রোমানা আফরোজ ন্যান্সি
আপডেট: ২৩:১০, ১৫ আগস্ট ২০২১
‘সারাদেশ বিপক্ষে চলে গেলেও আমি এই মেয়েটার পক্ষে থাকলাম’
সারা দেশ এই মেয়ের বিপক্ষে চলে গেলেও, আমি এই মেয়েটার পক্ষে থাকলাম।
কেননা সে কোনো পুরুষের চরিত্রের ঠিকাদারি নিয়া রাখে নাই। কেননা সে কোনো পুরুষরে জোর কইরা রেইপও করে নাই, মদও খাওয়ায় নাই। কেননা তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলি এখনো অস্পষ্ট। কেননা মদের লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়া যাওয়া কোনো ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ না। কেননা আমার বেডরুমে আমি কি রাখবো সেইটা পুলিশ অথবা মোর্যাল পুলিশেরা ঠিক কইরা দিবে না। কেননা ওয়ারেন্ট ছাড়া কারুর বাসা সার্চ করার বিরুদ্ধে আমার অবস্থান। কেননা বাংলাদেশে প্রস্টিটিউশান অবৈধ না।
কেননা প্রেমের বিনিময়ে অথবা দেহের বিনিময়ে উপহার দেওয়া নেওয়া কোনো অপরাধ না। কেননা সে যেসব অপরাধ করছে বইলা আপনারা মনে করেন সেসবের জন্য সে অলরেডি গ্রেপ্তার হইছে এবং নন-প্রফেশনাল ভাবে গ্রেপ্তার হইছে এবং গ্রেপ্তারের পরে তার মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হইছে। কেননা তার সাথে কোনো ফেয়ার গেইম খেলা হয় নাই, ভীষণরকম নোংরা গেইম খেলা হইছে। কেননা বাংলাদেশের মোর্যাল পুলিশদের হাতে সে লক্ষ লক্ষ বার ধর্ষিত হচ্ছে প্রতিদিন। কেননা সে যা যা অন্যায় করছে বইলা আপনাদের মনে হয়, তার বিরুদ্ধে তার চাইতেও বেশী অন্যায় ও কুবিচার করা হইতেছে। কেননা তার বিরুদ্ধে নোংরা গেইম খেলার খেলোয়াররা কোনোদিন শাস্তি পাবেনা।
কেননা তাকে নিয়ে নোংরা কমেন্ট করা ব্যক্তিরা কোনোদিন আইসিটি আইনে গ্রেপ্তার হবেনা। কেননা বাংলাদেশে পরীমনি একাই না যে ব্যবসায়ীদের সাথে ট্যুরে যায়। ব্ল্যাকমেইল করার তথ্য এখনো অপ্রমানিত, ব্ল্যাকমেইল কইরা থাকলে সেইটার জন্য শাস্তি হোক কিন্তু এখন যেটা হচ্ছে তা হলো, "ধর্মান্ধ, পুরুষতান্ত্রিক সমাজের চোখে কোনো মেয়ে মদ খাওয়া, কিংবা বহুগামী হওয়া মানেই তাকে ফাসি দেওয়া জায়েজ" এই পুরুষতান্ত্রিক সেন্টিমেন্টের উপর ভর কইরা প্রশাসন যা খুশি করতেছে। এই জিনিস স্ট্যাবলিশড হওয়া খুবই বিপদের।
এভাবে চলতে থাকলে একদিন যে কারো ব্যক্তি স্বার্থে, ওয়ারেন্ট ছাড়া পুলিশ যে কারোর বাসায় হানা দিবে, মিডিয়ার প্রচার করবে এই মেয়ের চরিত্র খারাপ, মদ খায়.. আর কোনো অপরাধ না থাকলেও সেই মেয়ে অপরাধী হয়ে যাবে।
অনেকে বলছেন নাসির মাহমুদ ব্যক্তিস্বার্থে প্রশাসন কে দিয়ে এটা করাচ্ছে। যদি এটা হয় তাহলে ব্যাপারটা আরো ভয়ংকর। নাসির মাহমুদ রেপিস্ট কিনা এই মামলা চলমান, তিনি বেকসুর খালাস না বরং জামিনে বের হইছেন। তিনি রেপিস্ট না হয়ে থাকলে সবার প্রথমে তার উচিৎ ছিলো জামিন পাওয়ার পর পরিমনির নামে মানহানির মামলা করা এবং ব্র্যান্ড ভ্যালুর সমপরিমান ক্ষতিপূরণ দাবী করা অথবা ক্লাবে ভাঙচুর হয়ে থাকলে পরিমনির নামে সহিংসতার মামলাও করতে পারতেন। তা না করে, একেবারে নিশ্চুপ থাকলেন তিনি। এরপর র্যাব বিনা ওয়ারেন্টে পরিমনির বাসায় হামলা করলো, ঘোষণা দিলো মদ ও মাদকের। এর কিছুদিন পর ইনিয়ে বিনিয়ে ব্ল্যাকমেইলের প্রসঙ্গ আনলো অনেকটা ইন্ডিয়ার রাজ কুন্দ্রার ঘটনার কপি পেস্ট মনে হয় ঘটনাটা।
পরীমনি যদি অপরাধী প্রমানিত হয়, তার শাস্তি হোক কিন্তু সাত দিন যাবৎ তাকে এক কাপড়ে রাখা, তার আইনজীবীর সাথে কথা বলতে না দেওয়া, সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে না দেওয়া, এমনকি তার নানার সাথেও কথা বলতে দেওয়া হলো না, এটা তো কোনো রেপিস্টের সাথেও করা হয়না।
আর এই যে পুরুষেরা পরিমনির প্রতিটা নিউজে অর্গাজমের স্বাদ পায়, যে নারীরা হয়তো নিজ জীবনের ব্যক্তিগত কোনো অক্ষম আক্রোশের ঝাল মেটাচ্ছে পরিমনির ওপর তারাই আগামীর বিচারহীন প্রশাসন ও রাষ্ট্রব্যবস্থার জন্য দায়ী থাকবেন। আজকের পরিমনির এই কেইস যেকোনো সচেতন, সুবদ্ধিসম্পন্ন মানুষের মনে আগামীর বাংলাদেশ নিয়ে আশংকা তৈরি করবে যদি না আপনি জাজমেন্টাল হয়ে থাকেন।
আর হ্যাঁ, যারা পরিমনির এই ভিডিও, সেই ভিডিও শেয়ার কইরা প্রমাণ করার চেষ্টা করতেছেন, পরিমনি কতটা চরিত্রহীন তারা একবার মনে করেন তো চরিত্রহীন হওয়া বাংলাদেশের আইনে কোনো অপরাধ কিনা? এরপর চারপাশে তাকায়া দেখেন কয়জন মানুষ চরিত্রবান আছে চারপাশে.. এরপর একবার আয়নায়ও তাকায়েন।
রোমানা আফরোজ ন্যান্সি, সোস্যাল এক্টিভিস্ট
- ঢাকার হানিফ, চট্টগ্রামের মহিউদ্দিন, সিলেটের ছিলেন কামরান
- নৌযান দুর্ঘটনায় পরিবারকে হারানো সেই মিমের দায়িত্ব নিলেন ব্যারিস্টার আহসান হাবীব
- পুলিশের চোখের জলে উন্মোচন হল জোড়া খুনের রহস্য
- ছেলেকে উচ্চশিক্ষিত বানাতে চা শ্রমিক মায়ের অদম্য যুদ্ধের গল্প
- পুলিশ কর্মকর্তার ডায়েরি-২
জাদরেল বাবার দুই মেয়ে অপহরণের নাটকীয় কাহিনী - গ্রামের কবরে ঠাঁই দিতে এক করোনাযোদ্ধার আর্তি
- রোজাদার রিকশাওয়ালাকে মারতে মারতে অজ্ঞান করলেন প্রভাবশালী পথচারী
- হাসি ভরা মুখ নিয়ে ভাইরাল কানাডার যুবক
- কষ্ট লাঘবকারি চিকিৎসার আকুতি চিকিৎসকের
- সেই রিকশাচালকের চোখের পানি আনন্দাশ্রুতে পরিণত করলেন এক তরুণ ব্যারিস্টার