সাজু মারছিয়াং, লাউয়াছড়া থেকে
আপডেট: ১৫:১৪, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২
আয়ু শেষেই কী মারা যাচ্ছে বিরল গাছ ‘আফ্রিকান টিকওক’
বিরল প্রজাতির বৃক্ষ আফ্রিকান টিকওক
আয়ু শেষেই কী মারা যাচ্ছে মৌলভীবাজার কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে বিরল প্রজাতির গাছ আফ্রিকান টিকওক! গবেষকরা কী ইঙ্গিত দিচ্ছেন?
লাউয়াছড়া বনে জীবেনের শেষ বিন্দুতে দেশের একমাত্র বিরল প্রজাতির বৃক্ষ আফ্রিকান টিকওক। খাবার-পানি সংগ্রহ করতে পারছে না গাছটি। গাছটি এখনও আংশিক বেঁচে আছে। তবে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম।
গাছ মরে যাওয়ার কারণ অনুসন্ধানে গবেষক দল
গাছটির মারা যাওয়ার কারণ অনুসন্ধানে তথ্য ও নমুনা সংগ্রহ করেছেন বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট চট্রগ্রামের একদল গবেষক।
মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত লাউয়াছড়া বনের আফ্রিকান টিকওক গাছটির বিভিন্ন উপাদান নমুনা সংগ্রহ করেন তারা।
গবেষক দলে ছিলেন বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের বন রক্ষণ বিভাগের গবেষণা কর্মকর্তা মো. জিল্লুর রহমান এবং মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের গবেষণা কর্মকর্তা আব্দুল রাশেদ মোল্লা।
বন রক্ষণ বিভাগের গবেষণা কর্মকর্তা মো. জিল্লুর রহমান বলেন, গাছটির মারা যাওয়া নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। কতৃপক্ষের তাৎক্ষণিক নির্দেশনায় আমরা সরেজমিনে পরিদর্শনে এসেছি। গাছটি কি কারণে মারা গেছে তার নমুনা সংগ্রহ করেছি।
কি কারণে মারা যাচ্ছে বিরল গাছটি?
বন রক্ষণ বিভাগের গবেষণা কর্মকর্তা মো. জিল্লুর রহমান বলেন- গাছটি থেকে আমরা বিভিন্ন উপাদান নমুনা সংগ্রহ করে সাথে করে নিয়ে যাচ্ছি। কোনো রোগের কারণে গাছ মরে যেতে পারে। পোকার কারণেও হতে পারে। মাইক্রোঅর্গানিজম অথবা মৃত্তিকাজনিত কোন সমস্যাও হতে পারে। তা এককভাবে কোন উপাদান দায়ী নাও হতে পারে। তাৎক্ষণিকভাবে আমরা বলতে পারব না গাছটি কি কারনে মারা যাচ্ছে।
তিনি বলেন- আমরা গাছটির গোড়ার মাটি, মাটির নিচের অংশের মরা শিকড়, কাণ্ডের উপরের অংশের মরা ছাল-বাকল, বিভিন্ন উপাদানের নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছি। এগুলো আমাদের প্রতিষ্ঠানের ল্যাবে পরীক্ষাগারে গবেষণা ও বিশ্লেষণ করব। এরপর যা ফলাফল আসবে তখন বলা যাবে গাছটি মারা যাওয়ার কারণ কি ছিল। এরপর আমরা কতৃপক্ষকে পুর্নাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করব।
আরো পড়ুন : মৌলভীবাজারে গরুর দলের সাথে চিত্রা হরিণ শাবক...
আয়ুস্কাল শেষেই মারা যাচ্ছে ‘আফ্রিকান টিকওক’?
গবেষণা দলে আসা মৃতিকা বিজ্ঞান বিভাগের গবেষণা কর্মকর্তা আব্দুল রাশেদ মোল্লা বলেন- আফ্রিকান টিকওক আমাদের দেশের বিরল প্রজাতির একটি বৃক্ষ। গাছটি কি কারনে মারা গেল তা আগে বলা যাবেনা। পরীক্ষা করার পর এর কারন জানা যাবে।
তিনি বলেন যার জন্ম আছে, মৃত্যুও আছে। গাছেরও জীবন রয়েছে। তার আয়ুষ্কাল বিষয়ও রয়েছে। এমনও তো হতে পারে গাছটির আয়ুষ্কাল ফুরিয়ে গেছে।
তিনিও আরও জানান, গাছটি এখনও আংশিক বেঁচে আছে। তবে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম।
এর কারণ গাছটির নিচের খাবার সংগ্রহের রুটগুলো। সে রুট গুলো পঁচে গেছে। গাছটির নিচের অংশের মাটি খুঁড়ে তাই দেখতে পেলাম। এজন্য গাছটি খাবার সংগ্রহ করতে পারছেনা।
বংশবৃদ্ধির চেষ্টা
এদিকে বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. রফিকুল হায়দার বলেন- এই গাছের গোড়ায় বছরখানেক আগে মাটি দেওয়া হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে মাটির সঙ্গে আসা কোনো জীবাণুর কারণে গাছটি মারা গেছে। রফিকুল হায়দার আরও বলেন, গবেষণা দল গত বছর এবং এ বছরে গাছটি থেকে নমুনা নিয়ে গিয়েছিলেন। এগুলো তাঁদের কাছে সংরক্ষিত আছে। তাঁরা চেষ্টা করছেন টিস্যু কালচার ও অন্য মাধ্যমে গাছের বংশবৃদ্ধির। যদি ১০টি চারাও বেড়ে ওঠে, তাহলে একটি বিদেশি গাছ হারিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা পাবে। এ রকম দুটি গাছ ব্রিটিশ ফরেস্টার নিয়ে এসেছিল। দুটি গাছই মারা গেছে।
আইনিউজ/এইচকে
দেখুন আই নিউজ ভিডিও
চা শ্রমিক মা কিভাবে ছেলেকে পড়ালেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, শুনুন সেই সংগ্রামের গল্প
দিনমজুর বাবার ছেলে মাহির বুয়েটে পড়ার সুযোগ
- ফুল | Flower | Eye News
- বিলুপ্ত প্রজাতির গন্ধগোকুল উদ্ধার; লাউয়াছড়ায় অবমুক্ত
- সুন্দরবন সুরক্ষায় গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে সরকার: পরিবেশমন্ত্রী
- জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে উদ্ভিদ প্রজাতির জরিপ করছে সরকার : পরিবেশমন্ত্রী
- টর্নেডো: কি, কেন কীভাবে?
- জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায় ছড়াচ্ছে রোগবালাই
- শুশুক বাঁচলে বেঁচে যায় গোটা জলজ জীবন চক্র
- ফ্রি ডাউনলোড-গোলাপ ফুলের ছবি
- ফুল ছবি | Flower Photo | Download | Eye News
- পটকা মাছ বিষাক্ত কিনা বুঝবেন যেভাবে