প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন আজ। গোপালগঞ্জের মধুমতী নদী পাড় ঘেঁষা জনপদ টুঙ্গিপাড়ায় আজকের এই দিনে জন্ম নিয়েছিলেন এশিয়ার লৌহ মানবী আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বাধীন বাংলাদেশের জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান ও বেগম ফজিলাতুন্নেছার বড় সন্তান শেখ হাসিনা। 

দিনটি উপলক্ষ্যে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। বাণীতে তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পথ ধরেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গড়ে উঠবে উন্নত-সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। সেখান থেকে কাল তার যুক্তরাজ্য যাওয়ার কথা রয়েছে। শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতেই তার জন্মদিন উৎসবমুখর পরিবেশে নানা কর্মসূচিতে উদযাপন করবে আওয়ামী লীগসহ সহযোগী এবং বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। 

চলতি বছরের মে মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এশিয়ার লৌহমানবী হিসেবে উল্লেখ করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট। শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকারের ওপর ভিত্তি করে ওই প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে ইকোনমিস্ট। এতে মার্গারেট থ্যাচার ও ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে তাকে তুলনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, তিনিই বিশ্বের একমাত্র নারী সরকার প্রধান যিনি এই সময়ে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। অবশ্য, দ্য ইকোনোমিস্ট শুধুমাত্র সময়ের এই দীর্ঘ কাল গণনা করে তাঁকে আয়রনম্যান উপাধিটি দেয় নি। তাঁরা বিবেচনায় রেখেছে, এ দেশের ১৭ কোটি মানুষকে ক্ষুধামুক্ত করার প্রয়াসে নেতৃত্ব দেয়া বিষয়টি। তাঁরা আমলে নিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং এই প্রকল্পের আওতায় আসা কয়েক লাখ ভূমি ও গৃহহীন মানুষের ভূমির মালিক হাবার বিষয়টিও।  

দ্য ইকোনোমিস্টকে সাক্ষাতকারে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি এ দেশটিকে একটি ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত দেশ হিসেবে গড়তে চাই’। 

৭৭ বছর বয়সী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ পরপর তিনটি নির্বাচনে জয়লাভ করেছে। সব মিলিয়ে চারটি, যা ইন্দিরা গান্ধী বা মার্গারেট থ্যাচারের চেয়েও বেশি। দীর্ঘ এই সময় দলকে সুদক্ষ হাতে পরিচালনা করছেন প্রধানমন্ত্রী। সমানতালে সামাল দিচ্ছেন বৈশ্বিক চাপসমূহ। ফলে ইকোনোমিস্টের অনুমান, আগামী বছরের শুরুর দিকে নির্বাচনেও জয়ী হবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

বর্তমান সময়ে বৈশ্বিক রাজনীতিতে একটি টালমাটাল অবস্থা বিরাজমান। বাংলাদেশ এখানে প্রত্যক্ষভাবে অংশ না নিলেও বৈশ্বিক রাজনীতির বিরূপ প্রভাব আমাদের দেশেও বিদ্যমান। তাছাড়া, পার্শ্ববর্তী বন্ধুদেশ ভারতকে এই সময়ের বিশ্বের তৃতীয় অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে পশ্চিম বিশ্বে। এর প্রভাবেও প্রভাবিত হচ্ছে বাংলাদেশ। একদিকে রাশিয়া-চীন জোট আরেকদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ। এইসব দেশের সাথেই বাংলাদেশের স্বার্থ আছে। তাই এই অস্থির সময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রতিটি পদক্ষেপ আর সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে সুচারুভাবে। এবং সেটিই দক্ষ রাজনীতিবিদের মতো করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। কারো সাথে শত্রুতা নয়, সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার এই নীতিতে এগিয়ে নিচ্ছেন দেশের পররাষ্ট্রনীতি এবং বৈশ্বিক সম্পর্ক। যা তাঁর বিচক্ষণতারই প্রকাশ বলে মনে করি। 

চলতি মেয়াদ মিলিয়ে বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৯৬ সালে প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবার পর  ২০০৮ সালে দ্বিতীয়বার, ২০১৪ সালে তৃতীয়বার এবং ২০১৮ সালে চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন তিনি। 

• আমেরিকা কাকে ভিসা দেবে এটা তাদের নিজস্ব বিষয়: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন বর্তমানের আলোচনার তুঙ্গে। এখানেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকা কী তা নিয়ে আগ্রহ আছে জনমনে। যদিও বিরোধী দল বিএনপি চাইছে তিনি পদত্যাগ করবেন। কেননা, তাঁদের দাবি শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশের সব খাত ধ্বংস হয়ে গেছে। কোনো উন্নয়ন হয়নি। বিপরীতে দ্য ইকোনোমিস্টের প্রতিবেদন বলছে ভিন্ন কথা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শক্তহাতে শেখ হাসিনার ক্ষমতা ধরে রাখায় লাভবান হয়েছে বাংলাদেশ। অবকাঠামোগত বিনিয়োগসহ এমন কিছু নীতি তিনি প্রণয়ন করেছেন, যার মাধ্যমে প্রবৃদ্ধির গতি বজায় ছিল। 

আই নিউজ/এইচএ