মো. আব্দুল কাইয়ুম
আপডেট: ১৫:৩০, ৩০ জুন ২০২২
পদ্মা সেতু মানুষকে দেখতে দিতে হবে
পদ্মা সেতু উদ্ভোধনের দিন আমার বার বার মনে হচ্ছিল 'পাবলিক' এই সেতু দেখবে কি করে? বিনোদনের সুযোগ বঞ্চিত বাঙালি জাতি এই সেতু দেখার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়বে তা নিশ্চিত। কিন্তু দেখার সুযোগ কই? বাসে চড়ে সেতু পাড় হওয়ার সময় চলন্ত বাসে বসে কি শান্তিমত ব্রীজটা দেখা যাবে? দু’একটা ছবি বা 'সেল্ফি' না তুললে কি মনের সাধ মিটবে?
পৃথিবীর অনেক দামী সেতুতে মানুষের দেখার ব্যাবস্থা আছে; সাইক্যাল লেন, পায়ে হাটার লেন আছে। নিউ ইয়র্কের বিখ্যাত ব্রুকলিন ব্রীজ দেখতে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ সারা পৃথিবী থেকেই আসে। এই সেতু পায়ে হেঁটে পার হওয়া যায়। তবে কি পদ্মা সেতুতে পায়ে হাঁটার পথ না রেখে ভুল করেছেন সংশ্লিষ্টরা?
অবশ্যই দেখবে, দেখতে দিতে হবে। দেশে গেলে আমিও দেখতে যাব। দেখার জন্য একটি কাজ করা যেতে পারে। সেতুর দুই প্রান্তে কিছু ছাদ খোলা দোতলা বাসের ব্যবস্থা করা যেতে পারে দর্শনার্থীদের জন্য। তারা টিকেট কেটে এই বাসে চড়ে খোলা ছাদে বসে সেতু দেখবে, সেল্ফি তুলবে। এতে জনগণ সেতু দেখার সুযোগ পাবে, সরকারও কিছু বাড়তি আয় করতে পারবে।
অবশ্যই না, ৬.১৫ কিলোমিটার লম্বা একটি ব্রীজে পায়ে হাঁটার রাস্তা রাখার কোন যুক্তি নাই, রাখা হয় না কোথাও। তাহলে উপায়? মানুষ সেতু দেখবে না?
অবশ্যই দেখবে, দেখতে দিতে হবে। দেশে গেলে আমিও দেখতে যাব। দেখার জন্য একটি কাজ করা যেতে পারে। সেতুর দুই প্রান্তে কিছু ছাদ খোলা দোতলা বাসের ব্যবস্থা করা যেতে পারে দর্শনার্থীদের জন্য। তারা টিকেট কেটে এই বাসে চড়ে খোলা ছাদে বসে সেতু দেখবে, সেল্ফি তুলবে। এতে জনগণ সেতু দেখার সুযোগ পাবে, সরকারও কিছু বাড়তি আয় করতে পারবে। যমুনা সেতুতে এই ব্যবস্থা করা হয়েছিল সেখানে পর্যটন ট্রেনও চালু করা হয়েছিল যাতে টিকেট কেটে পর্যটকরা ট্রেনে চড়ে সেতু পার হতে পারে। এখনো এগুলি চালু আছে কি না জানি না।
সেতুতে কিছু মানুষ নামাজ পড়েছে, একজনকে ভক্তি দিতে দেখলাম, কেউ টিকটক ভিডিও করেছে, কেউ কেউ হিসু করেছে! শুধু হাগু করাটা বাকী রেখেছে! সুযোগ পেলে ওটাও হয়তো করতো!
এগুলিকে আমি অতটা নেতিবাচক ভাবে দেখছি না। মানুষের সেতু দেখার এই অদম্য ইচ্ছা থামানো খুব কঠিন। যমুনা সেতুতে আমি নিজেও নেমে ছবি তুলেছিলাম সেই প্রথম যৌবনে। যে হুজুর টাইপের লোকগুলি নামাজ পড়েছে তারা মূলত সেতু দেখতেই গিয়েছিল। যে লোকটি জুতা পায়ে ভক্তি বা সেজদা দিয়েছে তিনিও আবেগে স্রষ্টার কাছে হয়তো শুকরিয়া আদায় করেছেন। কেউ হয়তো শুকরানা নামাজ পড়েছে।
সবচেয়ে দুঃখজনক দুইটি যুবক ছেলে মোটর সাইকেলে সেতু দেখতে গিয়ে সেতুতে দুর্ঘটনায় মারা গেছে। কর্তৃপক্ষ আপাতত সেতুতে মোটর বাইক নিষিদ্ধ বা বন্ধ করেছে। সেতু দেখার জন্য বা পর্যটনের উদ্দেশ্যে সেতুতে মোটর বাইক উঠতে দেয়া কিছুতেই উচিত হবে নাট
উদ্বোধনের পর পর সেতু দেখার উচ্ছ্বাস থামানো কঠিন হবে, বিশেষ করে তরুণরা এ সেতু দেখতে যাবেই। তাই উদ্বোনের দিন আমার বার বার মনে হয়েছিল যে যানবাহন চলাচলের জন্য সেতু খুলে দেয়ার অন্তত মাস খানেক আগে যদি শুধু দেখার জন্য সেতুটি উন্মুক্ত রাখা যেত।
কিছুই নেতিবাচকভাবে দেখছি না ঠিক, কিন্তু যে ছেলেটি সেতুর নাট বল্টু খুলছিল সে কেন এই কাজটি করতে গেল সেই হিসাবটি আমি মিলাতে পারছি না। সবশেষে কর্তৃপক্ষের কাছে দাবী, পর্যটক বা উৎসাহীদের সেতুটি দেখার জন্য একটি গ্রহনযোগ্য সুন্দর ব্যবস্থা দ্রুত চালু করুন।
মো. আব্দুল কাইয়ুম, নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র
আইনিউজ/এইচএ
- বাংলাদেশে শিশু শ্রম: কারণ ও করণীয়
- ২০২৩ সালে কী সত্যিই ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ আসছে?
- পনেরো আগস্ট পরবর্তী রাজনৈতিক দ্বন্ধ
মোশতাক বললেও মন্ত্রীদের কেউ সেদিন বঙ্গবন্ধুর লাশের সঙ্গে যায়নি! - করোনা যেভাবে চিকিৎসকদের শ্রেণীচ্যুত করলো
- চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সমস্যা এবং সম্ভাবনা
- ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কুকুর স্থানান্তরকরণ ও ভবিষ্যৎ
- শরীফার গল্প পড়তে আমাদের এতো কেন সমস্যা?
- ফিলিস্তিনে প্রাণ হারাচ্ছেন গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা
- মহান মুক্তিযুদ্ধে বিদেশী গণমাধ্যমের ভূমিকা
- রেমডেসিভির একটি অপ্রমাণিত ট্রায়াল ড্রাগ