সাজু মারছিয়াং
আপডেট: ২৩:১৫, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১
লাউয়াছড়ার উপরের বিদ্যুতের লাইনে আবরণ দিতে পল্লী বিদ্যুতকে চিঠি
লাউয়াছড়ার ভেতর দিয়ে বিদ্যুতের লাইন। ছবি- সাজু মারছিয়াং।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের সংরক্ষিত বনের ভেতর দিয়ে গেছে ৩৩ কিলোভোল্টের (কেভি) বিদ্যুতের লাইন। সড়ক ও রেলপথের মতো বিদ্যুতের লাইনও এ বনের স্তন্যপায়ী বন্য প্রাণীর জন্য হুমকি। উদ্যান–সংলগ্ন লোকালয়েও অনেকগুলো লাইন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে। এসব লাইনে টানা আছে খোলা তার। বনের প্রাণীরা চলাচল করতে গিয়ে বিদ্যুতের তারে স্পৃষ্ট হয়ে মারা পড়ছে, আহত হচ্ছে। প্রায় প্রতি মাসেই এক-দুটি বিপন্ন প্রজাতির বন্য প্রাণীর মৃত্যু ও আহত হওয়ার ঘটনা ঘটছে।
বন্য প্রাণীর মৃত্যু বন্ধে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ও উদ্যানের পাশের লোকালয়ে বিদ্যুতের লাইনের আবরণহীন তারের পরিবর্তে রাবার কিংবা অন্য বিদ্যুৎ অপরিবাহী আবরণযুক্ত তার প্রতিস্থাপন করতে বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ চিঠি দিয়েছে মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে। মঙ্গলবার (১৪সেপ্টেম্বর) মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপকের কাছে এই চিঠি দিয়েছেন বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। সদয় অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এই চিঠির অনুলিপি প্রধান বন সংরক্ষক ঢাকা, মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কমলগঞ্জ, শ্রীমঙ্গলসহ বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।চিঠিতে বলা হয়েছে,২০১৬ সালের ২ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালকের (প্রশাসন) সভাপতিত্বে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভায় আবরণহীন তারের পরিবর্তে রাবার কিংবা অন্য বিদ্যুৎ অপরিবাহী আবরণযুক্ত বৈদ্যুতিক তার প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সেই সময় সিদ্ধান্তটি জানিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে চিঠিও দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া উদ্যানের বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা লোকালয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থাপন ও বিদ্যুৎ–সংযোগ প্রদানে বন বিভাগ বাধা দিয়েছে। পরে বন আইন ১৯২৭ (সংশোধিত ২০০০) অনুযায়ী, সংরক্ষিত বনাঞ্চলে বন বিভাগের অনুমতি ব্যতিরেকে বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থাপন,লাইন টানা ও বিদ্যুৎ–সংযোগ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ, এই মর্মে শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের বিভিন্ন বিরল–বিপন্ন প্রজাতির স্তন্যপায়ী বন্য প্রাণীসহ সার্বিক জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও সংরক্ষণের স্বার্থে জরুরি ভিত্তিতে রাবার কিংবা বিদ্যুৎ অপরিবাহী আবরণযুক্ত বৈদ্যুতিক তার প্রতিস্থাপন প্রয়োজন। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েরও নির্দেশনা আছে। প্রতি মাসে এক-দুটি বিরল প্রজাতির প্রাণী মারা যাচ্ছে। এভাবে প্রতিনিয়ত বন্য প্রাণীর মৃত্যু হতে থাকলে এই এলাকা থেকে এসব প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। এতে বনের জীববৈচিত্র্যের ভারসাম্য বিনষ্ট হবে।
এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক জিয়াউর রহমান বলেন, চিঠিটি তিনি পেয়েছেন। এই বিদ্যুতের লাইন বহু আগের। বনের ভেতর দিয়ে গেছে। মানুষকে বিদ্যুৎ দিতে হবে। আবার বন্য প্রাণীও সংরক্ষণ করতে হবে। এ বিষয়ে সার্ভে করে সম্ভব হলে রাবার কিংবা বিদ্যুৎ অপরিবাহী আবরণযুক্ত বৈদ্যুতিক তার প্রতিস্থাপনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উদ্ভিদ ও প্রাণিবৈচিত্র্যে এ বনটির গুরুত্ব রয়েছে।
এই বনাঞ্চলের ভেতর ও আশপাশের এলাকায় ৩৩ কেভি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুতের লাইন রয়েছে। এই লাইনগুলোর তারে কোনো আবরণ নেই। আবরণ না থাকায় বনাঞ্চল ও সংলগ্ন এলাকায় বিচরণের সময় বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে প্রায় প্রতি মাসেই উদ্যানের দু-একটি প্রাণী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা পড়ছে কিংবা আহত হচ্ছে। এসব প্রাণীর মধ্যে আছে বিরল প্রজাতির উল্লুক, মুখপোড়া হনুমান, চশমাপরা হনুমান, লজ্জাবতী বানর ইত্যাদি।
আইনিউজ/সাজু মারছিয়াং/এসডি
- ফুল | Flower | Eye News
- বিলুপ্ত প্রজাতির গন্ধগোকুল উদ্ধার; লাউয়াছড়ায় অবমুক্ত
- সুন্দরবন সুরক্ষায় গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে সরকার: পরিবেশমন্ত্রী
- জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে উদ্ভিদ প্রজাতির জরিপ করছে সরকার : পরিবেশমন্ত্রী
- টর্নেডো: কি, কেন কীভাবে?
- জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায় ছড়াচ্ছে রোগবালাই
- শুশুক বাঁচলে বেঁচে যায় গোটা জলজ জীবন চক্র
- ফুল ছবি | Flower Photo | Download | Eye News
- ফ্রি ডাউনলোড-গোলাপ ফুলের ছবি
- পটকা মাছ বিষাক্ত কিনা বুঝবেন যেভাবে