সাইফুর রহমান তুহিন
সাময়িক প্রসঙ্গ : পর্যটন শিল্পে প্রয়োজন আমূল পরিবর্তন
বিগত আড়াই দশক জুড়ে যে শিল্পটি গোটা বিশ্বজুড়ে ব্যাপক প্রসার লাভ করেছে তা হলো পর্যটন শিল্প। বিশ্বের এমন অনেক দেশ রয়েছে যাদের অর্থনীতির মেরুদন্ডই হলো পর্যটন। ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ তথা ওয়েস্ট ইন্ডিজের দিকে একবার তাকান। বার্বাডোজ, ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো, জ্যামাইকা, অ্যান্টিগুয়া, সেন্ট লুসিয়া, সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস, সেন্ট ভিনসেন্ট, গ্রেনাডা; এই দ্বীপদেশগুলোর মধ্যে শুধু ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোতেই কিছু প্রাকৃতিক ও খনিজ সম্পদ আছে। তাদেরকে বাদ দিলে এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোর একমাত্র ভরসা হলো পর্যটন।
সৃস্টিকর্তা যেমন তাদেরকে দু’হাত উজাড় করে নয়নাভিরাম সব সমুদ্র সৈকত আর নজরকাড়া পাহাড়-টিলা দিয়েছেন তেমনি তারাও সেইসব স্থানকে দক্ষ শিল্পীর নিপুণ আঁচড়ের মতো পর্যটকদের উপযোগী করে সাজিয়ে রেখেছে। আর তাই আমরা দেখি যে, ইউরোপের অধিকাংশ দেশের মানুষের ছুটি কাটানোর জন্য প্রথম পছন্দ হলো ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ। এমনকি হলিউড-বলিউডের বড় বড় সুপারস্টাররাও ছুটি কাটানো অথবা মধুচন্দ্রিমার জন্য এসব দেশে প্রায়ই যান।
আলোচনার শুরুতেই অনেক দূরের এলাকায় চলে গেলাম। সত্যি কথা বলতে কী টিভিতে যখন এসব জায়গার ছবির মতো সৌন্দর্য দেখি তখন নিজেরও ইচ্ছে হয় এক্ষুণি ছুটে যাই। তবে আকর্ষণীয় জায়গা তো আমার নিজের মহাদেশ এশিয়াতেও কম নেই। ভূ-স্বর্গ হিসেবে পরিচিত ভারতের কাশ্মীর রাজ্যের কথা একবার ভাবুন। কম্পিউটারের জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন গুগলে একবার ‘কাশ্মীর ফটোস’ লিখে সার্চ দিন। এতো এতো চোখধাঁধাঁনো ছবি আসবে যে রীতিমতো ভিরমি খাওয়ার দশা হবে আপনার। তবে শতভাগ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকলে কাশ্মীরের পর্যটন হতে পারতো আরও বেশি সমৃদ্ধ এবং পর্যটকরা অনেকটা নির্ভয়ে সেখানে যেতে পারতেন।
এছাড়াও ভারতের আগ্রার তাজমহল, গোয়া, হিমাচল প্রদেশ, সিকিম, পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং, মেঘালয় রাজ্য প্রভৃতি এলাকায় সারাবছর পর্যটকের ভিড় লেগেই থাকে। ভারতের পর্যটন তো অনেক আগে থেকেই বিশ্বব্যাপী পরিচিত। একইভাবে নেপালের কথাও বলা যায়। হিমালয়ের কোল ঘেষা এই দেশটির অর্থনীতির মেরুদন্ডই হচ্ছে পর্যটন শিল্প।নেপালের প্রতিবেশী ভুটান একসময় এই ব্যাপারে পিছিয়ে থাকলেও সাম্প্রতিককালে তারা পর্যটনের উন্নয়নে উঠেপড়ে লেগেছে এবং সাফল্যের মুখও দেখছে।
অন্যদিকে প্রায় সিকি শতাব্দী ধরে তামিল গেরিলাদের সাথে চলা গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর শ্রীলংকার পর্যটনে যেনো নতুন করে প্রাণসঞ্চার হয়েছে। তবে দক্ষিণ এশিয়ার যে দেশটি এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চমক দেখিয়েছে সেটি হলো মালদ্বীপ। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১.৫ মিটার উঁচু অতি ক্ষুদ্র (৩০০ বর্গকিলোমিটার) এই দ্বীপদেশটিকে নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত আমরা জানতাম একটি মৎস্যজীবী জাতি হিসেবে। কিন্তু গত দুই দশকে তারা পর্যটনে এতোটাই বিপ্লব ঘটিয়েছে যে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের মতোই হলিউড-বলিউড তারকাসহ বিশ্বের অনেক বড় বড় সেলিব্রিটি সেখানে অবকাশ যাপনে যান। এই পর্যটনই তাদের বার্ষিক মাথাপিছু আয়কে পৌঁছে দিয়েছে প্রায় ১৪,০৭৮ মার্কিন ডলারে (২০২২ সালের হিসাব) যা গোটা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ এবং রীতিমতো চোখ কপালে ওঠার মতো। আর দক্ষিণ এশিয়ার বাইরে মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ার পর্যটন শিল্পের পরিচিতি এতো বেশি যে তা নিয়ে খুব বেশি আলোচনার প্রয়োজন নেই।
বাংলাদেশের সড়ক ও রেল যোগাযোগ অবকাঠামো এখনো কাংখিত মানে পৌঁছতে পারেনি। বাসগুলো তাও মোটামুটি একটি সার্ভিস দিচ্ছে কিন্তু রেলওয়ের অবস্থা ভালো না হওয়ায় অতি সামান্য বিদেশি পর্যটককে ট্রেনে চড়তে দেখা যায়। আর আভ্যন্তরীণ বিমান যোগাযোগের ক্ষেত্রে এখন মূলত: বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোই ভরসা যেগুলোর ভাড়া একটু বেশি।
এবার দৃষ্টি ফেরানো যাক আমাদের জন্মভূমি বাংলাদেশের দিকে। আগের আলোচনায় যেসব দেশের নাম এসেছে তার মধ্যে শুধু ভারত, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়া পর্যটন সম্পদে আমাদের চেয়ে এগিয়ে। বাকি দেশগুলোর মধ্যে ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে সমুদ্র ও পাহাড় ছাড়া আর কী আছে ? মালদ্বীপে তো সমুদ্র ছাড়া আর কিছুই নেই। একইভাবে নেপাল ও ভুটানে পাহাড় আর কিছু লেক ছাড়া বাড়তি তেমন কোনো পর্যটক আকর্ষণ নেই। শ্রীলংকায় সমুদ্র, পাহাড় ও চা-বাগান থাকলেও সুন্দরবনের মতো একটি ম্যাংগ্রোভ ফরেস্ট নেই, নেই কোনো হাকালুকি, টাঙ্গুয়া কিংবা হাইল হাওর।
তাহলে অবধারিতভাবেই প্রশ্ন এসে যায় যে, একই সঙ্গে কক্সবাজার ও কুয়াকাটা সৈকত, প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ির নয়নাভিরাম পাহাড়, সুন্দরবন, সিলেটের দৃষ্টিনন্দন চা-বাগান ও রাতারগুল জলাবন, চট্টগ্রামের অপরূপ ফয়’স লেক ও বান্দরবানের নজরকাড়া বগা লেক, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগজুড়ে এতোগুলো জলপ্রপাত এবং আরও অনেক পর্যটন সম্পদ থাকার পরও আমরা কেনো পর্যটন শিল্পে নেপাল ও মালদ্বীপের মতো দেশের চেয়ে পিছিয়ে? কেনো স্বাধীনতার ৫১ বছর পেরিয়েও এদেশে পর্যটন শিল্প হতে পারলো না বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের অন্যতম প্রধান খাত হতে?
এসব প্রশ্নের জবাব পেতে হলে আমাদেরকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর প্রতি দৃষ্টিপা করতে হবে :
(১) সুষ্ঠু নীতিমালার অভাব : দেশ স্বাধীন হওয়ার পাঁচ দশকের বেশি পেরিয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত কোনো সরকারই জাতিকে উপহার দিতে পারেনি যথাযথ একটি পর্যটন নীতি। নেই দেশের বাইরে বাংলাদেশের আকর্ষণীয় স্থানগুলো নিয়ে চোখে পড়ার মতো কোনো প্রচার-প্রচারণা। যে জায়গাটাতে আমরা সবচেয়ে বেশি পিছিয়ে তা হলো ইন্টারনেট। তথ্যপ্রযুক্তির চরম উৎকর্ষের এই যুগে একজন বিদেশি পর্যটক বাংলাদেশে আসার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করার পরই যা করবে তা হলো গুগলে ‘ট্যুরিস্ট অ্যাট্রাকশনস ইন বাংলাদেশ’ লিখে সার্চ দেবে।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, ঐ একই সার্চ দিয়ে আমাকেও হতাশ হতে হয়েছে। তথ্য ও ছবিগুলো এখনো প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় যথেষ্ট অগোছালো যা অত্যন্ত পীড়াদায়ক। শুধু কী তাই, সেন্ট মার্টিন ও সুন্দরবনের মতো জায়গার খুব ভালো ছবি গুগলে সার্চ দিয়ে পাওয়া যায় না আর বাকিগুলো তো বলাই বাহুল্য।
এ তো গেলো ইন্টারনেটে পিছিয়ে থাকার প্রসঙ্গ। যেখানে পর্যটন শিল্পের সাথে ইংরেজি ভাষার সম্পর্ক ঠিক গাড়ির সাথে চাকার সম্পর্কের মতো সেখানে আমাদের পর্যটনের অভিভাবক প্রতিষ্ঠানের নামের মধ্যে একটি বাংলা শব্দ সগৌরবে অবস্থান করছে। ‘বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন’ না হয়ে ’বাংলাদেশ ট্যুরিজম করপোরেশন’ হলে সমস্যাটা কোথায় ? শুধু নামের ব্যাপারই নয়, পর্যটন করপোরেশনের নিজস্ব ওয়েবসাইটে ঢুকলে আপনি বাংলাদেশের আকর্ষণীয় স্থানগুলোর যে আংশিক বর্ণনা পাবেন তার পুরোটাই বাংলায় যা নিতান্তই হাস্যকর। এসব অসঙ্গতি খুব তাড়াতাড়ি দূর না করলে আমরা দিন দিন শুধু পিছিয়েই পড়ব, এক পা-ও সামনে এগোতে পারবো না।
(২) পর্যটনে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ঘাটতি : পর্যটন শিল্পে আরও বেশি পেশাদারিত্ব আনার জন্য যে জিনিসটি খুব বেশি প্রয়োজন ছিলো সেই পর্যটন শিক্ষার সুযোগ এখনো অপর্যাপ্ত। পর্যটন কর্পোরেশনের অধীনে ঢাকার মহাখালীতে যে ন্যাশনাল হোটেল এন্ড ট্যুরিজম ট্রেনিং ইন্সটিটিউটটি আছে তাতে বর্তমানে ছয়টি বিষয়ের ওপর ছয় মাস মেয়াদী ন্যাশনাল সার্টিফিকেট কোর্স, একটি বিষয়ের ওপর দুই বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা কোর্স এবং দুটি বিষয়ের ওপর এক বছর মেয়াদী কোর্স চালু রয়েছে।
তবে অত্যন্ত সীমিত আসনসংখ্যা এবং আবাসন সুবিধা না থাকায় ঢাকার বাইরের ছাত্রদের জন্য সেখানে পড়া মুশকিল। অথচ চট্টগ্রাম ও সিলেটের মতো পর্যটন নগরীতে এমন প্রতিষ্ঠান থাকলে এসব জায়গার হোটেল, রিসোর্ট, রেস্টুরেন্ট ও ট্যুর অপারেটররা আরও দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবল নিয়োগ দিতে পারতো।
অন্যদিকে এই সেক্টরে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ও গ্র্যাজুয়েট লেভেলে পড়াশোনার সুযোগ তো বলতে গেলে হাতেগোণা কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েই সীমাবদ্ধ। যদিও সম্প্রতি কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এ ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে তবে সবকিছুই হচ্ছে খুব ধীরগতিতে যা দুঃখজনক। সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েই পর্যটনে উচ্চ শিক্ষার ব্যবস্থা করা এখন সময়ের দাবি। এক্ষেত্রে সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের পার্শবর্তী ভারতের উত্তর- পূর্বাঞ্চলীয় ক্ষুদ্র রাজ্য এবং পর্যটনস্বর্গ মেঘালয়ের একমাত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ-ইস্টার্ন হিল ইউনিভার্সিটির উদাহরণ দেওয়া যায়। ছোটখাটো বিশ্ববিদ্যালয় হলেও সেখানে ‘ট্যুরিজম অ্যান্ড হোটেল ম্যানেজমেন্ট’ এবং ‘ট্যুরিজম অ্যান্ড ট্রাভেল ম্যানেজমেন্ট’ বিষয়ে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ রয়েছে।
(৩) অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং অবকাঠামোর সীমাবদ্ধতা : বাংলাদেশের সড়ক ও রেল যোগাযোগ অবকাঠামো এখনো কাংখিত মানে পৌঁছতে পারেনি। বাসগুলো তাও মোটামুটি একটি সার্ভিস দিচ্ছে কিন্তু রেলওয়ের অবস্থা ভালো না হওয়ায় অতি সামান্য বিদেশি পর্যটককে ট্রেনে চড়তে দেখা যায়। আর আভ্যন্তরীণ বিমান যোগাযোগের ক্ষেত্রে এখন মূলত: বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোই ভরসা যেগুলোর ভাড়া একটু বেশি।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ বিমান ৫১ বছর আগে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যেমন ছিল এখনো অনেকটা তেমনই আছে। পর্যটন এলাকায় যাতায়াতের ক্ষেত্রে দু’একটি উদাহরণ না দিয়ে পারছি না। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তবর্তী নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর উপজেলায় ভারত থেকে নেমে আসা সোমেশ্বরী নদীর তীরবর্তী বিরিশিরি একটি অপরূপ সুন্দর পর্যটন কেন্দ্র। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যেকোনো পর্যটককেই হাতছানি দিয়ে ডাকে।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং আবাসন ও খাওয়া-দাওয়ার সমস্যার কারণে বিরিশিরিতে কেউ একবার গেলে আরেকবার যেতে চান না। পর্যটনের ভালো অবকাঠামো এখনো নেই সেখানে। দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে বিরিশিরির অবস্থান একটু পরের দিকে।
পর্যটন একেবারে ওপরের দিকে থাকা সুন্দরবনের যোগাযোগ ব্যবস্থা, নিরাপত্তা এবং আনুষঙ্গিক অনেক বিষয় নিয়েও পর্যটকদের বিস্তর অভিযোগ আছে। যে বিষয়টি সবচেয়ে দুঃখজনক তা হলো দেশের প্রধান দুটি পর্যটন কেন্দ্র কক্সবাজার ও সেন্ট মার্টিন সমুদ্র সৈকতে ময়লা-আবর্জনা পড়ে থাকার অভিযোগ। এসব বিষয় সরকারকে গুরুত্বসহকারে ভাবতে হবে।
(৪) রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নিরাপত্তার ঘাটতি : খুবই স্পর্শকাতর বিষয় এটি। তারপরও দুঃখের সাথে বলতে হয় যে, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত কোনো সরকারি কিংবা বিরোধী দল কেউই কখনো এই উদারতা দেখায়নি যে, পর্যটন মৌসুমে আমরা এমন কিছু করবো না যাতে বিদেশি পর্যটকরা আমাদের দেশে না এসে প্রতিবেশী অন্য কোনো দেশে চলে যায়।
রাজনৈতিক অস্থিরতার পাশাপাশি নিরাপত্তার অভাবও পর্যটকদের জন্য একটি বড় সমস্যা। এক সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ব্যতীত দেশের আর কোনো পর্যটন কেন্দ্রই পর্যটকদের জন্য শতভাগ নিরাপদ নয়। অথচ প্রতিবেশী নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ ও শ্রীলংকায় পর্যটকরা রাতের বেলায়ও নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়ান। আমার প্রশ্ন হলো ঐ দেশগুলো পর্যটকদের পূর্ণ নিরাপত্তা দিতে পারলে আমরা পারবো না কেন?
নিকট অতীতে আমাদের সরকার ট্যুরিস্ট পুলিশ বাহিনী গঠন করে বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছে কিন্তু সেই বাহিনীর সদস্য সংখ্যা এখনো খুব অপর্যাপ্ত। এটি বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। শীর্ষস্থানীয় সব পর্যটন স্পটের কাছাকাছি থাকতে হবে ট্যুরিস্ট পুলিশের ফাঁড়ি। তাদেরকে শুধু দিনের বেলা নয় সন্ধ্যারাতেও টহলরত থাকতে হবে কারণ, কখনো কখনো পর্যটকরা কেনাকাটা ছাড়াও জোছনা রাতের সৌন্দর্য দেখতে হোটেলের বাইরে যান। বিদেশি পর্যটকরা যে রাষ্ট্রীয় অতিথি তা সাধারণ মানুষকে বুঝানোর জন্য সচেতনতামূলক প্রচারণাও চালাতে হবে সরকারকে।
পরিশেষে একটি কথাই বলবো যে, বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের রয়েছে অনেক সম্ভাবনা। যে সম্পদ সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে দু’হাত ভরে দিয়েছেন তা সঠিকভাবে কাজে লাগালে এবং সৌখিনতার গন্ডি থেকে বেরিয়ে শতভাগ পেশাদারী ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে পারলে আমরা অন্ততঃ প্রতিবেশী নেপাল, ভুটান, শ্রীলংকা ও মালদ্বীপের সমকক্ষ হতে পারবো। তবে এক্ষেত্রে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে অনেক বেশি উদার মনোভাবের পরিচয় দিতে হবে, দলের চেয়ে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে।
লেখক : সাইফুর রহমান তুহিন, সাংবাদিক ও ভ্রমণ লেখক
- খোলা জানালা বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। eyenews.news-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে eyenews.news আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।
- বাংলাদেশে শিশু শ্রম: কারণ ও করণীয়
- ২০২৩ সালে কী সত্যিই ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ আসছে?
- পনেরো আগস্ট পরবর্তী রাজনৈতিক দ্বন্ধ
মোশতাক বললেও মন্ত্রীদের কেউ সেদিন বঙ্গবন্ধুর লাশের সঙ্গে যায়নি! - করোনা যেভাবে চিকিৎসকদের শ্রেণীচ্যুত করলো
- চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সমস্যা এবং সম্ভাবনা
- ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কুকুর স্থানান্তরকরণ ও ভবিষ্যৎ
- শরীফার গল্প পড়তে আমাদের এতো কেন সমস্যা?
- ফিলিস্তিনে প্রাণ হারাচ্ছেন গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা
- মহান মুক্তিযুদ্ধে বিদেশী গণমাধ্যমের ভূমিকা
- রেমডেসিভির একটি অপ্রমাণিত ট্রায়াল ড্রাগ