সাইফুর রহমান তুহিন
ক্রিকেটে সাফল্যের জন্য চাই সঠিক রণকৌশল
ক্রিকেট খেলাটা ঘুরেফিরে দাবার মতোই শুনেছিলাম কলেজ জীবনের এক বড়ভাইয়ের কাছে। গভীরভাবে চিন্তা করলে কথাটা কিন্তু সত্যিই। আপনার দল খুবই শক্তিশালী, খেলোয়াড়রাও শারীরিকভাবে দারণ ফিট কিন্তু ম্যাচ নিয়ে করা পরিকল্পনায় গলদ থাকলে এবং ঠিক সময়ে ঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হলে বিশ্বসেরা দল নিয়েও আপনি সাফল্য পাবেন না।
১৯৯৬ বিশ্বকাপের দক্ষিণ আফ্রিকা দলের দিকে তাকান। শুরুতে প্রয়াত হানসি ক্রোনিয়ের দল ফেভারিট তালিকায় ছিলো না। তবে প্রথম চার ম্যাচে চোখজুড়ানো ক্রিকেট খেলে তারা হয়ে যায় স্বাগতিক পাকিস্তান ও ভারতের মতোই ফেভারিট। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালে আন্ডারডগ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মারাত্মক ভুল করে বসেন অধিনায়ক হানসি ক্রোনিয়ে ও কিংবদন্তি কোচ বব উলমার।
করাচীর ন্যাশনাল স্টেডিয়ামের পিচ ব্যাটিংস্বর্গ এই যুক্তি দেখিয়ে একাদশ থেকে বাদ দেওয়া হয় বিশ্বের অন্যতম সেরা ফাস্ট বোলার ও বাংলাদেশ দলের বর্তমান পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ডকে। তার পরিবর্তে মাঠে নামিয়ে দেওয়া হয় মাত্র ১৮ বছর বয়সী একেবারে অনভিজ্ঞ চায়নাম্যান বোলার পল অ্যাডামসকে। ব্রায়ান লারা, জিমি অ্যাডামদের হাতে বেদম মার খান পল অ্যাডামস, ১০ ওভারে দেন ৬০ রানের বেশি। ১৯ রানে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয় ক্রোনিয়ে ও উলমারের দলের।
টেস্টে সেই বোলারই নতুন বল হাতে নেবেন যার আছে গতি, আগ্রাসন ও নিয়ন্ত্রণ, এই তিনের সমন্বয়। তেমনি ওয়ানডেতে যে পেসার বোলিং ওপেন করবেন তাকে সবার আগে জানতে হবে কীভাবে একের পর এক ডট ডেলিভারি দিয়ে প্রতিপক্ষ ব্যাটারের নাভিশ্বাস তুলতে হয়। আর এর সাথে আচমকা স্লোয়ার ও ইয়র্কার যোগ হলে তো কথাই নেই। একসময় স্পিনাররা ইনিংসের মাঝামাঝি সময়ে বোলিং করলেও এখন তারা ডেথ ওভারের পাশাপাশি ওপেনিং বোলারের দায়িত্বও পালন করেন বিশেষ করে ৫০ ও ২০ ওভারের ম্যাচে।
এবার পুরোপুরি উল্টো উদাহরণ দেওয়া যাক। ১৯৯২ সালে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে আয়োজিত পঞ্চম বিশ্বকাপ ক্রিকেটে পাকিস্তান ছিলো নিতান্তই ভাঙাচোরা এক দল। তারকা ফাস্ট বোলার ওয়াকার ইউনুস ইনজুরিতে পড়ে বাদ পড়েন দল থেকে। টুর্নামেন্টে রওনা হওয়ার আগে দলীয় অধিনায়ক ইমরান খান এক প্রকার নিজের ইচ্ছায় দলে নেন তরুণ এবং অনভিজ্ঞ ব্যাটার ইনজামাম-উল-হককে। ব্যাটিংয়ে শুধু জাভেদ মিয়াঁদাদ ও সেলিম মালিকই ছিলেন অভিজ্ঞ ও পরীক্ষিত আর বোলিংয়ে ওয়াসিম আকরাম, আকিব জাভেদ ও মুশতাক আহমেদ। শুরু থেকেই একের পর এক ম্যাচ হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায়ের দ্বারপ্রান্তে চলে যায় ইমরান-মিয়াঁদাদের দল। এরপরই টানা তিনটি ম্যাচ জিতে এবং কিছুটা ভাগ্যের সহায়তায় সেমিতে নাম লেখায় পাকিস্তান।
সেমিফাইনালে খুবই শক্তিশালী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ইনজামামের ৩৭ বলে ৬০ রানের ঝড়ো ইনিংস ফাইনালে তুলে পাকিস্তানকে। ফাইনালেও ইংলিশদের বিপক্ষে ইনজামামের ৩৫ বলে ৪২ রানের ইনিংস শেষ ১৭ ওভারে ১৪৯ রান তুলতে সহায়তা করে দলকে। লিগ পর্বের শেষ ম্যাচ, সেমিফাইনাল ও ফাইনাল তিন ম্যাচেই নিজের চিরাচরিত পাঁচ নম্বর পজিশনের পরিবর্তে তিনে ব্যাট করেছিলেন ইমরান। বিশ্বকাপ জেতার পর এমন কৌশলের কারণ হিসেবে ইমরান বলেছিলেন যে, ইনজামাম এবং ওয়াসিম আকরামকে দিয়ে পুরনো বলে মারমুখী ব্যাটিং করানোর জন্যই তার এমন সিদ্ধান্ত বদল।
এবার আলোচনা করা যাক দল নির্বাচন ও গেমপ্ল্যানের বিষয় নিয়ে। প্রথমে উল্লখ করা ম্যাচটিতে পল অ্যাডামসের জায়গায় অভিজ্ঞ অ্যালান ডোনাল্ডকে খেলালেই হয়তো ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০ রান কম করতো এবং ম্যাচ জিতে সেমিতে
খেলতো দক্ষিণ আফ্রিকা। পেস বোলিং অলরাউন্ডার ব্রায়ান ম্যাকমিলান ১০ ওভারে মাত্র ৩৭ রান দেওয়ায় এবং দুই স্পিনার প্যাট সিমকক্স ও পর অ্যাডামস অনেক বেশি রান দেওয়ায় ধারণা করাই যায় যে, পরীক্ষিত যোদ্ধা ডোনাল্ডের অভিজ্ঞতা প্রোটিয়াদের কাজে লাগতে পারতো।
অন্যদিকে ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপজয়ী পাকিস্তানের কথা একবার ভাবুন। ইমরান জোর করে ইনজামামকে দলে না নিলে কি নিজেদের একমাত্র বিশ্বকাপটি জিততে পারতো পাকিস্তান ? বলা মুশকিল। আর শেষ তিন ম্যাচে ইমরান আগে ব্যাটিংয়ে নেমে বলকে পুরনো না করলে কি ব্যাট হাতে ঝড় তুলতে পারতেন ইনজামাম এবং ওয়াসিম আকরাম? সম্ভবতঃ না। এর মাধ্যমেই বুঝে নিন ক্রিকেট খেলায় ঠিক সময়ে ঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার গুরুত্ব কতোখানি।
এবার আসি বাংলাদেশের ক্রিকেটের বিষয়ে। ২০১১ বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশ ছিলো নিতান্তই সাদামাটা দল। হেড কোচের বাইরে বিভিন্ন বিভাগে আলাদা আলাদা বিশেষজ্ঞ কোচ পাওয়াটা ছিলো একপ্রকার বিলাসিতা। ২০১৫ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলাটা পরিবর্তন আনে শুধু ওয়ানডে নয়, টেস্ট ক্রিকেটেও। বোর্ডের কোষাগারে যথেষ্ট টাকাপয়সা আছে বলেই আমাদের ক্রিকেট দল এখন অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ভারত, নিউজিল্যান্ড কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকার সমমানের সাপোর্ট স্টাফ পাচ্ছে। এটির সুফলও আমরা পাচ্ছি কিন্তু টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে আরও উন্নতি করা প্রয়োজন। টেস্টের কথা যদি বলি তাহলে গত ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে স্বাগতিকদের হারানো ছিলো বলার মতো অর্জন।
নিউজিল্যান্ডের পেস সহায়ক কন্ডিশনে পেসারদের সঠিক জায়গায় বোলিং এবং ব্যাটারদের হিসেবী ব্যাটিংয়ের ফলেই এমন সাফল্য হাতে ধরা দিয়েছিলো। তবে টেস্ট মর্যাদা প্রাপ্তির ২৩ বছর পর সামগ্রিকভাবে যে জায়গায় থাকা উচিত ছিলো সেখানে কিন্তু আমরা নেই। এর পেছনে অন্যান্য কারণের পাশাপাশি আছে সঠিক গেমপ্ল্যান ও ট্যাকটিকসের বিষয়টিও।
অস্ট্রেলিয়া কেনো বিশ্বের সেরা ও সবচেয়ে সফল ক্রিকেট খেলুড়ে দেশ? এই প্রশ্নের জবাবে যেকোনো সচেতন ক্রিকেটপ্রেমীই বলবেন যে, তাদের ক্রিকেটীয় চিন্তাভাবনা অন্য দেশগুলোর চেয়ে অনেক বেশি স্মার্ট ও আধুনিক।
আশির দশকের যে সময়টিতে ক্রিকেট খেলায় কোচের ধারণা সেভাবে আসেইনি সেই সময়ই সাবেক তারকা ববি সিম্পসনকে কোচের আসনে বসিয়ে ১৯৮৭ সালে ভারত ও পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত চতুর্থ বিশ্বকাপ জিতে নিয়েছিলো অজিরা। বিশেষ করে, গোটা টুর্নামেন্টে অসিদের দম বন্ধ করা ফিল্ডিং ছিলো বাকিদের চেয়ে পরিস্কারভাবে এগিয়ে। খেলোয়াড়ী জীবনে তুখোড় ফিল্ডার হিসেবে পরিচিত ববি সিম্পসনের বড় একটা প্রভাব ছিলো সেখানে।
এর পাশাপাশি ডেথ ওভারে অলরাউন্ডার স্টিভ ওয়াহর বলগুলো ছিলো দারুণ কার্যকরী। দল সাজানোতেও অস্ট্রেলিয়ানদের স্বতন্ত্র দৃষ্টিভঙ্গি আছে। ঘরোয়া ক্রিকেটে রানের ফোয়ারা ছোটালেও সাধারণত একজন অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটারের টেস্ট অভিষেক হয় ছয় নম্বর পজিশনে এবং পরে পারফরম্যান্সের বিচারে তাকে প্রমোশন দেওয়া হয়। রিকি পন্টিং, ম্যাথু হেউডেন ও জাস্টিন ল্যাঙ্গারের মতো বড় মাপের ব্যাটারকেও ছয় নম্বর পজিশন দিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ার শুরু করতে হয়েছে। আর এখানেই অনেক অনেক পিছিয়ে আমরা। নবাগত একজন সাদমান ইসলাম কিংবা সাইফ হাসানকে আমরা অবলীলায় নতুন বলে প্রতিপক্ষের সেরা দুই বোলারের সামনে ফেলে দিই। আর এমনটি করে কতো তরুণ প্রতিভা যে অকালে ঝরে পড়েছে তা হিসেব করে বলা মুশকিল।
ওয়ানডেতেও কম যায় না টাইগার টিম ম্যানেজমেন্ট। সর্বশেষ এশিয়া কাপ এবং চলমান বিশ্বকাপ ক্রিকেটে দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল ইনজুরির কারণে স্কোয়াডেই অন্তর্ভুক্ত হননি। আরেক তারকা ওপেনার লিটন দাস এশিয়া কাপের ঠিক আগে জ্বরের কবলে পড়েন। নিরুপায় হয়ে প্রথম ম্যাচে শ্রীলংকার বিপক্ষে ওপেন করানো হয় দুই নবাগত তানজিদ হাসান তামিম ও মোহাম্মদ নাঈমকে দিয়ে। দুজনই ব্যর্থ হলেও পরের ম্যাচে নাঈমের ওপেনিং পার্টনার বানানো হয় স্পিনিং অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজকে। লাহোরের গাদ্দাফী স্টেডিয়ামের ব্যাটিং-স্বর্গে বিপজ্জনক দুই আফগান স্পিনার রশিদ ও মুজিব ব্যর্থ হলে শতক তুলে নেন মিরাজ এবং রানপাহাড়ে চড়ে সহজেই ম্যাচ জেতেন সাকিব, মুশফিকরা।
তবে, পরের ম্যাচে পাকিস্তানের সাথে শাহিন শাহ আফ্রিদি, নাসিম শাহ, হারিস রউফদের মতো গতিময় ও বিশ্বমানের পেসারদের বিপক্ষেও মিরাজকে দিয়ে ওপেন করানো ছিলো পুরোপুরি ভুল সিদ্ধান্ত এবং তিনি শিকার হন গোল্ডেন ডাকের। এখানে দরকার ছিলো জেনুইন ওপেনার লিটন দাসকে। ভারতে চলমান বিশ্বকাপ ক্রিকেটেও কয়েকটি ম্যাচে টপঅর্ডারে ব্যাট করেছেন মিরাজ। কিন্তু প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষেই যা একটু সফল তিনি। উঠতি প্রতিভা তাওহিদ হৃদয়ের ব্যাটিং অর্ডার বার বার বদলিয়ে তার আত্মবিশ্বাসই নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং অর্ডারে এতো ঘন ঘন রদবদল হয়েছে যে, এটি নিয়ে অন্য দেশের সাবেক ক্রিকেটাররা কৌতুক পর্যন্ত করেছেন। দলের ভরাডুবির একটি বড় কারণও এটিই।
আমাদের ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে নিরন্তর পরীক্ষা-নিরীক্ষার সবচেয়ে বড় বলি হলেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের জীবন্ত কিংবদন্তি মুশফিকুর রহিম। তার ব্যাটিং প্রতিভা বিবেচনায় অনেক আগেই তাকে উইকেটকিপিং থেকে অব্যহতি দেওয়া যেতো। এ তো গেলো কিপিংয়ের কথা, মুশফিকের কপিবুক ব্যাটিংয়ের কারণে টেস্ট এবং ওয়ানডে দুই ঘরানার ক্রিকেটেই তার স্থায়ী ব্যাটিং পজিশন হওয়া উচিত ছিলো তিন। আর এই পজিশনে তিনি খেললে যেমন আরও বেশি শতক হাঁকাতে পারতেন তেমনি তার মোট রান ও ব্যাটিং গড়ও হতে পারতো আরও বেশি। যেখানে আরেক কপিবুক ব্যাটার ও ভারতের কিংবদন্তি রাহুল দ্রাবিড় তার টেস্ট এবং ওয়ানডে দুই ক্যারিয়ারই শেষ করেছেন তিন নম্বর পজিশন দিয়ে সেখানে মুশফিককে আমরা দেখেছি একেক সময় একেক পজিশনে খেলতে যা অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড কিংবা ভারতের মতো দেশে প্রায় দেখাই যায় না।
এসব দেশ যেহেতু বিশ্বসেরাদের কাতারে আছে তাই তাদের ক্রিকেট সংস্কৃতিকে অনুকরণ করার মধ্যে নেতিবাচক কিছু আছে বলে মনে হয় না। আসলে একজন ব্যাটার যখন জানে যে, সে নিয়মিত একটি নির্দিষ্ট পজিশনে ব্যাট করবে তখন মাঠের খেলার জন্য আলাদাভাবে প্রস্তুতি নেওয়াও অনেকটা সহজ হয় তার জন্য। আর যে কথাটি বলা প্রয়োজন তা হলো স্পিন বোলিংকে খুব ভালোভাবে সামলাতে পারা ব্যাটারদের ব্যাটিং পজিশন তিনের পরেই হওয়া ভালো। শ্রীলংকার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গা স্পিন মোকাবেলায় ওস্তাদ ছিলেন বলেই তাকে আমরা অধিকাংশ সময় পাঁচ নম্বর পজিশনে খেলতে দেখেছি। নব্বইয়ের দশকের ইংলিশ ব্যাটার রবিন স্মিথ ফাস্ট বোলিংয়ের বিপক্ষে বিশ্বসেরাদের একজন ছিলেন। আর এজন্যই তিনি নিয়মিত খেলে গেছেন তিন নম্বর পজিশনে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ভীতিকর ম্যালকম মার্শাল, কোর্টনি ওয়ালশ, কার্টলি অ্যামব্রোস, ইয়ান বিশপের মতো বোলারদের বিপক্ষেও স্মিথ চমৎকার খেলতেন।
এবার বোলিং নিয়ে একটু আলোচনা করা যাক। টেস্টে সেই বোলারই নতুন বল হাতে নেবেন যার আছে গতি, আগ্রাসন ও নিয়ন্ত্রণ, এই তিনের সমন্বয়। তেমনি ওয়ানডেতে যে পেসার বোলিং ওপেন করবেন তাকে সবার আগে জানতে হবে কীভাবে একের পর এক ডট ডেলিভারি দিয়ে প্রতিপক্ষ ব্যাটারের নাভিশ্বাস তুলতে হয়। আর এর সাথে আচমকা স্লোয়ার ও ইয়র্কার যোগ হলে তো কথাই নেই। একসময় স্পিনাররা ইনিংসের মাঝামাঝি সময়ে বোলিং করলেও এখন তারা ডেথ ওভারের পাশাপাশি ওপেনিং বোলারের দায়িত্বও পালন করেন বিশেষ করে ৫০ ও ২০ ওভারের ম্যাচে। এক্ষেত্রে সেই স্পিনারই সফল হবেন যিনি একেকটি বল এককভাবে করে প্রতিপক্ষ ব্যাটারকে বিভ্রান্তিতে ফেলতে পারেন যেমন - ভারতের যুজবেন্দ্র চাহাল, কুলদীপ যাদব কিংবা আফগানিস্তানের রশিদ খান।
বাংলাদেশি স্পিনাররা এই জায়গায় পরিস্কার পিছিয়ে যদিও তারা স্পিন বোলিং কোচ হিসেবে অতীতে পেয়েছেন পাকিস্তানের সাকলাইন মুশতাক ও নিউজিল্যান্ডের ড্যানিয়েল ভেট্টোরিকে এবং এখন পাচ্ছেন শ্রীলংকার রঙ্গনা হেরাথকে। আর এ কারণেই জরুরি ব্রেক থ্রু পাবার জন্য টাইগার অধিনায়ক এখন বেশি ভরসা করেন পেসারদের ওপরই। বড় আসরে সাফল্যের মুখ দেখতে হলে পেস ও স্পিন দুই বিভাগেই একটা ভারসাম্য থাকতে হয়। সব কথার শেষ কথা হলো সবসময় মাথা খাটিয়ে ক্রিকেট খেলা এবং সঠিক পজিশনে সঠিক খেলোয়াড়টিকে খেলানো যা ভালো
দলের বিপক্ষে খেলার জন্য অত্যাবশ্যক। আর আমরা এখনো সেরকম বড় দল হয়ে উঠিনি বলে ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে ঘন ঘন পরীক্ষার বিলাসিতাও দেখানো উচিত নয়। অন্যদিকে ক্রিকেট সংস্কৃতিতে বিশ্বসেরা অস্ট্রেলিয়ানদেরকে অনুকরণ করলে অবশ্যই উপকৃত হবে দেশের ক্রিকেট।
লেখক: সাইফুর রহমান তুহিন, সাংবাদিক ও ক্রীড়া লেখক
- খোলা জানালা বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। eyenews.news-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে eyenews.news আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।
- বাংলাদেশে শিশু শ্রম: কারণ ও করণীয়
- ২০২৩ সালে কী সত্যিই ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ আসছে?
- পনেরো আগস্ট পরবর্তী রাজনৈতিক দ্বন্ধ
মোশতাক বললেও মন্ত্রীদের কেউ সেদিন বঙ্গবন্ধুর লাশের সঙ্গে যায়নি! - করোনা যেভাবে চিকিৎসকদের শ্রেণীচ্যুত করলো
- চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সমস্যা এবং সম্ভাবনা
- ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কুকুর স্থানান্তরকরণ ও ভবিষ্যৎ
- শরীফার গল্প পড়তে আমাদের এতো কেন সমস্যা?
- ফিলিস্তিনে প্রাণ হারাচ্ছেন গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা
- মহান মুক্তিযুদ্ধে বিদেশী গণমাধ্যমের ভূমিকা
- রেমডেসিভির একটি অপ্রমাণিত ট্রায়াল ড্রাগ