মো. রওশান উজ্জামান রনি
আপডেট: ২১:৫০, ১৮ আগস্ট ২০২৩
বনসাই গাছপালা- বৈশিষ্ট্য,পরিচর্যা,দাম ও উপকারিতা জেনে নিন
বনসাই গাছ । ছবি লিখক
ছোট খাটো সুন্দর বনসাই এর দিকে তাকিয়ে থাকতে কার না ভালো লাগে। বিশাল বড় গাছের মতন হুবহু দেখতে পার্থক্যটা শুধু আকারে। বনসাই যে কোন গাছেরই একটা ক্ষুদ্র সংস্করণ। শোপিস হিসেবে এই জীবন্ত গাছ বেশ সৌন্দর্যও বটে।
আমরা কিন্তু সবাই কোথাও না কোথাও বনসাই গাছ দেখেছি। হয় কোনো বন্ধুর বাসায়, শপিংমলে, কোনো রেস্ট হাউজে, মুভিতে কিংবা এনিমেতে। আর এসব বাদ দিলে বই কিংবা ক্যালেন্ডারি তো নিশ্চিত। কিন্তু একটা বিশাল বড় গাছকে কিভাবে এত ছোট করে রাখা যায়। এ নিয়ে অনেকেরই মিস কনসেপশন রয়েছে।
কেউ হয়তো মনে করে গাছকে তার দিয়ে পেঁচিয়ে অত্যাচার করে খাবার না দিয়ে এরকম আকার দেওয়া হয়। তবে তার আগে আপনাদের মনে কি এই প্রশ্ন আসে না। কেন মানুষ বনসাই করছে? শুধু সৌন্দর্য উপভোগ করা ছাড়া যে জিনিস তেমন একটা কাজে আসে না সেটার পিছনে মানুষ কেন এত টাকা ঢালছে? কয়েক ইঞ্চির একটা ছোট্ট গাছের দাম কিভাবে কয়েক হাজার টাকার উপরে।
আজকে এই বনসাই এর সব কৌতূহল, ইতিহাস, খুঁটিনাটি, কিভাবে এজিনিস বানায়, দামের, অক্ষরের মিস কনসেপশন, উপকারিত, আদৌ বনসাই করার মাধ্যমে গাছদের টর্চার করা হচ্ছে কিনা এর সবকিছু বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করব। সব শেষে এত কিছু জেনে আমরা নিজেরা একটা বনসাই গাছ বানিয়ে ফেলতে পারি কিনা সেটাও চেষ্টা করে দেখা যেতে পারে। তো চলুন আর কথা না বাড়ি বনসাই এর জগৎটা একটু ঘুরে আসা যাক।
বনসাই গাছ কি? শুরুতে বনসাই বলতে কি বুঝেয় সেটা জেনে নেই। এটা মূলত দুইটা জাপানিজ শব্দের মিশ্রণ। বন আর সাই, এর মধ্যে বনের মানে হল গাছ আর সাই এর মানে হল ট্রে। এক কথায় ট্রের ভেতর গাছ। কিন্তু এই শব্দে আক্ষরিক অর্থ যতটাই সহজ এর আর্ট ফর্ম দাঁড় করানো কিন্তু ততটাই কঠিন। বনসাই গাছ একটা সাধারণ গাছেরই রুপ। যেটা ম্যানিপুলেট করে ছোট করে রাখা হয়। বনসাই গাছের একটা বীজ নিয়ে যদি অন্য কোনো জায়গায় পুঁতে দেওয়া হয় সেখান থেকে কিন্তু বিশাল দেহি গাছই বের হবে বনসাইনা। সুতরাং বনসাই হলো এমন একটা আর্ট ফর্ম যেখানে একটা সাধারণ গাছকে তেমন বাড়তে না দিয়ে ছোট্ট একটা পটে সাজিয়ে রেখে প্রকৃতির অবিকল প্রতিচ্ছবি নিয়ে আসা হয়।
তবে একটা পরিপক্ষ গাছকে এমন মিনিয়েচার ফর্মে নিয়ে আসতে কিন্তু অনেক ঝুঁকির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। গাছের ভিত্তিকে বছর ধরে প্রোনিং, ওয়ায়ারিং, রিপোর্টিং এবং গ্রাফটিং এর মাধ্যমে একটা গণ্ডির ভেতর সীমাবদ্ধ করে নিয়ে আসা হয়। এসব ছাড়াও গাছের নিয়মিত পরিচর্যা এবং পানির দরকার হয়ে থাকে। এভাবেই এর আর্ট ফর্মটা অন্য সব কিছুর থেকে এতটাই ইউনিক। অনেকে একটা প্রশ্ন করে থাকে যে কোন গাছ লাগানোর পর কত বছর পরে তাকে বনসায় বলা যায়। এক্সপার্টদের মতে একদম বীজ বোনার সময় থেকে শুরু করলে কমপক্ষে দশ বছর পরে তাকে বনসাই হিসেবে আখ্যা দেওয়া যেতে পারে। এদের মাঝে যে গাছের উপর যত বেশি শ্রম দেওয়া হয় তাদের মূল্য তত বেশি বৃদ্ধি পায়। আর্টিস্টিক ফাইবার দিয়ে গাছদের একটা নির্দিষ্ট সেপে এনে রাখা, পাথর দিয়ে সাজানো এবং অনেক সময় অন্যান্য গাছের সাথে এমন ভাবে তাদের প্লেস করে রাখা হয় যা দেখে মনে হবে ছোট্ট একটা বোনকে রিপ্রেজেন্ট করা হচ্ছে।
বনসাই গাছের ইতিহাস; এখন চলুন দেখা যাক এই বনসাই বানানোর পেছনের ইতিহাস কি ছিল? যদিও বনসাই শব্দটা জাপানিস তবে উৎপত্তি কিন্তু চায়নাতে। সাতশো খ্রিস্টাব্দের কাছাকাছি সময় ট্যাং ডাইনেস্টির আমলে চাইনিজরা ফুল ওয়ান নামে একটা আর্ট ফর্ম তৈরি করা শুরু করে। যেটা এখনকার দিনে পুন-সাই বা পেনজিং নামে পরিচিত। যার বৈশিষ্ট্য ছিল স্পেশাল টেকনিকের মাধ্যমে গাছকে ভ্রামন আকৃতি দিয়ে একটা কন্টেইনারের মধ্যে বড় করা।
চাইনিজ ভাষায় পেন, প্যান বা পান মানে হল মাটি দিয়ে বানানো চ্যাপ্টা বল। তবে চায়নাতে বনসাই এর উৎপত্তি প্রায় দুই হাজার বছর আগে হলেও জাপানের ব্যাপ্তি ঘটেছে গত এক-হাজার বছর ধরে। সেই সময় চায়নার সম্রাট তার ছোটবেলার প্রকৃতির একটা অংশকে এমনভাবে সামনে পেতে চাচ্ছিল যা তাদের হোমটাউনের কথা মনে করিয়ে দেবে। অনেকটা ছবির মতো। তো যেই ভাবা সেই কাজ। ঔ সময় মঙ্করা তৎক্ষণাৎ বেরিয়ে পড়লো এবং ছোট ছোট গাছ দিয়ে জীবন্ত শোপিস বানিয়ে ফেললো। যেটা পরবর্তীতে সম্রাটদের ঘরে শোভা পেতে থাকলো। শুরুতে চায়নার শুধুমাত্র এলিট সোসাইটির মানুষরাই এই বনসাই তৈরি করতো। যা খুব দামি উপহার হিসাবে পুরো চায়নাতে বিক্রি হতো। পরবর্তীতে কামাখ্যা পিরিয়ডে জাপানিজরা চায়নাদের এই কালচারটা সুদক্ষ কৌশলে জাপানে এই বনসাই গাছপালা গড়ে তুলতে শুরু করে। কিন্তু এই আর্ট যখন জাপানে পৌঁছালো তখন জাপানিজরা একে আরেক ধাপ এগিয়ে অন্য ধরনের স্টাইলে নিয়ে গেলো। তারা গাছের পাশাপাশি পট বা টপকেও গুরুত্ব দেওয়া শুরু করলো। যেটা বনসাই গাছের সম্পূর্ণরূপে প্রেজেন্টেশনে একটা চমৎকার সমন্বয়ে নিয়ে আসে। এজন্য বনসাইকে একটা আর্ট ফর্ম হিসেবে অনেকেই ধরে থাকে। তবে পেইন্টিং বা স্কাল্পচারের সাথে এর পার্থক্য কোথায়? পার্থক্য হল একটা পেইন্টিং একবার বানিয়ে ফেলার পরেই কাজ শেষ হয়ে যায়। তবে বনসাই আর্ট এর সাথে শিল্পীকে সব সময় লেগে থাকতে হয়। এর যত্ন নিতে হয় সেটা একটা চিত্রকর্মে করা লাগে না। গাছ নিয়ে কারবার বিধায় অনেকেই এটাকে আর্ট না বলে শুধু হর্টিকালচার বলতে চায়। কিন্তু এখানে দেখা যায় গাছের বৃদ্ধিতে অনেক ধরনের আর্টিস্টিক চয়েস দিতে হয়। আর গাছটিকে দেখানোর সময় নানা ধরনের প্রেজেন্টেশনেরও ব্যাপার থাকে। তাই বনসাইকে এমন ধরনের আর্ট বলা হয় যেটাতে কখনো লাস্ট ট্রপ দেওয়া হয় না। তবে বনসাই করার বেশিরভাগ টেকনিক্যাল মাস্টার হতে অনেক বছর সময় লেগে যায় এবং যেকোনো ধরনের ভুল একটা গাছের পুরো আকৃতি সারা জীবনের জন্য পাল্টে দিতে সক্ষম। এমনকি শতাব্দী ধরে বেড়ে ওঠা গাছকে মেরেও ফেলতে পারে। এজন্য বলা হয় বনসাই সবসময় আনস্টেবেল। যে পরিমান সময় এবং গতি পরিবর্তন বনসাই এর পেছনে দিতে হয় সেটা অন্য কোন শিল্পের কষ্টের সাথে তুলনা করা যায় না।
বনসাই গাছের পাতা; এখন আসা যাক বনসাই এর পাতা কেন বড় হয় না এর ভেতরকার বিজ্ঞান। বনসাই এই গ্রোথের পেছনে যে বায়োলজিকাল সাইন্স কাজ করে তা হলো এপিকাল মেরিস্ট্যান্ড। এপিক্যাল এসেছে অ্যাপিক্স শব্দ থেকে যার মানে হল হাইয়েস্ট পয়েন্ট। আর মেরিস্ট্রিম এসেছে মেরিস্টেমেটিক্স সেল সোজা ভাষায় স্টেম সেল থেকে। এই স্টেম সেলগুলো পাওয়া যায় মূলত গাছের স্যুটস এবং রুটসের মাথায়। স্যুটসের এপিক্যাল মেরিস্টে গাছের ফুল, ফল, পাতা এবং উচ্চতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। গাছ যখন শেকড় দিয়ে পানি নেওয়া শুরু করে তখন তা মুল হয়ে কান্ড দিয়ে শাখা প্রশাখার চুড়ায় গিয়ে এপিক্যাল মেরিস্টেম সেলে পৌঁছে যায়। এরপর এই সেল যখন বড় হয় তখন এর একটা অংশ নতুন পাতা গজাতে সাহায্য করে। এখন বনসাই এর পাতা ছোট হওয়ার পেছনে রিসার্চারদের থিওরি হল, বনসাই এর পাতাতে তুলনামূলকভাবে কম সেল থাকে। বনসাই এর শেকড় কেটে ছোট রাখা এবং কম মাটি থাকার ফলে তা এপিক্যাল মেরিস্ট্রিম এর বৃদ্ধি কমিয়ে দেয়। যার ফলে গাছের পাতা ছোট হতে থাকে। আর এর ফলে বনসাই সুন্দর ছোট্ট পকেট সাইজের কাজ হয়ে বাড়তে থাকে।
বনসাই গাছ বানানোর নিয়ম এবং পরিচর্যা; সায়েন্সের আলাপ শুনে বোরিং লাগছে বুঝতে পারছি। চলুন তাহলে এসব বাদ দিয়ে জেনে আসা যাক বনসাই তৈরিতে কি ধরনের স্কেলের প্রয়োজন হয়।
বনসায় এমন এক ধরনের আর্ট ফর্ম যেটা শিখতে কয়েক বছরের ট্রেনিং আর শতাব্দীর মতো ডেডিকেশানের দরকার হয়। তবে এই জিনিস করতে যে স্কিলের সবচেয়ে বেশি দরকার হয় তা হল ধৈর্য। অন্যান্য গাছের মতন এখানে শুধু পানি দিলেই যে হয়ে যাবে তা কিন্তু না। প্রতিটা গাছের জন্য আলাদা নিয়মের ট্রেনিং রুমিং করা, গাছের ডাল, সঠিক গন্তব্য নেওয়ার জন্য সেই অনুযায়ী ডাল ওয়রিং করা এমনকি শুধুমাত্র মেইন বেজ ডাল মোটা করার জন্যও কিছু ট্রিক মেনে কাজ করা হয়। এই ওয়রিং দেখে অনেকেই ভাবে গাছকে বেঁধে পেঁচিয়ে এর উপর হয়তো অত্যাচার করা হচ্ছে। আসলে কিন্তু তা না। অ্যালুমিনিয়াম বা কপার তার দিয়ে এমনভাবে লুজ করে ডালে প্যাঁচানো হয় যা গাছের উপর আলাদা করে কোন ক্ষতি বা চাপ তৈরি করে না। এছাড়াও এক একটা গাছের জন্য নির্দিষ্ট সময় পরপর রিপোর্টিং এর ব্যবস্থা করতে হয়। যেখানে গাছের শিকড় কেটে তাকে নতুন করে নতুন পোর্টে বসানো হয়। এখন প্রশ্ন হতে পারে এসব যত্ন ছেড়ে দিলে বনসাইয়ে শুধুমাত্র পানি দিলে কি হবে? তখন যা হবে তা হলো গাছটি দ্রুতই একটা ঝোপে পরিণত হবে। না ছাঁটার ফলে গাছের ডালপালা নিজেদের মতন করে বাড়তে থাকবে। যা গাছের মূল কাণ্ডকে আর মোটা হতে দেবে না। ফলে গাছের গঠনও কয়েকদিনের মধ্যে বদলে যাবে। এজন্য বলা হয় বনসাই এর জন্য প্রফেশনাল কেয়ার লাগে যা এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা দিতে পারে।
বনসাই ভুল ধারণা; এখন চলুন জানা যাক বনসাইকে ঘিরে ভুল ধারণা কি কি আছে। বনসাই কিন্তু আসলে পৃথিবীতে সবচেয়ে স্পয়েল এবং পাম্পারট গাছ। কারণ বনসাই এর মালিকেরা গাছকে স্বাস্থ্যবান রাখার জন্য সব সময় তাদের ভালো পরিচর্যা করে থাকে। যেহেতু বনসাইয়ের উপর সব সময় ছাটাই এবং অন্যান্য কাজ করা হয় তাই গাছ সুস্থ না থাকলে তাদের বেড়ে ওঠা অনেক কষ্টকর হয়ে যায় এবং আশানুরূপ ফলও পাওয়া যায় না। সাধারণ গাছের মতো বনসাইয়েরও প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং স্বাভাবিক তাপমাত্রা প্রয়োজন হয় যেটা ঘরের ভেতর থেকে দেওয়া সম্ভব না। সিনেমাতে যে সামাজিক অনুষ্ঠানে ঘরের ভেতরে এনে বনসাই সাজিয়ে রাখা হয় তা কিন্তু কিছু সময়ের জন্য। সাধারণত তা বাইরেই রাখা হয়। কারণ আবহাওয়া যে পরিবর্তন আসে তা বনসাই করা প্রতিটি গাছের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। যেটা আমাদের এসি রুম থেকে দেয়া সম্ভব না।
বনসাই গাছের দাম; এখন বলুন এত কষ্ট করার পরে একটি বনসাই গাছের দাম কেমন হতে পারে। একটা বংশের সৌন্দর্য বা মূল্য তার দাম দেখে বোঝা যায়। এমনকি ২০-৩০ হাজার ডলারে বনসাই কিন্তু মোটেও আনকমন না।
তবে বনসায়ের দাম সর্বোচ্চ কত পর্যন্ত যেতে পারে তার একটা অনুমান দেই। ২০১২ সালে একটা আন্তর্জাতিক বনসাই কনভেনশনে সিঙ্গেল একটা বনসাই গাছ প্রায় সাড়ে ৯ লক্ষ ডলারে সেল করা হয়েছিল। এছাড়া সেখানে অনেক গাছকে মূল্যহীন হিসেবেও ধরা হয়ে ছিলো। মূল্য বোঝানোর জন্য অনেকেই বনসাইকে মানুষের সাথে তুলনা করে। যেমন বেশি বয়স হলেই যে সব মানুষ জ্ঞানী এবং সামাজিক হয় না, তেমনি শুধু ১০০ বছর হলেই যে বনসাই গাছ খুব দামি হবে তাও কিন্তু না। তাই মানুষ এবং গাছ দুইটি বয়সের পাশাপাশি সুন্দর হতে হবে। যদিও সুন্দরের ডেফিনেশন এক এক জনের কাছে একেক রকম তবে আমরা সেটাকে সুন্দর বলি যেটা আমাদের হৃদয়কে অনুপ্রাণিত করে। মানুষের ক্ষেত্রে দেখা যায় কোন একটা ফিচার ব্রাঞ্চ এর পেছনে আর্টিস্টদের খাটুনি এবং সবকিছু মিলিয়ে গাছটি নিজেকে এমন চমৎকার ভাবে প্রেজেন্ট করার ক্ষমতা রাখে যা ভাল দাম হাকাতে বাধ্য।
বনসাই গাছের উপকারিতা; এতকিছু তো বুঝলাম কিন্তু এই বনসাই পেলে বসে বড় করে আমাদের লাভটা কি?
বনসাই এমন এক ধরনের সৌন্দর্যের অধিকারী যার দিকে তাকিয়ে থাকলে দর্শকের ভেতর থেকে একটা ইমোশনাল রেসপন্স বেরিয়ে আসে। বনসাই রাখার একটা দীর্ঘমেয়াদী সুবিধা হল গাছটাকে ১০ থেকে ২০ বছর পরে আমরা কিভাবে দেখতে চাই তা বর্তমানে প্ল্যান করে রাখা যায়। আর এখন বানিয়ে রাখার ডিজাইনের আউট কাম প্রায় এক যুগ পরে উপভোগ করার মতো আনন্দ অন্য কোন শিল্পে পাওয়া ভাড়। একটা বিশাল বড়গাছ যতদিন বাঁচে বনসাই কিন্তু তত দিন বাঁচতে পারে। তবে বেশ আদর যত্ন নেয়ার ফলে স্বাভাবিক গাছের থেকে বয়সে ২০% বেশি আয়ুকাল পেয়ে থাকে। এছাড়াও বনসাই নিয়ে কাজ করাটা অনেকটা ধ্যান করার মতো। কারণ বনসাই মানুষের ভেতরে অন্যের প্রতি বেশ যত্নশীল হওয়া শেখায়। আরো ভাবতে শেখায় আমাদের নিজেদের জীবন কতটা ছোট। আর এই ছোট জীবনেই আমরা কিভাবে এমন কিছু তৈরি করে যেতে পারি যেটা আমার পরবর্তী জেনারেশনের জন্য কল্যাণকর হবে।
বনসাই সমস্যা; সবশেষে জেনে আসি এ শিল্পী কি ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। বনসে কয়েক প্রজন্ম ঘিরে গড়ে ওঠা শিল্প।
যেহেতু অনেকটা ঘরোয়া ভাবে এই ব্যবসা গড়ে ওঠে তাই তুলনামূলকভাবে চাহিদা অনুযায়ী বাজারে বংশের সংখ্যা অনেক কম। যেটা একটা বড় সমস্যা। এখনকার বনসাই এর কালেক্টররা যে বনসাই নিয়ে কাজ করছে তা হয়তো ৩০ থেকে ৪০ বছর আগে। কিন্তু নতুন করে কোন বনসাই খুব কম বানানো হচ্ছে। তাই সামনে যে সংখ্যা আরো কমে আসবে তা বলার অপেক্ষায় রাখে না। এছাড়াও বনসাই পট বা টুলস গুলো অধিকাংশ সময় হাতের তৈরি হয়। যার পেছনে হাজার ডলারের মতন খরচা হয়ে যেতে পারে। আর একজন বনসাই মেকারের যে পরিমাণ সময় এর বেছে দিতে হয় তা যে কারো সাধারণ ইনকামের সাথে তুলনা করলে খুবই কম শোনাবে।
তবে সব কথার শেষ কথা এই প্রত্যেকটি গাছ হল একটা আর্ট। যাদের মূল্যায়ন করা হয় সৌন্দর্য এবং আর্টিস্টদের ভিষনের উপর নির্ভর করে। এত আলোচনার পরে এটাই বলতে হয়, বনসাই আমাদের সাহায্য করে প্রকৃতিকে খুব কাছ থেকে দেখতে। এ ব্যস্ত জীবনে যেখানে চাইলেই অরণ্যে হারিয়ে যাওয়া যায় না সেখানে বারান্দার পাশে ছোট্ট বনসাই কিছুটা হলেও এনে দিতে পারে সবুজ দেখার প্রশান্তি। এই আধুনিক সমাজে অনেকেই বোঝার সুযোগ পায় না কিভাবে প্রকৃতিতে একটা গাছ বড় হয়। তার কি প্রয়োজন কিভাবে সূর্য কাজ করে, প্রকৃতির সাথে আমাদের সম্পর্ক এমন আরো অনেক কিছু। সেখানে বনসাই পারে নতুন করে প্রকৃতির সাথে আমাদের একটা সম্পর্ক তৈরি করে দিতে। প্রকৃতির সাথে নিজের আত্মার মিল ঘটাতে। তো এই ছিল বনসাই নিয়ে আমাদের আদ্যপ্রান্ত। বনসাই গাছ নিয়ে কোন কিছু জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
আই নিউজ/আর
- ফুল | Flower | Eye News
- বিলুপ্ত প্রজাতির গন্ধগোকুল উদ্ধার; লাউয়াছড়ায় অবমুক্ত
- সুন্দরবন সুরক্ষায় গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে সরকার: পরিবেশমন্ত্রী
- জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে উদ্ভিদ প্রজাতির জরিপ করছে সরকার : পরিবেশমন্ত্রী
- টর্নেডো: কি, কেন কীভাবে?
- জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায় ছড়াচ্ছে রোগবালাই
- শুশুক বাঁচলে বেঁচে যায় গোটা জলজ জীবন চক্র
- ফুল ছবি | Flower Photo | Download | Eye News
- ফ্রি ডাউনলোড-গোলাপ ফুলের ছবি
- পটকা মাছ বিষাক্ত কিনা বুঝবেন যেভাবে