Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শনিবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ৬ ১৪৩২

খোকন সিংহ,ওয়াইল্ডলাইফ এন্ড ইনভায়রনমেন্টাল করেসপনডেন্ট

প্রকাশিত: ২১:৩০, ৪ আগস্ট ২০২১
আপডেট: ২৩:৪৪, ৪ আগস্ট ২০২১

সংকটাপন্ন বাঁশ ভাল্লুক, বিপন্ন খাটোলেজী বানর ও হিমালয়ান শকুন উদ্ধার

শ্রীমঙ্গল শহরের জালিয়া রোডের শ্রীমঙ্গল বার্ডক্লাব এবং ব্রিডিং সেন্টার নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে সংকটাপন্ন প্রজাতির দুইটি বাঁশ ভাল্লুক, একটি মহাবিপন্ন হিমালয়ান শকুন এবং একটি দুর্লভ খাটোলেজি বানরসহ মোট চারটি বন্যপ্রাণী র‍্যাব-৯ এর সহযোগিতায় উদ্ধার করেছে বনবিভাগ। 

বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী জানান, অত্যন্ত দুর্লভ প্রাণীগুলো অবৈধভাবে বন্দি করে রাখা হয়েছিলো৷ বর্তমানে সেগুলো বনবিভাগের হেফাজতে রয়েছে এবং সেই প্রতিষ্ঠান (শ্রীমঙ্গল বার্ডক্লাব এবং ব্রিডিং সেন্টার) অথবা ব্যক্তির বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। 

বনবিভাগ এবং  স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে  র‍্যাব-৯ কে সাথে নিয়ে সকাল ১১টার দিকে অভিযান শুরু করে বনবিভাগ। প্রায় তিন ঘণ্টার অভিযান শেষে  প্রাণীগুলো উদ্ধার করে লাউয়াছড়া রেসকিউ সেন্টারে নিয়ে আসা হয়৷

খাটোলেজি বানর ও বাঁশ ভাল্লুক

বাঁশ ভাল্লুকের ব্যাপারে কথা বলতে গেলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ড. মনিরুল এইচ খান জানান, এরা দিনে গাছের উপর ঘুমায় রাতে চলাচল করে। এরা নিশাচর প্রাণী। এর ইংরেজি নাম Binturang এবং বৈজ্ঞানিক নাম Arctictis binturang। সিলেট, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের গভীর জঙ্গলে এদের পাওয়া যায়। 

খাটোলেজি বানরের ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিদ্যার প্রভাষক, বন্যপ্রাণী গবেষক মুন্তাসীর আকাশ বলেন, আমাদের দেশে যে পাঁচ প্রজাতির macaque পাওয়া যায় তার মধ্যে এই খাটোলেজি বানর বা bear macaque সব চেয়ে দুর্লভ৷ বাকি চার প্রজাতির macaque এর ব্যাপারে কম বেশি তথ্য-উপাত্ত, স্থিরচিত্র থাকলেও এই খাটোলেজি বানরের ব্যাপারে সাম্প্রতিক ( দুই বা তিন দশকের মধ্যে) কোনো তথ্য বা উপাত্ত বা স্থিরচিত্র গবেষকদের কাছে  নাই৷ এতদিন ধারণা করা হচ্ছিল সিলেট অঞ্চলের  লাঠিটিলা, মুরাইছরা, রাজকান্দি এবং পার্বত্য অঞ্চলের গহীন বনে এরা এখনো টিকে আছে৷

হিমালয়ান শকুন

তিনি আরো যোগ করেন খাটোলেজী বানর বিশ্বব্যাপীও বিপন্ন৷  আমরা লাঠিটিলায় সাফারি পার্ক করছি অথচ এই অঞ্চলের বনগুলোতে এখনো এরকম অনেক বিরল এবং বিপন্ন প্রাণী টিকে আছে৷  এদের সুরক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা এবং  ব্যাপক গবেষণা প্র‍য়োজন।  

হিমালয়ান শকুনের ব্যাপারে IUCN এর সিনিওর পোগ্রাম অফিসার সীমান্ত দীপু  জানান হিমালয়ান শকুন বা Himalayam griffon vulture আমাদের দেশে শীতে পরিযায়ী হয়ে আসে খাবারের সন্ধানে ৷ প্রতি বছর প্রায় একশ শকুন দেখা যায়৷ তার মধ্যে এই দীর্ঘ যাত্রায় খাবারের অভাবে দুর্বল হয়ে বেশিরভাগই মাটিতে পড়ে যায় এবং জীবন হুমকির মুখে পড়ে৷  প্রতি বছরই এরকম বিপন্ন অবস্থায় ২০-৩০ টা শকুন উদ্ধার করে বনবিভাগ ৷ বিশ্বব্যাপী এই শকুন বিপন্ন না হলেও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই শকুন বিপন্ন এবং বনবিভাগ এদের রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে ৷

আইনিউজ/এসডিপি 

Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়