ওঠে। এ সময় ২৫ সেন্টিমিটার লম্বা লেজসহ পাখির দেহের দৈর্ঘ্য দাঁড়ায় ৩৯ থেকে ৫৮ সেন্টিমিটার। ওজনে পুরুষ ১১৩ থেকে ১৩৫ গ্রাম। স্ত্রী প্রজাতির পাখি ২০৫ থেকে ২৬০ গ্রাম হয়। প্রজননকারী পাখির মাথা,গলা ও ডানার পালক সাদা থাকে। ঘাড় সোনালি-হলুদ, পিঠ গাঢ় বাদামি,বুক-পেট কালচে-বাদামি ও লেজ কালচে হয়।

একটি কালচে-খয়েরি রেখা মাথা ও ঘাড়-গলার সাদা ও সোনালি-হলুদ রঙকে পৃথক করেছে। ঠোঁট নীলচে, চোখ বাদামি ও পা নীলাভ-কালো। স্ত্রী-পুরুষ দেখতে একই রকম। জল ময়ূর হাওর, বিল, হ্রদ এবং মিঠাপানির জলাভূমিতে বাস করে। দেশের প্রায় সব বিভাগেই দেখা যায় এ পাখিটি। গ্রীষ্মকালে একাকী বা জোড়ায় ও শীতকালে ঝাঁক বেঁধে বিচরণ করে।

ভাসমান পাতার ওপর হেঁটে হেঁটে জলজ উদ্ভিদে থাকা পোকা-মাকড় ও অমেরুদণ্ডী প্রাণী খায়। এ ছাড়াও জলজ উদ্ভিদের কচি পাতা, অঙ্কুর ও বীজ খেয়ে থাকে। সচরাচর ওড়ার সময় করুণ সুরে নে…উ…ইউ…, নে…উ…ইউ…, নে…উ…ইউ স্বরে ডাকতে থাকে।

প্রজননকালে পুরুষ শাপলা ও পদ্মপাতা বা এ জাতীয় ভাসমান কোনো উদ্ভিদের পাতার ওপর বাসা বানায়। স্ত্রী এতে চারটি জলপাই-বাদামি চকচকে ডিম পেড়ে চলে যায়। পুরুষ একাই ডিমে ২৩ থেকে ২৬ দিন তা দিয়ে বাচ্চা ফোটায়। ডিম থেকে ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই হাঁটতে, সাঁতরাতে ও ডুব দিতে পারে। প্রায় দুই মাস পর্যন্ত পুরুষ জল ময়ূরের তত্ত্বাবধানে থাকে এ পাখির ছানা।

আইনিউজ/সাজু মারছিয়াং/এসডি

Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়