দেবাশীষ চৌধুরী রাজা
আপডেট: ২৩:৫৬, ৩০ আগস্ট ২০২০
এই শহর এক সময় সামাজিক বেষ্টনীতে আবদ্ধ ছিল
আমরা স্বাধীনতা পূর্ব ও স্বাধীনতা-উত্তরকালে যে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে স্কুলকলেজ জীবন পার করে এসেছি এই বেষ্টনী ভেঙে গেছে।
স্কুলকলেজে কিছু গৎবাঁধা লোকদেখানো খেলাধুলা ছাড়া সারাবছর খেলাধুলার কোন বালাই নেই। নাটকের রিহার্সেল নেই। সাংস্কৃতিক মহড়া নেই। রবীন্দ্র-নজরুলতো কবেই নেই!
হেলমেটবিহীন মোটরসাইকেলে ৩/৪জন বসে উড়া, গাড়ি হাকিয়ে সো সো চলা। হর্ণ বাজিয়ে, সাইলেন্সার খুলে সশব্দে চিৎকার দিয়ে শহরবাসীকে জানান দেয়া। এসব এখন নিজেকে জাহির করার আইটেম!
দেখে মনে হয় পদপদবী আর টাকাপয়সা ছাড়া জীবনের আর অন্য কোন চাহিদা-ই নেই। যার যেটা করার যোগ্যতা নেই তাকে সেই কাজ করতে দিলে কোন ফল বয়ে আনে না। প্রশাসনের আশপাশে ঘোরঘোর করে বিভিন্নভাবে লাভবান হতে চান অনেকে। মুখচেনা কিছু লোক শহরে যা-ই হয় ঘুরেফিরে তারাই।
এই শহর আমাদেরও। আমরা এটা ভুলে যাই এই শহরে আমাদের বাপদাদা ছিলেন আমাদেরও সারাজীবন থাকতে হবে।
কোন অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়া, মুখ বুজে থাকা মানে নিজের পায়ে কুড়াল মারা। যদিও এটা মারার আর বাকী নেই! আমাদের শহরের সমস্যা আমাদেরকেই সমাধান করতে হবে।
ভুলে গেলে চলবেনা, এই শহরে সবকিছুই কোন এক সময় সামাজিক বেষ্টনীতে আবদ্ধ ছিল। আমরা যাঁদের ছায়াতলে বড় হয়েছি তাঁদের গ্রহণযোগ্যতা ছিল সর্বজনবিদিত। তাঁরা কোন ভাগাভাগির অংশীদার ছিলেননা বলে সবাই ছিলেন শ্রদ্ধার আসনে।
স্কুলকলেজে আমরা প্রতিবছর সাংস্কৃতিক সপ্তাহের জন্য অপেক্ষায় থাকতাম। অপেক্ষায় থাকতাম রবীন্দ্র-নজরুল-সুকান্ত জয়ন্তীর অনুষ্ঠানের জন্য। কে কতটা বিষয়ে নৈপুণ্য দেখিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করতে পারে চলতো তার সুস্থ্য প্রতিযোগিতা।
স্কুল থেকে ফেরার পর খেয়ে কতক্ষণে মাঠে যাবো সেই চিন্তায় বিভোর থাকতাম সকালে ঘুম ভাঙার পর থেকেই। কিন্তু অবশ্যই সন্ধ্যার আজানের (মাগরিব) সাথে সাথে বাসায় ফিরতে হতো।
সন্ধ্যার পর রাস্তায় শহরের কোন গুরুজনের সামনে পড়লেই প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হতো। ৯ম শ্রেণিতে পড়াকালে (১৯৭৩ সাল) একবার বিকেলে রাস্তায় বাইসাইকেলে আমিসহ তিনজন চড়া অবস্থায় পড়লাম স্কুলের প্রধান শিক্ষক (ভিক্টোরিয়া স্কুল) জনাব মোহররম আলীর চোখের সামনে। দোষ হলো সাইকেলে তিনজন নিয়ে চালানো।
যা হবার তাই হলো, এটা চলে এলো বাবার কানে। তারপরতো বুঝতেই পারছেন। উত্তমমধ্যম। অবশ্য এরপর থেকে তিনজন নিয়ে বাইসাইকেল চালানোর দুঃসাহস আর দেখাইনি।
ফুটবল, ক্রিকেট, ভলিবল, ব্যাডমিন্টন, টেবিলটেনিস, ক্যারম প্রতিটা খেলাতেই খেলোয়াড়ের অভাব হতোনা। বৈকালী, বনানী, গোল্ডেন এই ক্লাবগুলোতে সারাবছর খেলা লেগেই থাকতো। মাঠ থাকতো পরিপূর্ণ। এখন মানুষ আড়াইগুণ বাড়লেও রেলওয়ে মাঠটি খেলার আওতার বাইরে চলে গেছে। স্থানীয় লীগে ঢাকার আবাহনী এবং মোহামেডানের পুরো দল শ্রীমঙ্গলে এসে খেলেছে। ঢাকার ফুটবল লীগ নিয়ে সারাদেশ থাকতো উম্মাতাল। সাপোর্টাররা দলের খেলারদিন বাড়িতে ক্লাবের পতাকা উড়াতেন।
আমরা এইসব নিয়েই থাকতাম। খেলার সংগঠকগণ নিরলস ভাবে ক্লাবের জন্য শ্রম দিতেন। খেলার বাইরে আর কোন উদ্দ্যেশ্যই নিবেদিতপ্রাণ সংগঠকদের ছিলনা।
সন্ধ্যার পর রাস্তায় শহরের কোন গুরুজনের সামনে পড়লেই প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হতো। ৯ম শ্রেণিতে পড়াকালে (১৯৭৩ সাল) একবার বিকেলে রাস্তায় বাইসাইকেলে আমিসহ তিনজন চড়া অবস্থায় পড়লাম স্কুলের প্রধান শিক্ষক (ভিক্টোরিয়া স্কুল) জনাব মোহররম আলীর চোখের সামনে। দোষ হলো সাইকেলে তিনজন নিয়ে চালানো।
যা হবার তাই হলো, এটা চলে এলো বাবার কানে। তারপরতো বুঝতেই পারছেন। উত্তমমধ্যম। অবশ্য এরপর থেকে তিনজন নিয়ে বাইসাইকেল চালানোর দুঃসাহস আর দেখাইনি।
শহরের সকল মানুষের মধ্যে একটা সদ্ভাব বিরাজিত ছিল। বয়সভেদে সিনিয়র সমবয়সীগণ একসাথে চলাফেরা এবং বিভিন্ন জায়গায় মিলিত হতেন। সেখান থেকে শহরের বিভিন্নরকম উৎকর্ষতার বিষয়ে আলাপ আলোচনার সূত্রপাত হতো এবং সেই আলোচনা যথাস্থানে পৌঁছে কাজে গতি পেতো। মানুষ নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়াতেন।
এখন পুরো উল্টো। এখন বনের খেয়ে নিজের মোষ তাড়ানোদের জয়জয়কার...
স্বাক্ষর ছেলেটি আমার ছোট ছেলে ঋদ্ধ'র সহপাঠী। বাডস্ থেকে মাধ্যমিক পাশের পর স্বাক্ষর পড়ছিল শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজে। আর আমার ছেলে ঢাকায়।
আমার সহধর্মিণী শ্রীমঙ্গল বাডস্ রেসিডেনসিয়েল মডেল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক। তাই তাঁর কাছেও স্বাক্ষর অত্যন্ত পরিচিত। স্বাক্ষরের পিতা কল্যাণ আমার ছোটভাইয়ের মত।
গত ২৫ আগস্ট দুপুরে শ্রীমঙ্গল উপজেলাতে বঙ্গবন্ধুর শতবর্ষ পালনের অনলাইন আবৃত্তি প্রতিযোগিতার বিচারকের দায়িত্ব পালন শেষে ফেরার পথে কল্যাণের সাথে আমার দেখা ও কথা হয়েছে।
সে এবং তার স্বজনদের কাছে কী বলে আমি শান্তনার হাত প্রসারিত করবো...!
- ঢাকার হানিফ, চট্টগ্রামের মহিউদ্দিন, সিলেটের ছিলেন কামরান
- নৌযান দুর্ঘটনায় পরিবারকে হারানো সেই মিমের দায়িত্ব নিলেন ব্যারিস্টার আহসান হাবীব
- পুলিশের চোখের জলে উন্মোচন হল জোড়া খুনের রহস্য
- ছেলেকে উচ্চশিক্ষিত বানাতে চা শ্রমিক মায়ের অদম্য যুদ্ধের গল্প
- পুলিশ কর্মকর্তার ডায়েরি-২
জাদরেল বাবার দুই মেয়ে অপহরণের নাটকীয় কাহিনী - গ্রামের কবরে ঠাঁই দিতে এক করোনাযোদ্ধার আর্তি
- রোজাদার রিকশাওয়ালাকে মারতে মারতে অজ্ঞান করলেন প্রভাবশালী পথচারী
- হাসি ভরা মুখ নিয়ে ভাইরাল কানাডার যুবক
- কষ্ট লাঘবকারি চিকিৎসার আকুতি চিকিৎসকের
- সেই রিকশাচালকের চোখের পানি আনন্দাশ্রুতে পরিণত করলেন এক তরুণ ব্যারিস্টার