শ্যামলাল গোসাঁই
সুযোগ আছে ভালো কিছু করার
ছবি- সংগৃহীত
বরিশালে দুর্গাপূজা কমিটির লোকজন পূজার বাজেটের একটি অংশ বন্যার্তদের সহায়তার জন্য দিয়ে দিয়েছেন। আরও বিভিন্ন জায়গায় একইভাবে মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে ইসলামিক সংগঠনের হাতে কিংবা সরাসরি বন্যার্তদের সহায়তায় মোটা অংকের টাকা দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আফসোসের ব্যাপার হচ্ছে— সংখ্যাগরিষ্ট মুসলমানদের বাংলাদেশে এখনো শুনিনি কোনো ওয়াজ মাহফিল কমিটির ফান্ড থেকে বন্যার্তদের জন্য টাকা দেওয়া হয়েছে। অথচ, মুসলমানরা জানেন, এই ওয়াজ মাহফিল কমিটিগুলোর ফান্ডের আকার কতোখানি বড় হয়। দেশের সবগুলো ওয়াজ মাহফিল কমিটি যদি ঘোষণা দিয়ে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ায়, প্রশাসনিক সহায়তা তেমন একটা লাগবে বলেও মনে হয় না।
আমার মনে হয় আমাদের ওয়াজ মাহফিল কমিটির মানুষদের এই দুঃসময়ে কীভাবে মানুষের পাশে থাকা যায় এ নিয়ে পরিকল্পনা করা উচিত। কেননা, এবারের বন্যার আঘাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ব্যাপক। এমনসব জায়গা এবছর প্লাবিত হয়েছে যেসব জায়গার লোকজন এর আগে বন্যার মুখে পড়েননি। ফলে, বন্যা পরবর্তী ধাক্কা সামলে উঠতে এখন সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি মাধ্যম থেকেও বড় ধরনের সহায়তা দরকার। আর এতে সবচেয়ে কার্যকরীভাবে অংশ নিতে পারে দেশের ওয়াজ মাহফিল কমিটি, দুর্গাপূজা উদযাপন কমিটি, মন্দির-মসজিদ কমিটির মতো এলাকাভিত্তিক সংঘগুলো। দেশের প্রায় সব গ্রামে এলাকায় একটি ওয়াজ মাহফিল কমিটি নয়তো মন্দির কমিটি বা পূজা উদযাপন কমিটি রয়েছে। প্রত্যেকটা কমিটির বড় আকারের ফান্ড আছে। ওয়াজ মাহফিল কমিটির ফান্ডগুলো অনেক বড় হয়। ফলে, ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও হিন্দুরা যদি দেশের এই দুঃসময়ে ধর্মীয় এই সংঘগুলো নিয়ে মানুষের পাশে এসে দাঁড়ান বন্যা পরবর্তী দুরবস্থা অনেকটাই মোকাবিলা করা যাবে।
বন্যায় বড় ক্ষয়ক্ষতির দৃশ্যগুলো বেরিয়ে আসে বন্যার পানি যখন নেমে যায় তখন। যাদের বাড়িঘর ভেঙেচুরে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে এদের পাশে দাঁড়াতে পারে এই ওয়াজ মাহফিল কমিটি ও মন্দির কমিটিগুলো। দাঁড়াতে পারে ওইসব সাধারণ কৃষকদের পাশেও যাদের মাঠভরা ফসল ঢলের পানি নিয়ে গেছে। অনেক হতদরিদ্র পরিবারের ঘরবাড়ি মাটিতে মিশে গেছে। এদেরকে ঘরবাড়ি নির্মাণ করে দিতে পারে এই কমিটিগুলো।
সারা বছর এসব মসজিদ-মন্দির কমিটি নিয়ে নানা ঝগড়া, ফ্যাসাদ এমনকি মামলার খবরও দেখা যায়। এবার সুযোগ আছে— মসজিদ-মন্দির কমিটি এক হয়ে দুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়েছে এমন সুদৃশ্য তৈরি করবার। বাংলাদেশ এখন এক অস্থির সময়ের উপর দণ্ডায়মান। যেখানে, সুযোগ আছে ভালো কিছু করার। সুযোগ আছে দেশে যা আগে কখনো হয়নি, তা করে দেখানোর। এর জন্য প্রয়োজন অসাম্প্রদায়িক ঐক্য।
লেখক- শ্যামলাল গোসাঁই, কবি ও সংস্কৃতিকর্মী
- বাংলাদেশে শিশু শ্রম: কারণ ও করণীয়
- ২০২৩ সালে কী সত্যিই ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ আসছে?
- পনেরো আগস্ট পরবর্তী রাজনৈতিক দ্বন্ধ
মোশতাক বললেও মন্ত্রীদের কেউ সেদিন বঙ্গবন্ধুর লাশের সঙ্গে যায়নি! - করোনা যেভাবে চিকিৎসকদের শ্রেণীচ্যুত করলো
- চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সমস্যা এবং সম্ভাবনা
- ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কুকুর স্থানান্তরকরণ ও ভবিষ্যৎ
- শরীফার গল্প পড়তে আমাদের এতো কেন সমস্যা?
- ফিলিস্তিনে প্রাণ হারাচ্ছেন গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা
- মহান মুক্তিযুদ্ধে বিদেশী গণমাধ্যমের ভূমিকা
- রেমডেসিভির একটি অপ্রমাণিত ট্রায়াল ড্রাগ