সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক
আপডেট: ২০:০৪, ২২ নভেম্বর ২০২০
সেই বর্ণনা আমি কাকে শোনাব?
বড় ভাই কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ'র মতো অকালেই প্রাণ হারালেন কবি হিমেল বরকত। হিমেল বরকত লেখালেখির পাশাপাশি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বাংলা বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। শনিবার সকাল ১১টার দিকে হিমেল বরকতের হার্ট অ্যাটাক হয়। গুরুতর অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে রোববার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে তার মৃত্যু হয়েছে।
কবি হিমেল বরকতের এমন অকাল মৃত্যুতে স্মৃতিচারণমূলক একটি লেখা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন ফ্রিল্যান্সার লেখক জান্নাতুন নাঈম প্রীতি। প্রীতির লেখাটি হুবুহু দেওয়া হল-
কবি হিমেল বরকত (Himel Barkat)- কে আমি শেষবার কথায় কথায় বলেছিলাম- ছেলেমেয়ে মানুষ করা একটা লস প্রজেক্ট! হিমেল বরকত আশ্চর্য হয়ে বলেছিলেন- আমি লস প্রজেক্টর বিষয়টা শুনতে চাই!
সেই বর্ণনা আমি কাকে শোনাব?
না, হিমেল বরকত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার শিক্ষক ছিলেন না, তিনি ছিলেন শিক্ষকেরও অধিক- খুব কম সময়ের জন্য পাওয়া বন্ধু। আজ সকালে জানলাম তিনি মারা গেছেন, চিরতরে আমাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে!
হিমেল বরকতের আরেকটা পরিচয় ছিলো, কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর ছোট ভাই। কোনো এক অজ্ঞাত কারণে আমি একবারও রুদ্রের কথা কিছুই জানতে চাইনি, কেবল আমার কবি বন্ধু হেলাল হাফিজ যা যা জানিয়েছেন সেসবই লিখতাম। তিনি পড়তেন, টুপ করে লাইক বাটনে ক্লিক করে সমর্থনও দিতেন।
কে জানে, হয়তো তিনি তার খামখেয়ালি বড় ভাইকে আকাশের ঠিকানায় চিঠিই লিখতেন ওভাবে!
একবার তিনি বলেছিলেন- প্রীতি, আপনি সময় করে একবার আমাদের ডিপার্টমেন্টে আসুন, অনেকেই আপনাকে চেনে।
আমি ঠাট্টা করে বলেছিলাম- বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের তিনটা বছর চলে গেলো, আপনার সাথে দেখা হলো না আমার! আমার মাঝেমাঝে মনে হয় পৃথিবী গোল না, চারকোণা!
তিনি আমার ঠাট্টার জবাব দিয়ে বললেন- না না, পৃথিবীটা গোলই, দেখবেন আমাদের দেখা হয়ে যাবে!
আমাদের দেখা হলো না। কেবল আজ সকালে জানলাম- আমাদের আর কখনোই দেখা হবে না! আমরা কেউ সময় মেলাতে পারলাম না, দূরত্বকে নিজেদের ইচ্ছার গুরুত্ব বোঝাতে পারলাম না!
যেমন এখন বোঝাতে পারছিনা- পৃথিবী কি আসলেই গোল? কেন একই ক্যাম্পাসে চক্কর দিয়েও আমাদের সেই আড্ডাটা হলো না। এ কেমন কথা?
প্রিয় হিমেল বরকত, আপনি বলেছিলেন আমি একদিন অনেক বড়ো শিল্পী হবো, আমার মায়ের প্রতি আপনার শ্রদ্ধার কথাও জানিয়েছিলেন। কি উৎসাহ দিয়েই না বলেছিলেন 'সুন্দরবনের শিশু বাঘ' নামের যে আর্টওয়ার্কটা করেছি সেটা দেখে আপনার বাংলাদেশের পতাকার কথা মনে পড়ে গেছে! এরকম আপন করে কথা বলার মানুষ আর কোথায় পাবো?
আপনাকে বলা হলো না- শুধু ছেলেমেয়ে মানুষ করাই না, সমগ্র মানবজীবনই একটা লস প্রোজেক্ট। হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তা নীতির মতো যে জীবনে কখন থাকবো আর কখন থাকব না সেই মালিকানাও আমার না, সেই তুচ্ছ ক্ষুদ্র জীবন নিয়ে আমরা কি করবো? সেই জীবনের আদৌ প্রয়োজন আছে?
ফ্রি-ল্যান্সার রাইটার
- ঢাকার হানিফ, চট্টগ্রামের মহিউদ্দিন, সিলেটের ছিলেন কামরান
- নৌযান দুর্ঘটনায় পরিবারকে হারানো সেই মিমের দায়িত্ব নিলেন ব্যারিস্টার আহসান হাবীব
- পুলিশের চোখের জলে উন্মোচন হল জোড়া খুনের রহস্য
- ছেলেকে উচ্চশিক্ষিত বানাতে চা শ্রমিক মায়ের অদম্য যুদ্ধের গল্প
- পুলিশ কর্মকর্তার ডায়েরি-২
জাদরেল বাবার দুই মেয়ে অপহরণের নাটকীয় কাহিনী - গ্রামের কবরে ঠাঁই দিতে এক করোনাযোদ্ধার আর্তি
- রোজাদার রিকশাওয়ালাকে মারতে মারতে অজ্ঞান করলেন প্রভাবশালী পথচারী
- হাসি ভরা মুখ নিয়ে ভাইরাল কানাডার যুবক
- কষ্ট লাঘবকারি চিকিৎসার আকুতি চিকিৎসকের
- সেই রিকশাচালকের চোখের পানি আনন্দাশ্রুতে পরিণত করলেন এক তরুণ ব্যারিস্টার