Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শনিবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ৬ ১৪৩২

খোকন থৌনাউজাম

প্রকাশিত: ২১:৪৪, ৭ আগস্ট ২০২১
আপডেট: ২৩:৩০, ৭ আগস্ট ২০২১

লাউয়াছড়ার আহত কন্ঠী নিমপ্যাঁচাটি আবার ফিরে গেলো গহীন অরণ্যে

লাউয়াছড়া থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া কন্ঠী নিমপ্যাঁচা মানুষের সেবায় সুস্থ হয়ে আবার ফিরে গেলো গহীন অরণ্যে।

কিছুদিন আগে লাউয়াছড়া রোডে দ্রুতগামী সিএনজিচালিত অটোরিকশার সাথে ধাক্কা লেগে আহত অবস্থায় রাস্তার উপর ছিটকে পড়ে প্যাঁচা।স্থানীয় বাইকার রিজভী আহত প্যাঁচাটি নিয়ে আসেন বন্যপ্রাণী সুরক্ষায় দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসা স্থানীয় সংগঠন 'স্ট্যান্ড ফর আওয়ার এন্ডেঞ্জার্ড ওয়াইল্ডলাইফ' (SEW) এর ফাউন্ডার খোকন থৌনাউজামের কাছে।  

টিম SEW সূত্রে জানা যায়, আহত প্যাঁচাটি দাঁড়াতেও পারছিল না, উড়ার কথা দূরে থাক। প্রাথমিক পরিচর্যার পর কয়েকদিন নিবিড় পর্যবেক্ষণে তাকে রাখা হয়। পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং খাবার খাওয়ানোর পাশাপাশি ডানায় ও পায়ে নিয়মিত মালিশ দিলে চার-পাঁচ দিনের মধ্যেই উড়ার সক্ষমতা অর্জন করে পাখিটি।

তারপর জানকিছড়া বিট কর্মকর্তা জনাব আনিসুজ্জামানের উপস্থিতিতে  টিম SEW এর সদস্যরা লাউয়াছড়া বনের গহীনে আবারও পাখিটিকে অবমুক্ত করে দেন। 

সংগঠনটির আরেক ফাউন্ডার সোহেল শ্যাম পাপ্পু এ বিষয়ে বলেন, প্রতিদিন শতশত যানবাহন লাউয়াছড়ার ভিতর দিয়ে অনিয়ন্ত্রিত গতিতে ছুটে চলে। দূর্ঘটনায় নিয়মিত মারা পড়ছে বিভিন্ন বন্যপ্রাণী। দীর্ঘদিন থেকে আমরা লাউয়াছড়ায় দূর্ঘটনাপ্রবণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করে পর্যাপ্ত সংখ্যক স্পিডব্রেকার দেয়ার মাধমে দ্রুতগামী যানবাহনগুলির গতি নিয়ন্ত্রনের দাবি জানিয়ে আসছি।'

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে মোট চার প্রজাতির নিম প্যাঁচা পাওয়া যায়। এগুলো হলো-

  • পাহাড়ি নিমপ্যাঁচা  (mountain scops owl),
  • উদয়ী নিমপ্যাঁচা (Oriental scops owl),
  • দেশী নিমপ্যাঁচা (Indian scops owl),
  • কন্ঠী নিমপ্যাঁচা (collared scops owl)। 

এর মধ্যে কন্ঠি নিমপ্যাঁচা আকারে সব চেয়ে বড়। ২৩-২৫ সেন্টিমিটার হয়৷ কালচে বাদামী দেহে লম্বা ধূসর কান-ঝুঁটি। ঘাড়ে কালচে-বাদামী লাইন এবং হলুদ পট্টি। ডানায় হলদে তিলা। উপরের চঞ্চু সবুজাভ এবং নিচে কালচে। রাতের বেলা থেকে থেকে 'টুও' বা 'নিম' শব্দ করে ডাকে।

কন্ঠী নিমপ্যাঁচা পুরোপুরি নিশাচর, আমাদের সুলভ আবাসিক পাখি। এরা লোকচক্ষুর আড়ালে থাকতে পছন্দ করে। দিনের বেলা ঘন পাতার আড়ালে বা গাছের কোটরে বিশ্রাম নেয় তাই সহজে চোখে পড়েনা। রাতের বেলা শিকারে বের হয়৷ শিকারের তালিকায় নানারকম পোকা, ঘাসফড়িং, টিকটিকি, গিরগিটি, ছোটপাখি ইত্যাদি রয়েছে।  

এদের প্রজনন মৌসুম ফেব্রুয়ারি-এপ্রিল। গাছের কাণ্ডের প্রাকৃতিক ফোকরে কিংবা কাঠঠোকরা পাখির পরিত্যক্ত বাসায় ডিম পাড়ে। ডিম সাদা, সংখ্যায় তিন-পাঁচটি হয়।

যত্ন ও ভালোবাসায় যেভাবে লাউয়াছড়ার অরণ্যে ফিরলো মারাত্মক আহত কন্ঠী নিমপ্যাঁচা

আইনিউজ/এসডি

Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়