আই নিউজ ডেস্ক
জুড়ীতে হাতি দিয়ে চলছে গাছ টানার কাজ
পাহাড় থেকে হাতি দিয়ে গাছ নামানোর দৃশ্য। ছবি- সংগৃহীত
পাহাড়ের উপরে রাখা বড় বড় গাছ আর গাছের গুঁড়ি। যা টেনে নামানো মানুষের সাধ্যের বাইরে তাই করানো হচ্ছে একটি হাতিকে দিয়ে। পাহাড় থেকে মোটা মোটা গাছের গুঁড়িগুলো টেনে টেনে নিচে নামাচ্ছে হাতিটি। অমানবিকভাবে হাতি দিয়ে গাছ টানানোর এ ঘটনাটি ঘটেছে মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলায়।
জুড়ীর দুর্গম পাহাড়ের ভেতরে আইন অমান্য করে এভাবে হাতি দিয়ে পাহাড় থেকে গাছ টেনে নামানোর কাজ করানো হয় হরহামেশাই। এর আগেও জুড়ীতে একটি হস্তিশাবককে প্রশিক্ষণের নামে নির্যাতনের খবর ভাইরাল হয়। যে হাতিটি দিয়ে গাছ টানানো হচ্ছে স্থানীয়রা সেই হাতিটি গর্ভবতী বলে জানিয়েছেন। কিন্তু এ অবস্থায়ই হাতির মালিক হাতি দিয়ে গাছ টানানোর কাজ করাচ্ছেন। ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন-২০১২ অনুযায়ী, কোনো প্রাণী দিয়ে অমানবিক ও নিষ্ঠুরভাবে কাজ করানো দণ্ডনীয় অপরাধ- এই মর্মে উল্লেখ থাকলে জুড়ীতে প্রকাশ্যে হাতি দিয়ে নামানো হচ্ছে গাছের মোটা গুঁড়ি। এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিন থেকে আইন লঙ্ঘন করে গর্ভবতী হাতিটি দিয়ে বড় বড় গাছ সমতলে নামানো হচ্ছে। সরেজমিন এমন দৃশ্য দেখা গেছে জুড়ীর গোয়ালবাড়ি ইউনিয়নের কচুরগুলের কুচাইথল পাহাড়ে। যদিও মাহুত হাতি গর্ভবতী হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন।
বেরো খাসিয়া নামে এক ব্যক্তি পাহাড়ি ২৫টি গাছ বিক্রি করেছেন কামরুল ইসলাম নামে কাঠ ব্যবসায়ী কাছে। সরু পথ বেয়ে সেগুলো নামানো মানুষের পক্ষে কষ্টসাধ্য ও অনেক শ্রমের ব্যাপার। এ কারণে হাতি ব্যবহার করে লোকালয়ে আনা হচ্ছে।
হাতিটি জুড়ীর গোয়ালবাড়ির মাহতাব মিয়ার জানিয়ে হাতির মাউত মাহুত দুদু মিয়া বলেন, পাঁচ হাজার টাকা দৈনিক মজুরির হিসেবে কাজ নিয়েছেন হাতির মালিক। সরকারি অনুমতি থাকায় তারা গাছগুলো সমতলে পৌঁছে দেওয়ার চুক্তিতে কাজ করছেন।
কুচাইথল পান পুঞ্জির বেরো খাসিয়া জানান, অপিকুল ইসলাম ও কামরুল ইসলাম নামে জুড়ীর ব্যবসায়ী দু’ভাই বিভিন্ন প্রজাতির ২৫টি গাছ কিনেছেন। তারা গাছ কেটে সমতলে নিয়ে আসার জন্য হাতি ভাড়া করেছেন।
এ ব্যাপারে ব্যবসায়ী অপিকুল ইসলাম জানান, বাপ-দাদার আমল থেকে পাহাড় থেকে গাছ নামাতে হাতি ব্যবহার করছেন। অন্য কোনো মাধ্যম নেই। আইনে নিষেধাজ্ঞার বিষয়েও তিনি জানেন না।
জুড়ীর লাঠিটিলা রেঞ্জের রেঞ্জার আলাউদ্দিন জানান, সংরক্ষিত বনাঞ্চলের বাইরে মালিকানা পাহাড়ি ভূমি থেকে বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে রাজস্ব পরিশোধ করে গাছ কাটা হয়েছে।
হাতিটি গর্ভবতী নয় জানিয়ে রেঞ্জার আলাউদ্দিন বলেন, প্রয়োজনে মালিক পক্ষ হাতিটি ডাক্তারি পরীক্ষা করে রিপোর্ট দিতে প্রস্তুত রয়েছে।
যদিও বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সহকারী বন কর্মকর্তা শ্যামল কুমার মিত্র জানান, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন-২০১২ অনুযায়ী কোন প্রাণী দিয়ে নিষ্ঠুর কোন কাজ করানো অমানবিক, আইন বর্হিভূত ও দণ্ডনীয় অপরাধ। হাতিটি যদি গর্ভবতী হয়ে থাকে তবে এখানে দুটো অপরাধ সংগঠিত হয়েছে। খোঁজ নিয়ে এব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন।
আই নিউজ/এইচএ
আই নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও দেখুন
জলময়ূর পাখির সাথে একদিনের দারুণ গল্প | A story with Water Peacock
- ফুল | Flower | Eye News
- বিলুপ্ত প্রজাতির গন্ধগোকুল উদ্ধার; লাউয়াছড়ায় অবমুক্ত
- সুন্দরবন সুরক্ষায় গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে সরকার: পরিবেশমন্ত্রী
- জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে উদ্ভিদ প্রজাতির জরিপ করছে সরকার : পরিবেশমন্ত্রী
- টর্নেডো: কি, কেন কীভাবে?
- জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায় ছড়াচ্ছে রোগবালাই
- শুশুক বাঁচলে বেঁচে যায় গোটা জলজ জীবন চক্র
- ফ্রি ডাউনলোড-গোলাপ ফুলের ছবি
- ফুল ছবি | Flower Photo | Download | Eye News
- পটকা মাছ বিষাক্ত কিনা বুঝবেন যেভাবে