Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, রোববার   ২০ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ৭ ১৪৩২

রুহুল আমীন রুহেল

প্রকাশিত: ০৯:৪৬, ৭ মার্চ ২০২১
আপডেট: ১৩:৫৭, ৭ মার্চ ২০২১

সাতই মার্চের ভাষণ বাঙালির ইতিহাস ঐতিহ্যকে মহিমান্বিত করেছে

সাতই মার্চের ভাষণ আমার আমাকে তৈরী করেছে। এই ভাষণ বাঙালির জাতীয় অস্তিত্বকে তৈরী করেছে। বাঙালির জাতির সাড়ে তিন হাজার বছরের বয়সে অখন্ড স্বাধীনতা কখনো ছিলনা। ভূমিপুত্র বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে এই ভাষণের পথ ধরে বাঙালির আজকের এই অবস্থান। এই ভাষণের মাধ্যমে বাঙালিকে মহিমান্বিত করেছে। 

কেন জানি বাঙালির জাতি বঙ্গবন্ধুর অপেক্ষা করছিল। হয়ত স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ অপেক্ষো করছিলেন। তাঁর সভ্যতার সংকটের একদম শেষ বয়সে লিখেছিলেন, তিনি একজন পরিত্রাণকর্তার কথা ভাবছিলেন এবং তিনি বলেছেন পূর্ব দিগন্তে অভিভূত হবেন এবং বিচ্ছিন্ন সভ্যতার মানবিক মূল্যবোধে মানুষকে মহিমান্বিত করে তুলবেন। 

অনেক আগেই কাজী নজরুল ইসলাম বলেছিলেন, বাঙলা বাঙালির হউক, বাঙলার জয় হোক, বাঙালীর জয় হউক। বাঙলার মাটি দুর্জয় ঘাঁটি তৈরী করে শহীদ তিতুমীরের বাঁশের কেল্লার চেয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের দূরদর্শী দূরদৃষ্টি প্রতুত্ততপন্নমতি মেধা প্রঙ্গা সিংহের মতো সাহসী, হরিণের চেয়ে সজাগ দৃষ্টিভঙ্গি, ইতিহাসের ৬ দফা মেঘনাকাট, আব্রাহাম লিংকনের গেডিসপার্গ এড্রেসকে হার মানিয়ে ছিলো। 

গেডিসপার্গ এড্রেস ছিলো আমেরিকার গূহযুদ্ধের বিভিষিকাময় পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটমূলক ভাষণ। আর ৭ই মার্চের ভাষণ ছিলো অগ্নিস্ফুলিঙ্গের মধ্যে দাঁড়িয়ে ঝড়ের বেগে আলোর আধারের মুখোমুখি ভাষণ। অবাক বিস্ময়ে অবাক পৃথিবী প্রত্যক্ষ করেছিল অবিসম্ভাবী বাংলাদেশকে। পূর্ব দিগন্তে রক্তরবি মুজিব শুষিতের কবি। তাই কবি নির্মলেন্দু গুণ অত্যন্ত চমৎকারভাবে বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণকে দেখেছিলেন অমর কবিতা হিসেবে।

তিনি তাঁর স্বাধীনতা, এই শব্দটি কিভাবে আমাদের হলো কবিতার শেষাংশে লিখেছেন...

শত বছরের শত সংগ্রাম শেষে,
রবীন্দ্রনাথের মতো দৃপ্ত পায়ে হেঁটে
অত:পর কবি এসে জনতার মঞ্চে দাঁড়ালেন।
তখন পলকে দারুণ ঝলকে তরীতে উঠল জল,
হৃদয়ে লাগিল দোলা, জনসমুদ্রে লাগিল জোয়ার 
সকল দুয়ার খোলা। কে রোধে তাঁহার বজ্রকণ্ঠ বাণী?
গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তাঁর অমর-
কবিতাখানি: 
‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’
সেই থেকে স্বাধীনতা শব্দটি আমদের। 

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাতই মার্চের ঐতিহাসিক  ভাষণ এখন আন্তর্জাতিক সম্পদ। জাতিসংঘের শিক্ষা বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কা ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর এই ভাষণকে বিশ্ব প্রামান্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এর মাধ্যমে বাঙালি জাতির ইতিহাস বহিঃবিশ্বে মহিমাণিত হল। 

রুহুল আমীন রুহেলযুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, গ্রেটার ম্যানচেস্টার আওয়ামী লীগ ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক (১৯৯৮-২০০২), বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, মৌলভীবাজার জেলা শাখা।

  • খোলা জানালা বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। eyenews.news-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে eyenews.news আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।
Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়