ইমতিয়াজ মাহমুদ
পুষ্পের চেয়েও পবিত্র এই বাচ্চাটাকে ওরা হত্যা করেছে
মাআশা আমিনির মৃত্যু এবং পুরুষতন্ত্র নিয়ে লিখেছেন কলামিস্ট ইমতিয়াজ মাহমুদ
এই মেয়েটির নাম মাআশা আমিনি। ইরানের মেয়ে। ইরানের মোরাল পুলিশ ওকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। এই ছবিটা ওর হাসপাতালের ছবি। কেন মেরেছে পুলিশ ওকে? কারণ মাআশা যেভাবে হিজাব পরেছিল সেটা নাকি ওদের চোখে যথেষ্ট মোরাল বা নৈতিক হয়নি। ছবিটা ডয়েচেভেলের ওয়েবাসাইট থেকে নিয়েছি।
মাআশার মৃত্যুতে একটু ইমোশনাল আছি। ২২ বছর হয়েছিল মাত্র ওর বয়স, আমার ছোট মেয়েটার সমান। আমি ওর পিতার কথা কল্পনা করি, ওর মায়ের কথা, আর শোক প্রকাশের সুবিন্যস্ত সভ্য ভাষা আমার আর আসে না। ক্রুদ্ধ হই। ক্রোধ আমার সকল শোভন সভ্য সৌজন্যকে ম্লান করে দেয়। আমি থুথু দিই ওদের সকলের মুখে, ওদের সকল বিধি বিধান ইত্যাদিতে।
পরে বিস্তারিত লিখতে চেষ্টা করবো, এখানে আপনাদেরকে বলে রাখি, এই যে পর্দার ধারনা ও পর্দার বিধান এটার ভিত্তি হচ্ছে পিতৃতন্ত্র। পিতৃতন্ত্রের মুল কথাটা হচ্ছে যে নারী আর পুরুষ সমান মানুষ নয়, নারী পুরুষের সমান মানুষ নয়- নারী পুরুষের তুলনায় অধম এবগ্ন নারীর সৃষ্টি হয়েছে পুরুষের ভোগের জন্য। যেহেতু ভোগের পণ্য, তাইলে নারী চেহারা শরীর এইসব তো ঢেকে রাখতেই হবে।
পোশাকের স্বাধীনতা, আমার শরীর আমার সিদ্ধান্ত আমার পছন্দ এইসব তো গুরুত্বপূর্ণ কথা আরকি- কিন্তু মুল কথাটা হচ্ছে নারী ও পুরুষের সমতা, সমতা মানে সমতাই, উনিশ বিশ নয়। পিতৃতন্ত্রকে উৎখাত ছাড়া নারী ও পুরুষের সমতা হবে না। এই কথাটা মনে রাখবেন। পিতৃতন্ত্রকে উৎখাত ছাড়া, ওয়েল, কিছু আপোষ রফা হতে পারে বটে, কিন্তু নারীর আর মানুষের মর্যাদা লাভ হবে না।
মাআশার ছবিটা দেখুন, পবিত্রতম পুষ্পের চেয়েও পবিত্র এই বাচ্চাটাকে ওরা হত্যা করেছে। আমি কেবল প্রত্যাশা করি আমার জীবদ্দশায়ই আমি পৃথিবীর সকল মাআশাকে দেখবো সড়কে লোকালয়ে পিতৃতন্ত্রের বিনাশের আগুন জ্বালিয়ে দিতে। আমাদের নুসরাতের কথা মনে পড়ে গেল কেন যেন।
লেখকের আরও লেখা-
- ভাগাভাগি করে নিয়ে ওরা বলবে ‘নারীকে দিয়েছি সর্বোচ্চ সম্মান’
- শাবি ভিসি, নারীবাদ, ফ্যাসিবাদ ও একটি কৌতুক
- ভাস্কর্য আর মূর্তির মধ্যে কি পার্থক্য?
লেখক ইমতিয়াজ মাহমুদ, অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট।
- খোলা জানালা বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। eyenews.news-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে eyenews.news আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।
- বাংলাদেশে শিশু শ্রম: কারণ ও করণীয়
- ২০২৩ সালে কী সত্যিই ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ আসছে?
- পনেরো আগস্ট পরবর্তী রাজনৈতিক দ্বন্ধ
মোশতাক বললেও মন্ত্রীদের কেউ সেদিন বঙ্গবন্ধুর লাশের সঙ্গে যায়নি! - করোনা যেভাবে চিকিৎসকদের শ্রেণীচ্যুত করলো
- চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সমস্যা এবং সম্ভাবনা
- ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কুকুর স্থানান্তরকরণ ও ভবিষ্যৎ
- শরীফার গল্প পড়তে আমাদের এতো কেন সমস্যা?
- ফিলিস্তিনে প্রাণ হারাচ্ছেন গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা
- মহান মুক্তিযুদ্ধে বিদেশী গণমাধ্যমের ভূমিকা
- রেমডেসিভির একটি অপ্রমাণিত ট্রায়াল ড্রাগ